কাকে বলে বুজরুকি কাণ্ড

বাংলা ভাষায় যে বাগ্‌ধারাগুলো আছে, সেগুলো এল কোথা থেকে?

শশব্যস্ত

অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান

‘শশ’ শব্দের অর্থ শশক বা খরগোশ। এদের চলাফেরা দেখে মনে হয়, এরা বুঝি খুব ব্যস্ত। অত্যন্ত সতর্ক ও চঞ্চল প্রাণী হিসেবেই খরগোশ পরিচিত। এই সতর্কতার কারণ এদের কান। খরগোশের কান অনেক লম্বা ও বাঁকানো হয়। ফলে সামান্য শব্দও এরা ভালো শুনতে পায়। আর এদের চঞ্চল মনে হয় এদের চলা ও লাফানোর ভঙ্গি দেখে। শিকারির হাত থেকে বাঁচার জন্য এরা এঁকেবেঁকে দৌড়াতে থাকে। মানুষের মধ্যে খরগোশের মতো ব্যস্ততা দেখা গেলে তাকে বলা হয় শশব্যস্ত।

কূপমণ্ডূক

অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান

‘কূপ’ মানে কুয়া, আর ‘মণ্ডূক’ মানে ব্যাঙ। ‘কূপমণ্ডূক’ শব্দের সাধারণ অর্থ কুয়ার ব্যাঙ। কুয়ার ব্যাঙ কুয়ার ভেতরে থাকে; সেখান থেকে সে বাইরে আসতে পারে না। ফলে তার কাছে মনে হয়, ওইটুকুই বুঝি জগৎ। ওইটুকু জগতের খবরই সে জানে, কুয়ার বাইরের দুনিয়ার কোনো খবর সে জানে না। একইভাবে কোনো মানুষ যদি কুয়ার ব্যাঙের মতো সীমাবদ্ধ জ্ঞানবিশিষ্ট হয়, সে যদি জ্ঞানবিজ্ঞানের বিশাল দুনিয়ার খবর না রাখে, তখন তাকে কূপমণ্ডূক বলা হয়।

বুজরুকি কাণ্ড

অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান

‘বুজুর্গ’ ফারসি শব্দ। এর অর্থ দরবেশ বা সাধু। বুজুর্গ শব্দ থেকে ‘বুজরুকি’ শব্দটি এসেছে। দরবেশ বা সাধুদের অলৌকিক ক্ষমতা ছিল। এসব ক্ষমতা দেখে মানুষ অবাক হয়ে যেত। সাধারণভাবে বুজরুকি কাণ্ড বলতে বোঝানো হয় অলৌকিক কাজ বা অবিশ্বাস্য ঘটনা। কিন্তু বাগ্‌ধারায় এর অর্থ প্রতারণা বা চাতুরী। সাধারণ মানুষের পক্ষে অলৌকিক কাণ্ড দেখানো সম্ভব নয়। তাই কোনো লোক যদি অবিশ্বাস্য কাজ করে ফেলেছে বলে দাবি করে, তখন তাকে বলা হয় প্রতারণা বা বুজরুকি কাণ্ড।

তারিক মনজুর: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন