অবশেষে মুখ খুললেন শাবনূর!

শাবনূর
শাবনূর

মা হতে চলেছেন শাবনূর! এই ‘সুখবর’ স্বীকার করেছেন শাবনূর নিজে, তাঁর বাবা,এমনকি পরিবারের সকলেই। কিন্তু দেশের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী তাঁর বিয়ের খবরটি এতদিন বেমালুম চেপেই ছিলেন! তিনি কেনো গোপনে বিয়ে করেছেন আর বিয়ে করে কেনই বা খবরটি চেপে রেখেছিলেন এতদিন? এই সব বিষয় নিয়ে কথা হয় শাবনূরের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তিনি তখন অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অবস্থান করছিলেন। ছোট বোন ঝুমুরের সহায়তায় মুঠোফোনে প্রথম আলো ডটকমের প্রতিবেদক মনজুর কাদেরের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
অভিনন্দন আপনাকে ...
ধন্যবাদ ধন্যবাদ। তবে ঢাকার যে অবস্থা শুনছি তাতে মনটা অনেক খারাপ।
কেমন সেটা?
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে চারিদিকে যে অবস্থা তা খুব বিচলিত করে।
অভিনয়ের জন্য সিনেমায় মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে হয়েছে এবার বাস্তবে মা হতে চলছেন মাতৃত্বের এই সময়টা কেমন উপভোগ করছেন?
খুবই মজা লাগছে। এটা আসলে একেবারেই অন্যরকম অনুভূতি। যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। একেবারেই অন্যরকম জীবন। আমার বোনেরও বাচ্চা হবে। সবমিলিয়ে পুরো পরিবারজুড়ে আনন্দের বন্যা বইছে।
 কবে নাগাদ নতুন অতিথির মুখ দেখা হচ্ছে ...
চিকিত্সকের কথামতো এ মাসের শেষ সপ্তাহে সন্তানের মুখ দেখার অপেক্ষায় আছি। সবাই আমার অনাগত সন্তানের জন্য দোয়া করবেন।  
 সব সময় আপনি বিয়ের ব্যাপারটি এড়িয়ে গেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে এ বছরের জুনে আলাপকালেও বিয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে আপনি তা অস্বীকার করেছিলেন এখন দেখা যাচ্ছে বিয়ের ব্যাপারটি সত্যি বিয়ের ব্যাপারটি এতদিন গোপন রাখলেন কেন?
আমি কখনোই কোনো কিছু বলিনি। বিয়ে নিয়ে শুধু এটুকুই বলেছিলাম, যখন হবে তখন বলব। এখন যেহেতু করেছি বললামই তো। বিয়ের পর আমি অস্ট্রেলিয়ার চলে আসি। মাঝখানে আবার দেশে গেলে বিয়ের ব্যাপারে সেইভাবে কথাও হয়নি। তবে প্রথম আলো অনলাইনের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তার আগেই বিয়ের কাজটি সারা হয়েছিল। কিন্তু আমি ভেবেছিলাম বড় করে যখন কোনো অনুষ্ঠান করব তখনই বিষয়টি জানাব। আসলে বিয়ে তো এমনিতেও করতে হবে ওমনিতেও করতে হবে, তাই কিছুটা চুপিসারে তা করে ফেললাম আর কি...
 আপনার পরিবারও আপনার বিয়ে নিয়ে কোনো কিছুই এতদিন বলেন নি এখন তাঁরাও সবাই এ ব্যাপারে কথা বলছেন বিয়েটা কি পারিবারিকভাবেই হয়েছিল নাকি নিজের পছন্দে?
আমরা দুজন একে অপরকে চিনতাম। আমাদের পাশাপাশি আমাদের পরিবারেরও পছন্দ ছিল। সবকিছু মিলে যাওয়াতে আর দেরি করা হয়নি।
বিয়ের পর কি কোথাও বেড়াতে গিয়েছিলেন...
আসলে সময় হয়নি। এখন তো গেলে সন্তানকে নিয়েই হানিমুনে যেতে হবে । হাহা হা ...
অনীক মাহমুদ  সঙ্গে আপনার পরিচয়টা কীভাবে হয়েছিল?
ওই যে, লিখেছেনই তো ...। ছবি করতে গিয়েই পরিচয়। এরপর আমরা দুজন কথাবার্তা বলতাম। নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। তারপর অনিকের বাবা-মার সঙ্গে আমার কয়েকবার দেখা-সাক্ষাত্ হয়। তারপর আসলে আমাদের সম্পর্কটা বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়।
অনীক সম্পর্কে কিছু তথ্য...
অনীকের মায়ের বাড়ি যশোরে। আর বাবার বাড়ি ঢাকার গাজীপুরে। আমি অত কিছু বলতে পারব না। শুধু বলব অনীক আমার অনেক ভালো একজন বন্ধু। স্বামী হিসেবে ওর মতোই বন্ধুকে প্রত্যাশা করেছিলাম। আমি অনেক খুশি।

