বিচিত্র
বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ ধনীর কার কটা বাড়ি, দাম কত সেগুলোর?
‘ওয়াসার তাকসিমের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি!’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে ৯ জানুয়ারি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা পড়া অভিযোগের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তবে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর পরিবারের মাত্র একটি বাড়ি আছে। সেখানে ১৪টি বাড়ি থাকার যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। সত্য–মিথ্যা নিয়ে তদন্ত চলতে থাকুক, আসুন, আমরা দেখে নিই বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ ধনীর বাড়ির হিসাব।
১. বার্নার্ড আর্নল্ট
ফোর্বস–এর হিসাব অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ ধনী বার্নার্ড আর্নল্ট। আর্নল্টের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২০৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। ফ্রান্সের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী বার্নার্ড আর্নল্টের প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচ বিলাসবহুল শৌখিন পণ্য বিক্রির জন্য শুধু ফ্রান্স নয়, সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত। ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বার্নার্ড আর্নল্টের বাড়ি আছে। তার মধ্যে অন্যতম ব্রোডেক্স ফ্রান্স, প্যারিসের একটি ঐতিহাসিক প্রাসাদ, ১৮ শতকের গোড়ার দিকে নির্মিত হয়েছিল। বাড়িটি সিন নদীর বাঁ তীরে প্যারিসের অষ্টম অ্যারোন্ডিসমেন্টে অবস্থিত। এই বাড়ির মূল্য ২০০ মিলিয়ন ডলার। এটি ৭ হাজার বর্গফুটের বেশি বিস্তৃত এবং এতে আছে ১২টি শোবার ঘর, ১২টি বাথরুম, একটি লাইব্রেরি, একটি ডাইনিং রুম এবং একটি বলরুম। এ ছাড়া ফ্রান্সের আল্পসে ৩৪ শয্যার চেভাল ব্ল্যাঙ্ক হোটেল, যা আর্নল্টের বাড়ি হিসেবেও ব্যবহৃত হয় এবং সেন্ট–ট্রোপেজ দ্বীপে আছে আরেকটি বাড়ি। যদিও আর্নল্টের বেশির ভাগ বাড়ি ফ্রান্সে, যুক্তরাষ্ট্রের বেভারলি হিলস প্রায় ১২৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পাঁচটি আলাদা বাড়িও আছে তাঁর।
২. ইলন মাস্ক
ফোর্বস ম্যাগাজিনে ধনীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা ও মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্ক। তাঁর বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ১৪৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালে ইলন মাস্ক ঘোষণা করেছিলেন, তিনি তাঁর সব দৃশ্যমান সম্পদ বিক্রি করবেন। সে সময় জনসমক্ষে আসে তাঁর প্রায় সাতটি বাড়ির ঠিকানা।
এর মধ্যে ২৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলারের ১০০ বছরের পুরোনো হিলসবরো ম্যানশন, ৬১ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলারের লস অ্যাঞ্জেলেসের দ্য ফোর বেল-এয়ার ম্যানশন, ৭ মিলিয়ন ডলারের মার্কিন অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের বেচে দেওয়া বাড়ি, ১৭ মিলিয়ন ডলারের বেল-এয়ারের ঔপনিবেশিক সাদা স্টুকো বাড়ি, ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারের মডার্ন ব্রেন্টউড এস্টেট, টেক্সাসের বাড়ি বোকা চিকা এবং টেক্সাসের বক্সাবল।
৩. গৌতম আদানি
ফোর্বস ম্যাগাজিনে ধনীদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন আদানি গোষ্ঠীর মালিক ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি। তিনি এখন কেবল ভারতই নয়, গোটা এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। ভারতজুড়ে তো বটেই, বিশ্বের নানা দেশে আদানি গোষ্ঠীর ব্যবসা ছড়িয়ে আছে। তাঁর বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ১২৫ বিলিয়ন ডলার।
মুম্বাই, গুজরাট, দিল্লিসহ বিশ্বের একাধিক জায়গায় বাড়ি আছে গৌতম আদানির। দিল্লিতে শান্তিবন নামে ৩ দশমিক ৪ একরের একটি বাড়ি আছে গৌতম আদানির। ভারতীয় রুপিতে বাড়িটির মূল্য প্রায় ৪০০ কোটি। গৌতমের আরেকটি বাড়ির নাম পাতিয়াল হাউস, যা আদানি হাউসও নামে পরিচিত। বাড়িটির ঠিকানা গুজরাটের আহমেদাবাদ।
৪. জেফ বেজোস
ফোর্বস ম্যাগাজিনে ধনীদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছেন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় খুচরা পণ্য বিক্রেতা অ্যামাজন ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। তাঁর বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ১১৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। জেফ বেজোসের বাড়িগুলো বিশ্বের বেশ কটি দেশে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে। তাঁর বাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম ১০ একরের বাড়ি জেফ বেজোস হাউস–বেভারলি হিলস মেগা ম্যানশন, প্রায় ৭৮ মিলিয়ন ডলারের হাওয়াইয়ান বিচ হাউস, প্রায় ১৬ মিলিয়ন ডলারের নিউইয়র্কের ম্যানহাটন অ্যাপার্টমেন্ট এবং প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলারের ওয়াশিংটনের একটি উপদ্বীপের মদিনা লেক হাউস।
৫. ওয়ারেন বাফেট
ফোর্বস ম্যাগাজিনে ধনীদের তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছেন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের প্রধান নির্বাহী ওয়ারেন বাফেট। বিংশ শতকের সবচেয়ে সফল বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাঁকে। তাঁর বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ১১১ বিলিয়ন ডলার। ওয়ারেন বাফেট ১৯৫৮ সালে ৩১ হাজার ৫০০ ডলারে কেনা বাড়িতেই থাকেন। এখনো এই বাড়ির মূল্য ১ মিলিয়ন ডলারের কম। নেব্রাসকার ওমাহায় শান্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে দাঁড়িয়ে থাকা ৬ হাজার ৫৭০ বর্গফুটের বাড়িটিতে আছে ৫টি শোবার ঘর।