গোলপোস্ট ছিল তাদের অত্যাচারের অন্যতম জায়গা
স্বাধীনতা যুদ্ধে ফেনী কলেজ ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর অন্যতম ক্যাম্প আর টর্চার সেল। কলেজের গোলপোস্ট ছিল তাদের অত্যাচার করার অন্যতম জায়গা। কতশত জানা–অজানা মানুষ এই কলেজের বধ্যভূমিতে শহীদ হয়েছে, তা আজও অজানা। এসব নিয়েই নাটক ‘গোলপোস্ট’। গত রোববার ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে পরিবেশিত হয় নাটকটি।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় মঞ্চায়িত হচ্ছে গণহত্যা পরিবেশ থিয়েটার। এ ধারাবাহিকতায় ফেনীতে পরিবেশিত হয় নাটক ‘গোলপোস্ট’। ফেনী জেলা শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় আসাদুল ইসলামের লেখা নাটকটির পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন আবুল কালাম আজাদ। নাটকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেনীর জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মাসুদুর রহমান।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘পাকবাহিনীর আক্রোশের আগুনে পুড়েছে গ্রামের পর গ্রাম, প্রাণ হারিয়েছে সাধারণ মানুষ, যাদের ছিল না কোনো দল, মত, গোত্র। তাদের অপরাধ ছিল একটাই, তারা বাঙালি। পাকবাহিনী এ দেশের মাটিটাই চেয়েছে, মানুষ না। তাই বিনা কারণে হত্যা করেছে শিশু, নারী, বৃদ্ধ। “গোলপোস্ট” সেই নাম জানা ও না জানা সাধারণ মানুষগুলোর প্রতি উৎসর্গ করছি।’
এই আয়োজনের প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ‘পরিবেশ নাটক হলো প্রচলিত প্রেক্ষাগৃহের বাইরে গিয়ে অন্যত্র নাটক মঞ্চায়ন। এ পদ্ধতিতে যেকোনো স্থানে মঞ্চায়নের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে নাট্য পরিবেশনা সম্ভব। সে কারণেই পুরোনো গ্যারেজ, পরিত্যক্ত অস্ত্র কারখানা, অব্যবহৃত কসাইখানা, গির্জা ইত্যাদি স্থান নাট্যকর্মীদের হাতে পড়ে রঙ্গালয়ের মাহাত্ম্য লাভ করেছে। বাংলাদেশে এ ধারণা ভিন্ন মাত্রা পায়। যেখানে ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, ঠিক সেখানেই নাটক মঞ্চস্থ করে পরিবেশ থিয়েটার প্রকৃত অর্থে পরিবেশবাদী হয়ে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে এ কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা আশাবাদী।’
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় মঞ্চস্থ হবে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনা ‘জোহা হল কথা কয়’। রহমান রাজুর রচনা ও নির্দেশনায় নাটকটি পরিবেশিত হবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলে।