মা ও বাবার দেহের উচ্চতার সঙ্গে সন্তানের উচ্চতার একটা সম্পর্ক আছে। বলা যায়, সন্তানের উচ্চতা তার মা-বাবার উচ্চতার কাছাকাছি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বাচ্চাদের উচ্চতা নিয়ে বিভিন্ন সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ ব্যাপারে একটা আনুমানিক হিসাব করা সম্ভব হয়েছে। দেখা গেছে, অসুখ-বিসুখ বা হরমোন সমস্যার কারণে উচ্চতা-সম্পর্কিত জিনগত বৈশিষ্ট্যের হেরফের হয় না। যেহেতু একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর উচ্চতার প্রায় ৬০ শতাংশ অর্জিত হয় তিন বছর বয়সে এবং পুরুষের ক্ষেত্রে তিন বছর বয়সে অর্জিত হয় প্রায় ৫৫ শতাংশ উচ্চতা; তাই বলা যায়, কোনো শিশুর উচ্চতা দুই বছর বয়সে যত, বড় হলে উচ্চতা দাঁড়াবে মোটামুটি তার দ্বিগুণ।
মা-বাবার উচ্চতা থেকে সন্তানের উচ্চতার ধারণা লাভের একটা সহজ উপায় আছে। প্রথমে দুজনের উচ্চতা যোগ করে দুই দিয়ে ভাগ করি। এখন এর সঙ্গে তিন ইঞ্চি যোগ করলে ছেলের আনুমানিক উচ্চতা, আর তিন ইঞ্চি বিয়োগ করলে মেয়ের আনুমানিক উচ্চতা পাওয়া যাবে। দেখা গেছে, এই হিসাব ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে সঠিক, অবশ্য দুই ইঞ্চি বেশি বা কম হতে পারে।
ধরা যাক, বাবার উচ্চতা পাঁচ ফুট সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি আর মায়ের উচ্চতা পাঁচ ফুট সাড়ে চার ইঞ্চি। তাহলে ছেলের উচ্চতা ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে অন্তত পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি থেকে পাঁচ ফুট ১০ ইঞ্চির মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। আর মেয়ের সম্ভাব্য উচ্চতা ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে হতে পারে পাঁচ ফুট থেকে পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির মধ্যে। এখানে মনে রাখা দরকার যে এটা মোটামুটি হিসাব। পাঁচ শতাংশ ক্ষেত্রে হয়তো দেখা যাবে, মেয়ের উচ্চতা মা-বাবাকেও ছাড়িয়ে গেছে। তবে সে রকম খুব কম ক্ষেত্রেই ঘটার সম্ভাবনা থাকবে।
বাচ্চাদের এক্স-রে করলে দুই হাড়ের মাঝখানে যে ফাঁক থাকে সেটা থেকে উচ্চতা অনুমান করা কঠিন, তবে এ থেকে বোঝা যাবে যে বাচ্চার উচ্চতা বৃদ্ধির পথে কোনো সমস্যা আছে কি না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই ফাঁক কমতে থাকে এবং পূর্ণ বয়স হলে হাড়গুলো জোড়া লেগে উচ্চতা আর বাড়ে না।