আপনার স্বামী পেশায় কি করছেন?
অনীক ইউডা থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা শেষ করেছে। এখন সে ছবি করার চেষ্টা করছে।

 অনীক ছাড়াও আরও কয়েকজনকে জড়িয়ে আপনার বিয়ের গুজব রয়েছে ...
আমাকে নিয়ে এসব নতুন কিছু নয়। সব সময় সময়ই আমাকে নিয়ে অনেক গুজব রটেছে। এসব বিষয়কে আমি কোনোদিন পাত্তা দিইনি।

এখন আর নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করা হবে না হয়তো ...
আমি এটা বিশ্বাস করি না। তাহলে তো ঐশ্বরিয়া আর নায়িকা চরিত্রে কাজ করতে পারতেন না। আমি মনে করি আমার যদি অভিনয়ের সে যোগ্যতা থাকে তাহলে অবশ্যই অভিনয় চালিয়ে যেতে পারব। তাছাড়া চলচ্চিত্র নিয়ে আমার নিজের একটা চিন্তা-ভাবনাও রয়েছে। সামনে হয়তো তা নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবব। আগে ইচ্ছে ছিল ভবিষ্যতে চলচ্চিত্র পরিচালনা করব। সে ব্যাপারে কিছু প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। ইচ্ছে আছে এবার দেশের ফিরেই চলচ্চিত্র পরিচালনার বিষয়টি নিয়ে ভালোভাবে ভাবব।

শাবনূর
শাবনূর

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র তো আপনাকে অনেক কিছুই দিয়েছে চলচ্চিত্রের জন্য কিছু ভাবছেন কি?
আমি যখন কাজ শুরু করি তখনো ভাবিনি শাবনূর হব। মন দিয়ে কাজ করে গেছি। আর তাই আমি কখনো মনে করি না ভেবে-চিন্তে কিছু করা যায়। চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক কিছুই করার ইচ্ছে আছে। অনেক চিন্তা আছে। আমি চলচ্চিত্রে নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার স্বপ্ন দেখি।
আপনাকে নিয়ে অনেক গুজব ছড়ায়? গুজব কি খুব উপভোগ করেন
গুজবকে খুব উপভোগ করি। এহতেশাম দাদুর হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসার সময়ও আমাকে নিয়ে নানা ধরনের গুজব আমাকে নিয়ে হতো। এখনো চলছে। বলতে পারেন গুজব আমার পিছু ছাড়েনি। প্রথমদিকে এসব গুজব আমাকে বেশ ভাবাত। পরে আমি বিষয়গুলো নিয়ে এহতেশাম দাদুর সঙ্গে কথা বলতাম। তিনি আমাকে বলতেন তোমাকে নিয়ে সবাই ভাবে তাই গুজব উঠছে। আর যেদিন তোমার কোনো অবস্থান থাকবে না সেদিন তোমাকে নিয়ে কেউ কোনো গুজব ছড়াবে না।
গত ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশ আর অস্ট্রেলিয়া আসা-যাওয়াটা আপনার নিয়মিত হয়ে গেছে আপনি কি সেখানে থিতু হওয়ার কথা ভাবছেন?
আমার ভাই-বোনরা অস্ট্রেলিয়াতে পড়াশোনা করেছে। তারা এখন সেখানকার নাগরিক। পরিবারের সদস্যদের কারণেই আমাকে বছরের তিন মাস অস্ট্রেলিয়াতে থাকতে হয়। কয়েক বছর ধরেই  গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে আমি শুটিংয়ের কোনো শিডিউল রাখি না। ওই সময়টা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই থাকি। আর পরিচালক থেকে শুরু করে সবাই এটা জানেনও। পৃথিবীর অনেক দেশে ঘুরেছি। কিন্তু বাংলাদেশের মতো এত শান্তি আর কোথাও পাইনি। আমি এ দেশেরই নাগরিক। এই দেশ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। আজকে আমি যে শাবনূর হয়েছি তা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার কারণেই আর তাই অস্ট্রেলিয়ায় থিতু হওয়ার ব্যাপারে আমার নিজের কোনো ইচ্ছে নেই।