‘বাজখাঁই’ বাগ্‌ধারাটির উৎপত্তি কার নামে, জানেন?

বাংলা ভাষায় যে বাগ্‌ধারাগুলো আছে, সেগুলো এল কোথা থেকে?

বাজখাঁই

অলংকরণ: আরাফাত করিম

অত্যন্ত কর্কশ ও উচ্চকণ্ঠকে বলা হয় বাজখাঁই। ষোলো শতকে উত্তর ভারতে বাজবাহাদুর খান বা সংক্ষেপে বাজ খাঁ নামে একজন শাসক ছিলেন। তিনি উঁচু গলায় গান গাইতে পারতেন।

মোগল সম্রাট আকবরের কাছে তিনি যুদ্ধে পরাজিত হন। তারপর তাঁর জায়গা হয় আকবরের দরবারে। সংগীতশিল্পী হিসেবে তিনি বিশেষ পরিচিতি পান। চাপা গলায় অস্বাভাবিক উঁচু সুর তৈরি করতে পারতেন এই বাজ খাঁ। তাঁর নাম থেকেই বাজখাঁই বাগ্‌ধারাটি এসেছে।

ঢিমেতাল

তবলার অনেক রকম তাল আছে। এর মধ্যে ধীরগতির তাল আছে, দ্রুতগতির তালও আছে। ‘ঢিমে’ শব্দের অর্থ ধীর বা মন্থর। তেতাল বা তিনতাল একটি ধীরগতির তালের নাম। তবলার ধীরলয়ের তেতালের মতো কিছু লোকের কাজকর্মও হয় অতি ধীরগতির। অলস ও উদ্যমহীন লোকের চলাফেরা বা কাজকর্ম দেখে বলা হয় ঢিমেতাল। এ রকম লোক ঢিমেতালে চলে বা ঢিমেতালে কাজ করে।

ডানপিটে

‘ডান’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত দণ্ড বা বাংলা ‘ডান্ডা’ থেকে। এর অর্থ লাঠি। আর ‘পিটে’ এসেছে পেটানো থেকে। যে ডান্ডা বা লাঠি দিয়ে কিছু পেটায়, তাকে ডানপিটে বলে। ডাংগুলি খেলার ‘ডাং’ অর্থও লাঠি। একসময় গ্রামাঞ্চলে ডাংগুলি খেলার খুব প্রচলন ছিল। দুরন্ত ছেলেরা কাজ ফেলে, পড়াশোনা না করে সারা দিন ডাংগুলি খেলে বা ডাং দিয়ে গুলি পিটিয়ে সময় কাটাত। এখান থেকে ডানপিটে বাগ্‌ধারার জন্ম। দুরন্ত স্বভাবের কিংবা শাসন মানে না, এমন ছেলেমেয়েদের ডানপিটে বলা হয়।

তারিক মনজুর: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন