সবচেয়ে ভালো ও সুন্দরভাবে কথা বলে ‘কঙ্গো আফ্রিকান গ্রে প্যারট’ নামে পরিচিত একজাতীয় আফ্রিকান তোতাপাখি। কাকাতুয়া, ময়না, টিয়া এমনকি কাকও কথা বলতে পারে। আসলে এসব পাখি কথা বলে না, মানুষের কথার অনুকরণ বা নকল করে মাত্র। এরা শব্দের অর্থ বোঝে না। মানুষের স্বরতন্ত্রী বা স্বরযন্ত্রের মতো কোনো অঙ্গ পাখির নেই। ওরা আসলে গলা দিয়ে হুইসেলের শব্দ করে এবং সেই শব্দতরঙ্গ এমনভাবে ওঠায়-নামায়, যা মানুষের কথার মতো শোনায়।
এ রকম শব্দ সৃষ্টির জন্য ওরা শ্বাসনালি এবং এর শেষাংশে যুক্ত সিরিঙ্কস ব্যবহার করে। এই সিরিঙ্কস শ্বাসনালির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি প্রত্যঙ্গ। ময়না শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যবহৃত শ্বাসনালি দিয়ে বাতাস বের করার সময় নালির পেশিগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী সংকুচিত ও প্রসারিত করে মানুষের কথার মতো শব্দ সৃষ্টি করে। এ জন্য কথা বলার সময় ময়না মাথা বাঁকা করে। সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, ময়না-টিয়া-কাকাতুয়াজাতীয় পাখি কথা বলার সময় বাতাস ও শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য জিহ্বাও ব্যবহার করে। ময়না অনেক সময় কয়েকটি শব্দ যুক্ত করে সরল বাক্যও গঠন করতে পারে। পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়েও ওরা শব্দ উচ্চারণ করে।
যেমন, রাতের অন্ধকারে কেউ চুপিচুপি খাঁচার কাছে এলে ‘চোর! চোর!’ বলে চিৎকার করলাম। অমাবস্যার রাতে এভাবে বারবার বলতে থাকলে কয়েক মাসে ময়না সেটা শিখতে পারবে এবং ঘরে কোনো আগন্তুককে দেখলে ঠিকই ‘চোর! চোর!’ বলে চেঁচিয়ে উঠবে। প্রশ্ন ওঠে, শুধু ময়না-টিয়া কথা বলে, অন্য পশুপাখি বলে না কেন? আসলে সব পশুপাখিই চারপাশের বিভিন্ন শব্দ নকল করে। উদ্দেশ্য, বনে আত্মরক্ষা বা সঙ্গী আকর্ষণ করা। ময়না যখন খাঁচায় থাকে, তখন সেও কথা বলে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায়।