অ্যাসাইনমেন্ট ‘সাবমিশন ডেট’ যত আগেই দেওয়া হোক না কেন, শেষ হবে শিক্ষক ক্লাসে ঢোকার ঠিক ৩০ সেকেন্ড আগে।
আইনের ভাষায় যেটাকে ‘লঘু পাপে গুরু দণ্ড’ বলে, সাধারণ ভাষায় সেটাকেই বলা হয় অ্যাসাইনমেন্ট!
গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্টে যে সবচেয়ে কম কাজ করে, সে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় ‘লাইফটা হেল হয়ে গেল। কেন যে এসব ছাতামাতার অ্যাসাইনমেন্ট দেয়!’
গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে জানা যায় কার কার ‘ও’ আছে। অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে আলোচনা শুরুর পাঁচ সেকেন্ড পরেই তাদের বলতে শোনা যায়, ‘দোস্ত, ও এসে ওয়েট করতেছে রে। রাইট টাইমে হাজির থাকতে না পারলে আজকেই ব্রেকআপ হয়ে যাবে!’
মনে করুন, অ্যাসাইনমেন্ট দিল ‘বাংলাদেশে ফুল চাষের সম্ভাবনা’। করতে গিয়ে দেখবেন, তার মধ্যে বাংলাদেশের ফল-মূল, নদী-নালা, খাল-বিল সব সংযুক্ত আছে!
ক্লাসের শেষের দিকে চিৎকার-চেঁচামেচি যত বেশি হবে, অ্যাসাইনমেন্টের হার তত বেড়ে যাবে।
স্যার একটা টপিক পড়িয়ে বললেন, ‘এটা তোমাদের জানার জন্য পড়ানো। পরীক্ষায় আসার ততটা সম্ভাবনা নাই।’ এটা শুনে আপনারা হালকা উল্লাস করলেন এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ওই ‘অগুরুত্বপূর্ণ’ বিষয়টাই পরবর্তী অ্যাসাইনমেন্ট টপিক হয়ে যাবে।
শুধু অ্যাসাইনমেন্টের কারণেই নিজ ডিপার্টমেন্টের বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসা থাকলেও প্রেম হয় না!
পাঁচ মার্কসের অ্যাসাইনমেন্টের জন্য যে পরিশ্রম করতে হয়, সে পরিশ্রম দিয়ে অনায়াসে পাঁচটা সেমিস্টার ফাইনাল পাস করা যাবে।
শিক্ষক যদি প্রথম ক্লাসে এসে বলেন, ‘এই কোর্সে তেমন অ্যাসাইনমেন্ট নাই।’ তাহলে বুঝবেন, ঘূর্ণিঝড় শুরু হতে আর দেরি নেই! দফায় দফায় অ্যাসাইনমেন্ট চলবে!
বিজ্ঞান বলে, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন, অ্যাসাইনমেন্ট তঁাদের জীবনে চক্রাকারে দৌড়ায়!
অনেকে বলেন, পৃথিবীতে অ্যাসাইনমেন্ট বলে কিছু নেই। সবই রঙিন বিশ্ববিদ্যালয়–জীবনটাকে সাদাকালো করে দেওয়ার ব্যবস্থা।
ক্লাসের প্রথম সারির দু-তিনজন সিরিয়াস শিক্ষার্থী যেদিন খসড়া অ্যাসাইনমেন্ট শিক্ষককে দেখায়, সেদিন অন্য সবাই নিজেদের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করে বলে, ‘অ্যাসাইনমেন্ট দিছিল নাকি! কিছুই তো জানতে পারলাম না!’
বিশ্ববিদ্যালয়–জীবনে কেউ আপনার সঙ্গে থাকুক না-থাকুক, অ্যাসাইনমেন্ট আপনার সেবায় সদা তৎপর! গ্যারান্টি-ওয়ারেন্টিসহ সব সময় পাশে থাকবে। এর জন্য কোনো মোবাইলফোন অপারেটরেরও দরকার পড়বে না।