নতুন বিচারক কে
যে কারণে মীরাক্কেল থেকে বাদ পড়লেন শ্রীলেখা
রিয়েলিটি শো মীরাক্কেল বেশ কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হিসেবে প্রচারিত হচ্ছে। এ প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে প্রথম থেকেই ছিলেন শ্রীলেখা মিত্র। মীরাক্কেলের পরবর্তী আয়োজনে শ্রীলেখার না থাকার ঘোষণা করা হয়েছে।
রিয়েলিটি শো মীরাক্কেল বেশ কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হিসেবে প্রচারিত হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শীর্ষ তালিকায় ছিলেন বেশ কয়েকজন প্রতিযোগী। এ প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে প্রথম থেকেই ছিলেন শ্রীলেখা মিত্র। পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রজতাভ দত্তের সঙ্গে বরাবরই বিচারকের আসনে দেখা গেছে ভারতের এই সুপরিচিত অভিনয়শিল্পীকে। মীরাক্কেলের পরবর্তী আয়োজনে শ্রীলেখার না থাকার ঘোষণা করা হয়েছে।
জি বাংলায় এটির প্রোমোও প্রচারিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হচ্ছে, এবারের প্রতিযোগিতায় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র থাকছেন না। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রীলেখা মিত্র নিজেই জানিয়েছেন, ফিরেছে মীরাক্কেল, কিন্তু বিচারকের আসন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। কোনো এক বিখ্যাত বউদি কিংবা টিকটিক দিদিকে দেখা যাবে।
ইন্ডিয়া টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, মীরাক্কেল থেকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে জি বাংলা থেকে সরাসরি কিছু জানানো হয়নি। কোনো ফোনও করা হয়নি। তবে শুটিং শুরু হয়ে গেছে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মীরও শ্রীলেখাকে কিছু বলেননি। ফেসবুকের পোস্টে শ্রীলেখা লেখেন, ‘আমায় বাদ দিয়েই বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় কমেডি শো আবার শুরু হচ্ছে। সত্যি কথা বলার জন্য এবং ব্র্যান্ডের প্রতি এত বছরের আনুগত্যের জন্য আমাকে এর মূল্য দিতে হলো। সেই সঙ্গে অবশ্যই এই প্রক্রিয়ার কোনো অংশে তেল না দেওয়ার জন্যও মূল্য দিতে হলো। ধন্যবাদ এই জনপ্রিয় চ্যানেলটিকে। আমি সেই নারী, যে আমার সীমাবদ্ধতাগুলো স্বীকার করি। যাঁরা আমায় অপছন্দ করেন, ঘৃণা করেন, তাঁরা এবার পার্টি করতে পারেন।’
এরপর তিনি লেখেন, ‘এই সব ঘটনাই প্রমাণ করে, ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে নেপোটিজম কীভাবে চলছে। এই সব কিছুই প্রমাণ করে যে আমার ইউটিউব চ্যানেলে ওই বিস্ফোরক তথ্যগুলো তুলে ধরে আমি ঠিক কাজই করেছিলাম। এটা আমার কাছে নতুন কিছু নয়; বরং অন্য রকম হলেই আমি অবাক হতাম। আর লেডি, তোমার ছোট প্রশ্নকে আমি এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই বেছে নিয়েছি। আপনি আমার খামতি ঠিকই ধরেছেন, কিন্তু খামতি নিয়ে আমি এখন কথা বলতে চাই না। আমার ভুল আমি নম্রতার সঙ্গে স্বীকার করি। এই সামাজিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমি লড়াই করতে অক্ষম, তবে মাথা নিচু করব না। আপনারা সবাই খুব ভালো কাজ করুন। জীবন একটা বড় কমেডি শো। সবাই ভালো থাকবেন। সাবধানে থাকবেন।’
এই সামাজিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমি লড়াই করতে অক্ষম, তবে মাথা নিচু করব না। আপনারা সবাই খুব ভালো কাজ করুন। জীবন একটা বড় কমেডি শো। সবাই ভালো থাকবেন। সাবধানে থাকবেন।শ্রীলেখা মিত্র, অভিনেত্রী
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পরই টলিউডের নেপোটিজম নিয়ে মুখ খুলেছিলেন শ্রীলেখা। সেখানে তিনি বলেছিলেন, কীভাবে তাঁকে জোর করে নানা কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরাসরি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। কীভাবে প্রেম করে ঋতুপর্ণা-প্রসেনজিৎ জুটি জনপ্রিয় হন, সেই ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছিলেন। এমনও বলেছেন, প্রসেনজিৎকে ঘনিষ্ঠভাবে সময় দিলে হয়তো তিনি বেশি সুযোগ পেতেন। সে সুযোগ তিনি গ্রহণ করেননি। নিজের ফেসবুক পেজে দীর্ঘ এক ভিডিও বার্তায় এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেন তিনি।
ওই ভিডিও বার্তার পর বেশ কিছু গণমাধ্যম তা প্রচার করে। এরপর তাঁকে কটাক্ষ করেই স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘নিজের সীমাবদ্ধতা ঢাকতে অন্যদের কাজকে ছোট করার কিংবা কটাক্ষ করে তাঁদের অপমান করার কোনো অর্থ নেই।’ তবে সেই ‘ছোট প্রশ্নে’র জবাব তখন দেননি শ্রীলেখা। এমনকি তাঁর ইউটিউব চ্যানেল থেকে লাইভ করার পর বলেছিলেন, এ নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে তিনি কোনো কথা বলবেন না।
যে চ্যানেলকে এত দিন ধরে তিনি পরিবার ভেবে এসেছেন, তাঁর ভাবনায় যে ভুল ছিল; আজ তা তিনি বুঝতে পেরেছেন। আর্থিক ক্ষতি তাঁর হলোই, সেই সঙ্গে মানসিক ক্ষতিও হলো। কারণ, এই শোয়ের সঙ্গে তাঁর অনেক স্মৃতি জড়িয়ে ছিল। তবে এরপর যদি অন্য কোনো মৌসুমেও তাঁকে মীরাক্কেলের বিচারক হিসেবে ডাকা হয়, তিনি আর যাবেন না। কারণ, তাঁর কাছে আত্মমর্যাদার দাম অনেক বেশি। তবে শ্রীলেখাহীন মীরাক্কেল মানতে পারছেন না তাঁর অনুরাগীরা।
১০ বছরের বেশি সময় ধরে মীরাক্কেলের বিচারকের আসনে দেখা গেছে শ্রীলেখা মিত্রকে। একাধিক সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, এবার হয়তো মীরাক্কেলে দেখা যেতে পারে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, পাওলি দাম কিংবা নুসরাত জাহানকে। যদিও তাঁদেরও কিছু জানায়নি জি বাংলা।