শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একবার এসেছেন অভিনেতা শিশির ভাদুড়ীর থিয়েটারে। তাঁর নিজের লেখা একটি নাটকের অভিনয় দেখতে। নাট্য-অভিনয় দেখে শরৎচন্দ্ৰ মুগ্ধ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন বন্ধু। তাঁরাও খুশি।
নাটক শেষে বাড়ি ফেরার পালা। এ সময় ঘটল এক কাণ্ড। শরৎচন্দ্ৰ তাঁর একপাটি চটিজুতা খুঁজে পাচ্ছেন না। সবাই খুঁজলেন, কিন্তু পাওয়া গেল না।
শরৎচন্দ্র কী আর করেন, ফেরার সময় বাকি চটিজুতা কাগজে মুড়ে সঙ্গে নিলেন। বন্ধুদের হাসতে হাসতে বললেন, ‘ব্যাটা চোর মনে করেছে এই পাটিটাও আমি ফেলে রেখে যাব, আর ও পরের দিন এসে নিয়ে যাবে। আমি তা হতে দিচ্ছি না।’
পরদিন সকালে ঝাড়ুদার হল ঝাড়ু দিতে গিয়ে হারানো চটিটা দেখতে পেয়ে শিশির ভাদুড়ীকে ফেরত দেন। শিশির ভাদুড়ীও চটিটা হাতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে যান হাওড়ার শিবপুরে শরৎচন্দ্রের বাসায়।
শরৎচন্দ্ৰকে শিশির ভাদুড়ী বললেন, ‘শরৎবাবু, আপনার হারানো চটি পাওয়া গেছে, এই নিন।’
শরৎচন্দ্ৰ হাসতে হাসতে বললেন, ‘কী আশ্চর্য! আমি যে গতকাল আসবার সময় অন্য পাটিটা হাওড়া পুল থেকে গঙ্গায় বিসর্জন দিয়ে এসেছি! ভালো, এটাও যখন পাওয়া গেল, এটাকেও পরে সময় করে একদিন গঙ্গার জলে বিসর্জন দিয়ে আসতে হবে। জোড়ায় থাকা অভ্যাস। না হলে একজনকে ছেড়ে অন্যজনের মন খারাপ হবে যে!’
শরৎচন্দ্রের রসিকতায় শিশির ভাদুড়ী হেসে ফেললেন।