মুচলেকায় পুলিশ থেকে ছাড়া পেলেন চিত্রনায়িকা সানাই
কয়েকটি গানের ভিডিওতে কাজ করেছেন সানাই। এরপর যুক্ত হন চলচ্চিত্রে। দুটি চলচ্চিত্রে সাইন করেছেন। ‘ময়নার ইতিকথা’ ছবির কাজ শেষ করেছেন, আরেকটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হন জায়েদ খানের বিপরীতে। গাজী মাহবুব পরিচালিত ‘ভালোবাসা ২৪.৭’ নামের এই ছবির মহরত হলেও শুটিংয়ের কোনো খবর নেই। মিউজিক ভিডিও আর চলচ্চিত্রে তাঁকে ঘিরে যতটা আলোচনা, এর চেয়ে বেশি আলোচনা তাঁর উদ্ভট সব কর্মকাণ্ড নিয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে ফেসবুক, ইউটিউব আর টিকটক অ্যাপে আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশের অভিযোগ অনেক দিনের। সেই অভিযোগে আজ রোববার দুপুরে তাঁকে রাজধানীর মিন্টো রোডের পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগে ডাকা হয়। সাইবার অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা নিয়ে সানাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের নেতৃত্বে নিরাপদ ইন্টারনেট প্রচারণার অংশ হিসেবে আজ সানাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। সানাই ফেসবুক, ইউটিউব আর টিকটকে পোস্ট করা তাঁর ভিডিওগুলোর জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি আপলোড করা সব ভিডিও মুছে ফেলতে রাজি হয়েছেন। মুচলেকা দিয়ে তিনি লিখেছেন, আর কখনো এ ধরনের ভিডিও বানাবেন না এবং প্রকাশ করবেন না। সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগ এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে কড়া নজরদারি করছে। মুচলেকা দেওয়ার পরও সানাই তাঁর কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তারকাদের অনেকেই টিকটক আর বিগোলো অ্যাপ ব্যবহার করেন। এসব অ্যাপ তরুণদের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। তাই এসব অ্যাপ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারকাসহ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যাঁরা এসব অ্যাপ ব্যবহার করেন, তাঁদের অনুরোধ করছি, আপনারা যদি এসব ব্যবহার বন্ধ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষ এমনিতে সরে যাবে।’
পুলিশের সাইবার অপরাধ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চিত্রনায়িকা সানাই তাঁর মুচলেকায় লিখেছেন, ‘আমার সমালোচিত কনটেন্টগুলো কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে বা আর্থিক লাভের আশায় করিনি। আজ সাইবার অপরাধ বিভাগ ইউনিটে এসে এটা আমার অনুধাবন হয়েছে, এই কনটেন্টগুলো দেখে যে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এটা আমার ভুল ছিল। আমি এ দেশের একজন নাগরিক হিসেবে, এ দেশের সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশে এ দেশের আইন মেনে একজন ভালো শিল্পী হতে চাই। ব্যক্তিগত বা যৌথভাবে করা বিব্রতকর ভিডিও বা ছবির জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি অবশ্যই ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকব। এমনকি আমার নিয়ন্ত্রণে থাকা সব প্রোফাইল থেকে এ ধরনের কনটেন্ট মুছে ফেলব। এর বাইরে অন্য কনটেন্টগুলোর বিষয়ে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহযোগিতা চেয়েছি।’
সানাই সবাইকে আহ্বান জানিয়ে মুচলেকায় লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের ইন্টারনেটকে নিরাপদ রাখব এবং সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগানকে এগিয়ে নেব।’