সাকিব ভাই, মাঠে নেমে কিন্তু আবার বইলেন না, আমি আর খেলব না...
আজ শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ দলের এশিয়া কাপ মিশন। নানা পেশার, নানা শ্রেণির মানুষ যদি টিম বাংলাদেশকে পরামর্শ দিতেন, কী বলতেন তাঁরা? ভেবেছেন শরীফ মজুমদার, এইচ এম ফজলে রাব্বী ও মাহবুব আলম
সাকিব আল হাসানের উদ্দেশে মোটিভেশনাল স্পিকার আরমান সুখন
মাঠে নেমে কিন্তু আবার বইলেন না, ‘আমি আর খেলব না, কে খেলবে জানাচ্ছি।’ মনে রাখবেন, লাইফ ইজ আ রেস। সব সময় দৌড়ের ওপর থাকবেন। জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে পড়লে চলবে না। পই পই করে রানের হিসাব বুঝে নেবেন।
মুশফিকুর রহিমের উদ্দেশে বাসের হেল্পার রতন
ভাই, বাম পা আগে দিয়েন! মানে বাম পা আগে দিয়া আপনি যে সুইপ শটটা খেলেন, ওইটা তো খেলবেনই। তবে ওস্তাদ বাঁয়ে পেলাসটিক…মানে ফিল্ডার আছে কি না, একটু দেইখা লইয়েন।
শামীম হোসেনের উদ্দেশে আল সালাদিয়া হোটেলের ওয়েটার রাজু
একটা ব্যাপার খেয়াল করসি ভাই, আপনে কিন্তু খালি লেগ সাইডে মারেন। আমার হোটেলে আইসেন। লাগলে আপনারে মুরগির লেগ পিস দুইটা বাড়ায়া দিমু। তা–ও সব বল লেগে মাইরেন না।
মোস্তাফিজুর রহমানের উদ্দেশে স্কুলছাত্র সজল
মোস্তাফিজ চাচ্চু, পরীক্ষার সময় আমি কিন্তু শুধু পেনসিল কাটারই নিয়ে যাই না। কলম নিই, পেনসিল নিই, রুলার নিই, ইরেজার নিই…। আপনিও ম্যাচে শুধু কাটার নিয়ে যাইয়েন না…
আফিফ হোসেনের উদ্দেশে অভিনেতা ও ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল
আমি নাহয় ব্যবসা সামলাই, সিনেমাটাও সামলাই। তোমার অত কিছু সামলানো লাগবে না। তুমি শুধু লোয়ার অর্ডারটা সামাল দিয়ো প্লিজ।
শরীফুল ইসলামের উদ্দেশে মিষ্টির দোকানদার গৌরগোবিন্দ ঘোষ
ভাতিজা, তোমারে নিয়া কিন্তু অনেক আশা। তুমি বিশ্বকাপ শেষে আমার দোকানে আইসা পেট ভইরা প্যাড়া সন্দেশ খাইয়ো, তবু ম্যাচের সময় প্যারা খাইয়ো না। দুই-চারটা বাড়ি খাইয়া অমন ঘাবড়ায় গেলে চলব?
মোহাম্মদ নাঈমের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল
বাবা নাঈম, আমরা নাহয় নিজেদের জায়গায় অনড়। তুমি অনড় হয়ে থাইকো না। ব্যাটিংয়ের সময় একটু ফুটওয়ার্ক দেখাইয়ো। তোমার কাছে আমাদের এক দফা এক দাবি—শুধু একটা ঝোড়ো স্টার্ট চাই।
তানজিদ হাসানের উদ্দেশে একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ইন্টার্ন ফারজানা রহমান
ব্রো, আপনিও তো আমার মতো একরকম ইন্টার্ন বলা যায়। ইন্টার্ন বলে কাউকে ভয় পাবেন না। সবাই আপনাকে অনভিজ্ঞ ভাবতে পারে। কিন্তু সুযোগ পেলেই দেখিয়ে দেবেন, আপনি দলে থাকার জন্যই এসেছেন। পানি টানার জন্য না।
এনামুল হকের উদ্দেশে মাঝি জব্বার আলী
চামেচুমে তো দলে সুযোগ পাইয়াই গেলা ভাইগনা। তবে দলের হাল কিন্তু ধরতে হবে শক্ত হাতে। পাতলা হাতে ব্যাটিং কইরা টুক্কুস করে ফিল্ডারের হাতে বল তুইলা দিলে চলবে না।
তাওহিদ হৃদয়ের উদ্দেশে ঘটক কেরামত মিয়া
আপনি কি সুন্দরী, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পাস, ঢাকার বনানীতে বাড়ি আছে—এমন পাত্রী খুঁজছেন? কোনো টেনশন নিয়েন না ব্রাদার। আপনার বউ আমি খুঁজব। বউ শুধু যে মানসিক সাপোর্ট দেবে, তা নয়। বিপদে–আপদে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েও পাশে থাকবে।
মেহেদী হাসান মিরাজের উদ্দেশে সিএনজিচালক ঝন্টু
২০টা রান বাড়ায় দিয়েন ভাই। যেই দিনকাল চলতেছে…বোঝেনই তো। ৩০০–৩৫০ রানে পোষায় না। আপনি শেষের দিকে নাইমা একটু ধুমাপিডা দিলে যদি ২০টা রান বাড়ে আরকি…
নাজমুল হোসেন শান্তর উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী সাবরিনা
ব্যাটিংয়ের সময় বিপক্ষ দল কিন্তু আশপাশ থেকে নানা কথা শোনাবে। ওসবে কান দিলে আপনি আপনার কাজটা করতে পারবেন না। অতএব মাথা ঠান্ডা রাখবেন ভাইয়া। খেলা দিয়েই স্লেজিংয়ের জবাব দিবেন। লাগলে পাল্টা দুইটা কথা শুনায় দিবেন।
তাসকিন আহমেদের উদ্দেশে পেশাদার ছিনতাইকারী রুস্তম
শুনলাম আপনি নাকি মোহাম্মদপুর, মানে আমাগো এলাকার পোলা। এলাকার মান–ইজ্জত আমরা তো ধুলায় মিশায় দিসি। এখন আপনি যদি কিছু করতে পারেন। সুযোগের অপেক্ষায় ওত পাইতা থাকতে হবে বাই। ব্যাটসম্যান মাঠে নামবে, কিছু বুইঝা ওঠার আগেই ফট কইরা দেখবে উইকেট নাই।
হাসান মাহমুদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
আমি তোমার বোলিং দেখে সব সময় শিহরিত হই। তবে বাবা, তোমাকে আরও আগ্রাসী হতে হবে। উইকেট পেলে চুপ করে থাকলে হবে না। কথা বলে মাঠ গরম করে রাখতে হবে। তাহলেই না বিরোধী দল, সরি বিপক্ষ দল চাপে থাকবে!
নাসুম আহমেদের উদ্দেশে চলচ্চিত্র পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলান
বোলিং করবা আমার সিনেমার মতো। কাহিনি, অর্থাৎ বল কখন যে কোন দিকে মোড় নেবে, ব্যাটসম্যান যেন বুঝতে না পারে। ফিজিকস, কেমিস্ট্রি, হিস্ট্রি—সব পড়ে মানুষ তোমার বল খেলতে আসবে। তবু বুঝবে না! খেলার পরে এক্সপ্লেনেশন ভিডিও দেখে বুঝতে হবে।