অনেকে বলেন ১৩ সংখ্যাটি অশুভ কিছুর প্রতীক। এ রকম একটা কথা চালু আছে। ধারণা করা হয়, এটা এসেছে পবিত্র বাইবেলে বর্ণিত ‘লাস্ট সাপার’ বা শেষ নৈশভোজের পরিপ্রেক্ষিত থেকে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন যিশুখ্রিষ্ট।
উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে একজন বিশ্বাসঘাতকতা করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন। পরে দেখা গেল তাঁদেরই একজন, জুডাস, রোমানদের হাতে যিশুখ্রিষ্টকে ধরিয়ে দেন। এরই পরিণামে যিশুখ্রিষ্টকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়। কথিত আছে যে সেই খাবার টেবিলের ১৩তম চেয়ারে জুডাস বসেছিলেন। এখান থেকেই ১৩ সংখ্যাটিকে অশুভ বলে ধরে নেওয়া হয়।
আবার অধিকাংশ ফাঁসিকাষ্ঠে ঐতিহ্যগতভাবে ১৩টি সিঁড়ি থাকে। এ সংখ্যাটি কাকতালীয়ভাবে মিলে গেছে কিনা তা বলা মুশকিল। নিউমারোলজি বা সংখ্যাতত্ত্বে ১২ সংখ্যাটিকে একটি সম্পূর্ণ সংখ্যা হিসেবে দেখা হয়, এর পরের সংখ্যাটি, অর্থাৎ ১৩-তে এসে ওই ভারসাম্য নষ্ট হয়।
সেদিক থেকে ১৩ সংখ্যাটি একটু আলাদা। অবশ্য অন্যদিক থেকে দেখলে এর আলাদা বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যেমন ১৩ সংখ্যাটি একটি প্রাইম নম্বর। এটি শুধু ১ ও নিজের দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য।
তা ছাড়া ১৩ একটি ফিবোনাচ্চি সংখ্যা। সংজ্ঞা অনুযায়ী ফিবোনাচ্চি সংখ্যা হলো পূর্ববর্তী দুটি অঙ্কের যোগফল। যদি ০ ও ১ দিয়ে শুরু করি, তাহলে ফিবোনাচ্চি সংখ্যাগুলো হবে ০, ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১...ইত্যাদি। এ দুটি ক্ষেত্রে ১৩ সংখ্যাটিকে অশুভ হিসেবে দেখার সুযোগ নেই বরং বলা চলে বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
এখানে বলা দরকার যেকোনো সংখ্যাকে সৌভাগ্য বা অমঙ্গলের প্রতীক হিসেবে বিবেচনার পেছনে বিজ্ঞানসম্মত কোনো ব্যাখ্যা নেই। ঐতিহাসিকভাবে হয়তো এ রকম ধারণা সমাজে চালু হয়ে যায়। অনেক সময় এসবের পেছনে কুসংস্কার কাজ করে।