ম্যারাডোনার কারণেই রাত জেগে খেলা দেখা শিখেছি : জাহিদ হাসান
‘আমার যখন বেড়ে ওঠা, তখন থেকেই ম্যারাডোনার খেলার সঙ্গে আমার পরিচয়। সেই মানুষটা হঠাৎ করে চলে গেলেন। ফুটবলের এক কিংবদন্তিকে আমরা হারালাম’, বললেন অভিনেতা জাহিদ হাসান। গত রাতে বাসায় ছিলেন তিনি। হঠাৎ পাশের ঘর থেকে তার ছেলে পূর্ণ হাসান এসে জানায়, ম্যারাডোনা মারা গেছেন। শুনে স্তব্ধ হয়ে যান এই তারকা। জানালেন, ম্যারাডোনার হঠাৎ চলে যাওয়ায় ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন তিনি।
প্রিয় এই খেলোয়াড়ের খেলা দেখার স্মৃতি অনেক। স্মৃতিচারণা করে জাহিদ হাসান জানালেন, ’৯০, ’৯৪–এর বিশ্বকাপ তিনি রাত জেগে দেখেছেন। তখন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। প্রায়ই খেলার ভেতর বিদ্যুৎ চলে যেত। তখন বন্ধুরা মিলে ব্যাটারি এনে খেলা দেখতেন। প্রথম তিনি ম্যারাডোনার খেলা দেখেন সিরাজগঞ্জে। এরপরে ঢাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে। জাহিদ হাসান বলেন, ‘ম্যারাডোনার খেলা দেখার সময় স্কুলের স্কাউটের ব্যান্ড নিয়ে রাতে বাজাতাম। আমরা হইহুল্লোড় করে খেলা দেখতাম। ম্যারাডোনার কারণেই রাত জেগে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখা শিখেছি।’
দুবার আর্জেন্টিনার খেলা দেখতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন জাহিদ হাসান। কিন্তু কোনোবারই যাওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ এলেই প্রতিবারই পরিকল্পনা করে রাখতাম, খেলা দেখতে যাব। দুবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম খেলা দেখতে যাবই। কিন্তু প্রথমবার আমার মা অসুস্থ হয়ে চলে গেলেন। পরেরবার টিকিট কাটার পরও কিছু কারণে আর যাওয়া হয়নি। ম্যারাডোনাকে দেখার খুব ইচ্ছে ছিল।’
আর্জেন্টিনার খেলা দেখা নিয়ে সব সময়ই আলাদা আগ্রহ থাকত। শুটিং থাকলেও খেলা দেখা কখনো বাদ দেননি এই তারকা। ফুটবল খেলার ভক্ত হয়েছেন সে–ও ম্যারাডোনার জন্যই। তিনি বলেন, ‘ম্যারাডোনার কারণেই আমরা জেনেছিলাম আর্জেন্টিনা নামের একটি দেশ আছে।’
জাহিদ হাসান মনে করেন, ম্যারাডোনা তাঁর দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘বুধবার রাতে প্রথম যখন আমার ছেলের কাছে শুনলাম, ম্যারাডোনা বেঁচে নাই, খুবই কষ্ট পেয়েছি। তাঁর সেই জাদুকরী গোল এখনো আমার চোখে ভাসে। একবার আর্জেন্টিনার সঙ্গে কোনো এক দেশের যুদ্ধ বাধে। সেই যুদ্ধেও আমরা আর্জেন্টিনার পক্ষে ছিলাম।’
গত রাতে ৬০ বছর বয়সে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা। এই মহানায়কের বিদায়ে শোকে কাতর পুরো বিশ্ব। ম্যারাডোনার কথা লিখতে গেলে সবার আগে আসবে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়। সেবার প্রায় একক কৃতিত্বে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন তিনি।