মেয়েদের পেছনে ছেলেরা আগের মতো ঘোরে না
‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ ধারাবাহিকে ঝুমুর চরিত্র দিয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন অভিনেত্রী সারিকা সাবাহ। বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু হলেও বর্তমান নাটক এবং ওয়েবভিত্তিক নানা কাজ নিয়ে ব্যস্ত তিনি। সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছে তাঁর। ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত নানা প্রসঙ্গে কথা বললেন এই অভিনেত্রী।
প্রশ্ন :
(ফোনে) গাড়ির শব্দ শোনা যাচ্ছে। আপনি শুটিংয়ে, নাকি বাইরে?
না আজ শুটিং নেই। একটু বাইরে যাচ্ছি। একটা লাইভে অংশ নেব।
প্রশ্ন :
শুটিং না থাকলে দিন কীভাবে কাটান?
শুটিং না থাকলে রেস্ট নিই। বন্ধুরা বাসায় আসে, তাদের সঙ্গে আড্ডা দিই। কখনো সবাই মিলে নাটকের কস্টিউম কিনতে যাই। বই পড়ি, মাকে সাহায্য করি।
প্রশ্ন :
মাকে কী কাজে সাহায্য করেন?
রান্নার কাজে। আমার নিজেরও রান্নার শখ আছে। শুটিং না থাকলে মায়ের সঙ্গে রান্নায় বসে যাই। মা সবই প্রস্তুত করে রাখেন। আমি আমার পছন্দের ডিশ তৈরি করি। আমার তৈরি বাটার চিকেন বাসার সবাই খুব পছন্দ করে। এটাকে সবাই আমার বিশেষ রেসিপি হিসেবে কাউন্ট করে।
প্রশ্ন :
বর্তমান ব্যস্ততা কী নিয়ে? অভিনয় নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
এখন নাটক এবং ওয়েব সিরিজের শুটিং নিয়েই ব্যস্ত। নিয়মিত কাজ করে যেতে চাই। অভিনয় নিয়ে তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই। সব সময় চেষ্টা করি নিজের সেরা কাজটা দিয়ে দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেতে। কারণ, দর্শক চাইলে আমাকে নামিয়ে দিতে পারে। তেমনি ভালো কাজ করলে দর্শকই আমার প্রশংসা করবে।
প্রশ্ন :
চেয়েছিলেন প্রকৌশলী হতে। অভিনয়ে কীভাবে এলেন?
অভিনয়জগতে আসার একদমই ইচ্ছে ছিল না। টিভিপর্দায় বিজ্ঞাপন দেখে অভিনয় করতে ইচ্ছে করত। পরে পরিচিত একজনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপনে কাজ শুরু করি। সেখান থেকে ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকে ডাক পাই। ফ্যামিলি ক্রাইসিস আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট।
প্রশ্ন :
ঘরের বাইরে বেরোলে মানুষের ভেতর কেমন প্রতিক্রিয়া লক্ষ করেন?
দর্শকদের কাছে আমি ঝুমুর নামে পরিচিত। সেই চরিত্রে আমি কিছুটা খুঁড়িয়ে হাঁটি। বাইরে বেরোলে সবাই জিজ্ঞেস করে, আমি আসলেই খোঁড়া কি না। অনেকে আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। একবার অভিনেতা তামিম মৃধা ভাইয়ের বাসায় দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম। তামিম ভাইয়ের মা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আমি কি সত্যিই খোঁড়া? ঝুমুর চরিত্রে অভিনয় করে আমাকে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
প্রশ্ন :
এসব প্রশ্ন শুনে কখনো মন খারাপ বা রাগ হয় না?
না। এটা তো একরকম গিফট।
প্রশ্ন :
তাহলে মন খারাপ হয় কখন? রাগই–বা কখন হন?
বাসায় কেউ অসুস্থ হলে, বন্ধুদের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হলে খুব মন খারাপ হয়। রাগ হয়, তবে শুটিং সেটে কখনো রাগি না। রাগলেও সেটা কনট্রোলে রাখতে চেষ্টা করি। শুটিং ইউনিটে কোনো কারণে রাগলে সেই ইউনিটে আবার কাজ করার আগে দুইবার চিন্তা করি।
প্রশ্ন :
বস্তুগত গিফট সবচেয়ে বেশি পান কার কাছ থেকে?
আমি বাবা–মায়ের একমাত্র মেয়ে, তাঁদের কাছ থেকেই বেশি গিফট পাই।
প্রশ্ন :
ক্যারিয়ারের ভুল সিদ্ধান্ত কোনটি?
বেশ কিছু নাটকে খামোখা অভিনয় করেছি। নাটকগুলো এখন দেখলে মনে হয়, সেগুলো না করলেও পারতাম। তা ছাড়া বড় ধরনের কোনো ভুল আমি করিনি।
প্রশ্ন :
প্রেম করছেন নিশ্চয়ই?
প্রেম তো আমি অবশ্যই করি, সেটা নাটকে। বাস্তবে আমি প্রেম করি না।
প্রশ্ন :
বিয়ে এবং সংসার?
আপাতত বিয়ের জন্য কাউকে পছন্দ করা নেই। এটা আমার পরিবার দেখবে। বিয়ে নিয়ে আমি ভাবছি না।
প্রশ্ন :
‘ভালোবাসি বল না’ নাটকে দেখলাম আপনার সহশিল্পী শামীম হাসান সরকার আপনার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য পাগলের মতো ঘোরে, বাস্তবে কি এমন কেউ আপনার জন্য ঘুরেছে?
বাস্তব জীবনে ছেলেরা এখন অনেক স্মার্ট। মেয়েদের পেছনে ছেলেরা আগের মতো ঘোরে না। আমার জন্য এত পাগলামি কেউ করেনি। কেউ পাগলামি করলে সেটা তো স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রশ্ন :
বড় পর্দায় কাজ করলে কাকে নায়ক হিসেবে দেখতে চান?
আমার ইচ্ছা গল্পভিত্তিক কাজ করা। এ ধরনের কাজে যে কেউ নায়ক হতে পারে। এমনও হতে পারে, আমার নায়ক নাই। চরিত্রকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে চাই। তা ছাড়া প্রথমেই কমার্শিয়াল ছবি করার ইচ্ছে নাই। বিকল্প ধারার ছবিগুলো আমাকে বেশি টানে।
প্রশ্ন :
বলিউডে অভিনয় করলে কোন অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে চাইবেন?
অবশ্যই আমির খান। আমির খান আমার অনেক পছন্দের।