দেখতে পারেন মৃণাল সেনের এই ১০ সিনেমা
চলচ্চিত্রজীবনে কয়জন পারে সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে যেতে। পেরেছিলেন বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্ম নেওয়া চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন। এ যেন নিয়ম ভাঙার অবাধ স্বাধীনতা! ধরাবাঁধা কাঠামোর বাইরে তিনি সিনেমা বানিয়েছেন। উপমহাদেশে চিন্তাশীল চলচ্চিত্রের অন্যতম পথিকৃৎ প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতার আজ জন্মশতবার্ষিকী। প্রখ্যাত ‘কলকাতা ট্রিলজি’ ছাড়াও মৃণাল সেনের আরও বেশ কয়েকটি প্রশংসিত সিনেমা আছে। জন্মদিনে অল্প কথায় জেনে নিন মৃণাল সেনের সেই সিনেমাগুলো সম্পর্কে–
‘আকাশ কুসুম’
নিজেকে ‘ধনী’ দেখাতে বন্ধুর কাছ থেকে গাড়ি ধার করে এক তরুণ, প্রেমে পড়ে এক ধনীর দুলালির। এরপর মিথ্যা বলার কড়া মূল্য চুকাতে হয়। ছবিটি দিয়ে সমাজের শ্রেণিবৈষম্য তুলে ধরেছেন পরিচালক। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন অভিনীত ছবিটির পরে হিন্দি রিমেকও হয় মঞ্জিল নামে।
‘বাইশে শ্রাবণ’
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মৃণাল সেন হয়ে উঠতে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল এই সিনেমা। যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত ছবিতে অভিনয় করেন মাধবী মুখ্যাপাধ্যায়।
‘ভুবন সোম’
উৎপল দত্ত অভিনীত সিনেমাটিকে আধুনিক ভারতীয় সিনেমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে মনে করা হয়। এই ছবি দিয়ে সিনেমার দুনিয়ায় যাত্রা শুরু করেন অমিতাভ বচ্চন। ছবিটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন তিনি।
‘ইন্টারভিউ’
‘কলকাতা’ ট্রিলজির প্রথমটিতে অভিনয় করেন রঞ্জিত মল্লিক। কলকাতার সে সময়ের উত্তাল দিনগুলোর ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে ছবিতে। ছবিতে সাধারণ মানুষের জীবনের চিত্র তুলে ধরেন পরিচালক, তাই ছবির অভিনেতা যখন দর্শকের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন, তখন সেটা দর্শককে আরও স্পর্শ করে। এখানে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের ঔপনেবেশিক ধারণা পুষে রাখার মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি।
‘কলকাতা ৭১’
কলকাতার আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, খাদ্যসংকট, সত্তরের নকশাল আন্দোলন উঠে এসেছে ছবিতে। এটি চারটি আলাদা গল্পের সমষ্টি। সমরেশ বসু, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবোধ সান্যাল ও মৃণাল সেনের গল্প অবলম্বনে ছবিটিতে অভিনয় করেছেন মাধবী মুখোপাধ্যায়।
‘পদাতিক’
কলকাতা ত্রয়ীর শেষটিতেও সেই সময়ের কলকাতার আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন পরিচালক। এক রাজনৈতিক কর্মীকে নিয়ে লেখা গল্পে প্রধান চরিত্র করেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়।
‘মৃগয়া’
ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে সম্পর্ক, ভারতীয় ভূস্বামীদের শোষণচিত্র দেখিয়েছেন পরিচালক। ছবিতে অভিনয় করে সেরা অভিনেতা হিসেবে ভারতের জাতীয় পুরস্কার পান মিঠুন চক্রবর্তী।
‘এক দিন প্রতিদিন’
এক মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্মজীবী নারীকে নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার। কিন্তু এই উদ্বেগ নারীকে নিয়ে নাকি পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারানোর শঙ্কা থেকে—সমাজের প্রতি সে প্রশ্ন ছুড়ে দেন পরিচালক। ছবিত অভিনয় করেছেন মমতা শঙ্কর।
‘খণ্ডহর’
হিন্দি ছবিটি তৈরি হয়েছে প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছোটগল্প অবলম্বনে। শাবানা আজমি, নাসিরউদ্দিন শাহ অভিনীত ছবিটি প্রদর্শিত হয় কান চলচ্চিত্র উৎসবের আঁ সার্ত্রে রিগা বিভাগে।
‘আকালের সন্ধানে’
সিনেমার শুটিংয়ে একটি দল গ্রামে আসে। সিনেমার বিষয় তেতাল্লিশের মন্বন্তর। ছবির মাধ্যমে সেই সময়ের মানুষের চরম অবস্থাকে তুলে ধরতে চান পরিচালক। কিন্তু তেতাল্লিশের সঙ্গে ১৯৮০ সালের যোগ ঘটিয়ে ছবিটিতে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছেন মৃণাল সেন। অমলেন্দু চক্রবর্তীর গল্প অবলম্বনে ছবিতে অভিনয় করেছেন ধৃতিমান চ্যাটার্জি, স্মিতা পাতিল।