একদিন হয়তো মাটির নিচের মজুদ তেল, গ্যাস, কয়লা, পেট্রলসহ সব জ্বালানি শেষ হয়ে যাবে। তখন পৃথিবীর জ্বালানি চাহিদা মেটানোর জন্য থাকবে শুধু সৌরশক্তি। পারমাণবিক শক্তি অবশ্য আছে। তবে জাপানে ভূমিকম্প ও সুনামিতে (১১ মার্চ, ২০১১) পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিপর্যয়ের পর এ শক্তির বিপদ সম্পর্কে এখন সবাই সাবধান। তাই সৌরশক্তিই অন্যতম ভরসা। কিন্তু এ শক্তি কি অফুরন্ত? হ্যাঁ, অফুরন্ত; কিন্তু আমাদের চাহিদা মেটানোর জন্য এটা যথেষ্ট কি না, তা ভেবে দেখতে হবে।
প্রতিদিন সূর্য পৃথিবীর ওপর যে আলো ফেলছে, তার শক্তি পৃথিবীর সারা বছরে ব্যবহৃত মোট জ্বালানি শক্তির তিন গুণের সমান। তার মানে, আমাদের চাহিদা মেটাতে পৃথিবীর ১ শতাংশ স্থানে যতটা সৌরশক্তি পড়ে, তার এক-দশমাংশ সৌরশক্তিই যথেষ্ট।
মনে হয়, এ তো খুব কম। কিন্তু এটুকুর জন্য এক লাখ ৮০ হাজার বর্গমাইল (চার লাখ ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার) সৌর প্যানেল লাগবে। একটু হিসাব করলে দেখা যাবে, এর জন্য প্রায় চারটা বাংলাদেশের সমান জায়গা দরকার।
যেহেতু পৃথিবীর এক পিঠ সব সময় সূর্যের আলো থেকে বঞ্চিত থাকে, তাই সৌর প্যানেল লাগবে এর দ্বিগুণ। তার ওপর আছে মেঘলা দিনের সমস্যা, যখন সূর্যের আলো প্রায় পাওয়াই যায় না।
অর্থাৎ শুধু সৌরশক্তির ওপর নির্ভর করতে হলে সাত-আটটা বাংলাদেশের সমান জায়গা ছেড়ে দিতে হবে এবং সেটা আবার প্রতিটি দেশে চাহিদা অনুযায়ী জায়গা নিয়ে নেবে। বাংলাদেশে এখন মানুষেরই স্থান হয় না, সৌর প্যানেলের জন্য এত জায়গা কোথায়? সুতরাং সৌরশক্তি অফুরন্ত হলেও সব দেশে সবটা কাজে লাগানো কঠিন।