মজার ব্যাকরণ
ফোড়ন কাটা, ঢুঁ মারা এবং পাততাড়ি গোটানোর মতো বাগ্ধারাগুলো এল কোথা থেকে?
বাংলা ভাষায় যে বাগ্ধারাগুলো আছে, সেগুলো এল কোথা থেকে?
ফোড়ন কাটা
সবজি বা ডাল রান্নার একপর্যায়ে ফোড়ন দিতে হয়। গরম তেলে ভেজে নেওয়া শুকনা মরিচ, জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলাকে বলা হয় ফোড়ন। রান্না কিছু সময়ের জন্য থামিয়ে ফোড়ন তৈরি করে সেখানে ঢেলে দিতে হয় সবজি বা ডাল। ফোড়ন দেওয়ার সময় ছ্যাঁৎ করে শব্দ হয়। একইভাবে দুজনের কথার মাঝখানে তাদের থামিয়ে মন্তব্য করাকে বলা হয় ফোড়ন কাটা। আলাপের মাঝখানে তৃতীয় ব্যক্তির কথা বলা বা ফোড়ন কাটা ওই দুজনের জন্য বিরক্তির কারণ হয়।
ঢুঁ মারা
‘ঢুঁ মারা’ বাগ্ধারার অর্থ অতি সামান্য সময়ের জন্য কোথাও যাওয়া। এ ধরনের যাওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো উদ্দেশ্য বা কারণ থাকে না। ঢুঁ মারা বাগ্ধারাটি এসেছে ছাগলের ঢুস মারা থেকে। ছাগল কখনো কখনো মানুষ দেখে কারণ ছাড়াই তেড়ে এসে মাথা দিয়ে ঢুস মারে। একইভাবে কোনো কোনো সময় আমরা কারণ ছাড়াই কোনো জায়গায় মাথা ঢুকিয়ে উঁকি দিই এবং দেরি না করেই সেখান থেকে চলে আসি।
পাততাড়ি গোটানো
‘পাততাড়ি’ শব্দের সাধারণ অর্থ পাতার তাড়ি বা পাতার গুচ্ছ। কাগজ উদ্ভাবনের আগে তালপাতা বা কলাপাতায় লেখা হতো। ছাত্ররা পাঠশালায় তালপাতা বা কলাপাতার গোছা নিয়ে যেত এবং সেই পাতায় লেখাজোখা করত। পাঠশালার পাঠ শেষ হলে তারা পাতার তাড়ি গুছিয়ে বেঁধে নিয়ে বাড়ি ফিরত। এখান থেকে পাততাড়ি গোটানো বাগ্ধারাটি এসেছে। এর অর্থ দাঁড়িয়েছে কাজ হয়ে যাওয়ার পর সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে সরে পড়া বা পালিয়ে যাওয়া।
তারিক মনজুর: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়