‘প্রাপ্তবয়স্ক’দের কনটেন্ট মনে হয়েছে বলে কাজ করেননি অ্যালেন
একটি নাটকের দুটি দৃশ্যের শুটিং শেষ করেছিলেন অ্যালেন শুভ্র। তারপর শুটিং সেট থেকে লাপাত্তা এই অভিনেতা। তাঁর জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে পরে বাতিল করা হয় সেদিনের শুটিং। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পরিচালক আহমেদ আজিম। ক্ষতিপূরণ চেয়ে ছোট পর্দার সংগঠনগুলোর কাছে অ্যালেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তিনি।
‘দাদার বিয়ে’ নাটকের জন্য শুটিং সেট তৈরি করা হয় বিয়েবাড়ির আদলে। কনেসহ সবাই অপেক্ষায় ছিলেন। গল্পের প্রধান চরিত্র অ্যালেন শুভ্র এলেই শুটিং শুরু হবে। প্রস্তুত লাইট-ক্যামেরাসহ কলাকুশলীরা। অথচ আগের দুটি দৃশ্যের শুটিংয়ের পর শুটিং স্পটের কাউকে কিছু না জানিয়ে স্পট ত্যাগ করেন অ্যালেন শুভ্র। ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আসবেন আসবেন বলেও আর আসেননি তিনি। রাত পর্যন্ত অপেক্ষার পর সেদিনের শুটিং বাতিল করা হয়। পরিচালক আজিম বলেন, ‘১৫ দিন আগে অ্যালেন শুভ্রর পারিশ্রমিক অগ্রিম পরিশোধ করেছি, স্ক্রিপ্ট পাঠিয়েছি।
তিনি শুটিং সেটে এসে হঠাৎ করেই বলেন, ইউটিউবের শিল্পীদের সঙ্গে তিনি কাজ করবেন না। আমি বলি, আবদুল্লাহ রানা ভাই, রিক্তা নিয়মিত টিভির জন্য অভিনয় করেন। তাঁরা কাজ করতে পারলে আপনার সমস্যা কী? অ্যালেন তখন দুটি মেয়েকে উল্লেখ করে বলেন, তাদের সঙ্গে অভিনয় করবেন না। ’
পরিচালক বলেন, ‘আমাদের নাটকের বাজেট কম। এ জন্য নাটকের দুটো দৃশ্যের জন্য নতুন দুজনকে কাস্ট করেছিলাম। তাঁর কথামতো বললাম, ঠিক আছে, তাদের বাদ দিয়ে দেব। তাতে তিনি কাজ করতে রাজি হলেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করে তিনি কোথায় যেন যাবেন বলে বের হলেন। অনেকক্ষণ পর ফোন করলে বললেন আসবেন। রাত নয়টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। বারবার ফোন করার তিনি জানান, ফালতু আর্টিস্টদের সঙ্গে কাজ করবেন না। পরে আমাকে বাধ্য হয়ে শুটিং বন্ধ করতে হয়।’
সহশিল্পী পছন্দ না হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন অ্যালেন শুভ্র। সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, সেটে যাওয়ার পরে তিনি জানতে পারেন একদিনে শুটিং শেষ করতে হবে। তারপরেও তাঁর কাজ করতে কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু ওই শিল্পীরা ইউটিউবে যেসব কাজ করেছেন, সেগুলোকে ‘প্রাপ্তবয়স্ক’দের কনটেন্ট মনে হয়েছে তাঁর।
অ্যালেন বলেন, ‘আমি এই ধরনের কোনো শিল্পীর সঙ্গে কখনো কাজ করিনি। মেয়েগুলো একটু অন্য রকম কাজ করে ইউটিউবে। আমি নির্মাতাকে বলেছিলাম, আপনি যদি তাদের বাদ দিয়ে চিত্রনাট্য তৈরি করতে পারেন, তাহলেই আমি কাজ করব। কারণ, এখন অনেকেই অশ্লীলতা নিয়ে কথা বলছেন। অনেক নাটক প্রচারের পর সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। আমি সে রকম কোনো ঝুঁকি নিতে চাইনি। তখন নির্মাতা মেনে নেন। আমার সামনেই পরদিনের শুটিং বাতিল করেন। চিত্রনাট্য ঠিকঠাক করলে আমি কাজ করব। তাঁর সঙ্গে আমি আগেও কাজ করেছি। আমাদের সম্পর্ক ভালো। এখানে কোনো অভিযোগের কিছু নেই।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম বলেন, ‘অ্যালেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা আমাদের অভিনয়শিল্পী সংঘের কাছে এসেছে। নির্মাতা লিখিত অভিযোগ দিলেই আমরা দুই পক্ষকে ডাকব। তাদের কথা শুনে ঘটনার তদন্ত করা হবে। তারপর সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা হবে।’