অনুরোধ করলেই রাখা যাবে না
একসময় আমাদের গ্রামের ঘরে ঘরে ঢেঁকি ছিল। এখন আর সেই দিন নেই। ঢেঁকির জায়গা দখল করে নিয়েছে লোহা-লক্করের রাইস মিল। কিন্তু ঢেঁকির মতো এমন একটা ঐতিহ্য তো এভাবে হারিয়ে যেতে দেওয়া যায় না। ঢেঁকি টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন নিজেদের দৃঢ় চরিত্র। কেউ কোনো অনুরোধ করলেই সেটা রাখা যাবে না। কারণ ‘অনুরোধে ঢেঁকি গেলা’র রেওয়াজ চালু থাকলে অনেক খুঁজেও আর কোনো ঢেঁকির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। সব ঢেঁকি থাকবে আমাদের পেটে।
সামান্য বিষয় নিয়ে হইচই বন্ধ
আহা, তিল দিয়ে কত মজার মজার খাবারই না বানাতেন দাদি–নানি আর মায়েরা। সেসব মজাদার খাবারের মধ্যে অন্যতম একটি তিলের মোয়া ও তিলের খাজা। তাই ঐতিহ্যবাহী এই তিল রক্ষা করতে হলে আমাদের অনেক বেশি সৎ হতে হবে। কোনোভাবেই ‘তিলকে তাল বানানো’ যাবে না। সব তিল তাল বানিয়ে ফেললে তিলের বংশ নির্বংশ হয়ে যাবে নিশ্চিত।
ঘাস না কেটে শিশির দেখি
আমরা এখন কেবল সাকিব আল হাসানের স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরকেই দেখি। ঘাসের ডগায় বসে থাকা শিশিরের ঝিলিক চোখে পড়ে না। গ্রামে গেলে অবশ্য দেখা যায়, সেটাও হয়তো কদিন পর আর থাকবে না। তাই আমাদের উচিৎ ঐতিহ্যবাহী এই শিশির রক্ষা করা। এর জন্য আমাদের একটু কর্মঠ হতে হবে। অর্থাৎ সারাদিন ‘ঘোড়ার ঘাস কাটা’ চলবে না। সব ঘাস কেটে ফেললে ঘাসের আগা থাকবে না। আর আগা না থাকলে শিশির জমবে কোথায়?
সময় নষ্ট করা বারণ
খই আমাদের ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার। অথচ এখন আর আগের মতো খইয়ের দেখা মেলে না। তাই এই খই টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের বিশ্রাম নেওয়া বারণ। কারণ, আমরা জানি ‘নেই কাজ তো খই ভাজ’। অর্থাৎ কাজ না থাকলে খই ভাজতে হবে। ঘুমিয়ে বা আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করা যাবে না।
পিঁপড়াদের ঠেকাতে হবে
গুড় ছাড়া পিঠা-পায়েস কল্পনা করা যায়? যায় না। গুড়ের মতো ঐতিহ্যবাহী খাবার টিকিয়ে রাখতে আমাদের উচিত ঘরবাড়ির নির্দিষ্ট কিছু স্থানে চিনি ছিটিয়ে রাখা। প্রয়োজনে চিনির পাশাপাশি মিষ্টিমন্ডাও রাখতে পারেন। এর ফলে বাসার সব পিঁপড়া চিনি আর মিষ্টি খেতেই ব্যস্ত থাকবে। আর চিনি খাওয়ায় ব্যস্ত থাকলে পিঁপড়ার দল গুড়ের দিকে মনোযোগ দেবে না। কে না জানে ‘লাভের গুড় পিঁপড়ায় খায়’। মনে রাখবেন, লাভের গুড় যদি পিঁপড়াকে খাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে একদিন মূলধনের গুড়ও খাবে! তারপর গুড় চলে যাবে জাদুঘরে! (সেখানেও যে পিঁপড়া যাবে না, কে জানে!)