নতুন বছরে তারকাদের পারিশ্রমিক বাড়ছে
টেলিভিশন নাটকের ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন বছরে বেশ কিছু তারকা তাঁদের পারিশ্রমিক বাড়িয়েছেন। করোনাকালীন শুটিংয়ে নিরাপত্তার জন্য কিছু তারকা পারিশ্রমিক বাড়ানোর অনুরোধ করেন। এটা দেখে নতুন বছরে অনেক তারকাই তাঁদের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিয়েছেন।
ছোট পর্দার ব্যস্ত অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব জানিয়েছেন, নতুন বছরে যাঁরা তাঁর শুটিং শিডিউল চেয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেককেই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর পারিশ্রমিক বাড়ার বিষয়টি। গত বছর পর্যন্ত তৌসিফ একটি একক নাটকে অভিনয়ের জন্য পারিশ্রমিক নিতেন ৪০ হাজার টাকা। ২০২১ সাল থেকে এই অভিনেতা ২০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৬০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক নেবেন। তৌসিফ মাহবুব বলেন, ‘ভালো কাজ করার জন্য পারিশ্রমিক একটু বাড়িয়েছি। সবাইকে উৎসাহিত করছি সময় বাড়িয়ে দিতে, সবাই যেন তিন দিন নাটকের শুটিং করেন। একক নাটকের জন্য দুই দিন শুটিং কম হয়ে যায়।’
অভিনয়শিল্পী জোভান আহমেদ প্রতিটি নাটকের জন্য গত বছর পর্যন্ত পারিশ্রমিক নিতেন ৪০ হাজার টাকা। নতুন বছরে জোভানকে নিতে হলে গুনতে হবে ১০ হাজার টাকা বেশি অর্থাৎ ৫০ হাজার টাকা।
অভিনেত্রী তানজিন তিশা ও সাবিলা নূর ১০ হাজার টাকার মতো পারিশ্রমিক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সাবিলা নূর বলেন, ‘পারিশ্রমিক বাড়ানোর ইচ্ছা আছে। তবে পরিস্থিতি বুঝে বাড়াচ্ছি।’ অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ পাঁচ হাজার টাকা পারিশ্রমিক বাড়াচ্ছেন। পারিশ্রমিক বাড়ানোর এই তালিকায় আছেন অভিনয়শিল্পী সাফা কবির, মিশু সাব্বির, শামীম হাসানসহ একাধিক তারকা।
মূলত করোনাকালীন নাটকের শুটিংয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে প্রযোজকদের কাছে পারিশ্রমিক বাড়ানোর অনুরোধ করেছিলেন বেশ কিছু তারকা। তখন বিষয়টি বিবেচনা করে কিছু কিছু তারকাকে পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রযোজকেরা। সিএমভি ইউটিউব চ্যানেলের কর্ণধার এস কে শাহেদ আলী জানান, অভিনেতা অপূর্ব ৭০ হাজার টাকা নিতেন প্রতি একক নাটকে অভিনয়ের জন্য। করোনার সময়ে নাটকের শুটিংয়ে ঝুঁকি থাকায় পারিশ্রমিক বাড়ানোর অনুরোধ করেন। তখন তাঁকে এক লাখ টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হয়।
একইভাবে মোশাররফ করিম, আফরান নিশো, মেহ্জাবীন চৌধুরীরও পারিশ্রমিক বেড়ে গেছে। ঈদুল আজহার পরই তাঁরা প্রায় লাখ টাকার মতো পারিশ্রমিক নিচ্ছেন।
টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, সিএমভি, ইগল প্রডাকশনসহ ছয়টি প্রডাকশন হাউস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে একই তথ্য জানা গেছে।
তারকাদের পারিশ্রমিক বাড়ার খবরে উদ্বিগ্ন টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক সাজু মুনতাসির। তিনি বলেন, ‘এখনো প্রতিদিন নাটকের বাজেট কমছে। সেখানে কিছু মানুষের কারণে তারকাদের বাজেট বাড়ায় আমরা হতাশ। এটা নাটকের জন্য আরও অশুভ সংকেত।’ অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘চাহিদা থাকলে পারিশ্রমিক আপনাআপনি বেড়ে যায়, কিন্তু নিজে নির্ধারণ না করাটাই ভালো। কোনো শিল্পী যদি বছরে বছরে পারিশ্রমিক বাড়ান, তা অত্যন্ত দুঃখজনক খবর। অযাচিতভাবে নিজেদের বাজেট বাড়ানোকে আমি নিন্দা জানাই।’
ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, ভিউকে বাহানা করে কিছু শিল্পী অযৌক্তিকভাবে তাঁদের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে নাটকের সিংহভাগ টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। বাকি টাকা দিয়ে নাটক হবে কি না তা ভাবছেন না।