নাবিলার আঞ্চলিক ভাষার গুরু মোশাররফ করিম
ক্যারিয়ারের শুরুতে আঞ্চলিক ভাষা বলতে পারতেন না অভিনেত্রী নাবিলা ইসলাম। এমনকি নিজের জেলা চট্টগ্রামের মেয়ে হলেও চাটগাঁয়ের আঞ্চলিক ভাষা মোটেই পারতেন না তিনি। ছয় বছর আগে প্রথম দেশের বাইরে একটি শুটিং করতে যান নাবিলা। সেই নাটকে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে হবে। কোনো ভাবেই ঠিকমতো আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পারছিলেন না। তখন তাঁকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন মোশাররফ করিম আর জুঁই করিম। সেই থেকেই নাবিলার আঞ্চলিক ভাষার গুরু মোশাররফ করিম।
নাবিলা ইসলাম বলেন, ‘প্রথম নাটকের গল্পটাই ছিল এমন যে আমরা বাংলাদেশের ভিন্ন দুটি অঞ্চলের মানুষ দেশের বাইরে থাকি। তাঁদের হঠাৎ দেখা হয়েছে দেশের বাইরে। তখন আমাদের নিজ নিজ জেলার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে হবে। প্রথমে বলতে পারছিলাম না। পরে মোশাররফ করিম এবং জুঁই ভাবির সহযোগিতায় প্রথম আঞ্চলিক ভাষা ঠিকমতো বলার চেষ্টা করি। এখন আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে আমার কোনো সমস্যা হয় না।’ নাবিলা এখন পুরোদস্তুর বাংলাদেশের পাবনা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও ঢাকাইয়া ভাষায় কথা বলতে পারেন। তবে পাবনার আঞ্চলিক ভাষায় তাঁকে সবচেয়ে বেশি নাটক করতে হয়। এ জন্য চট্টগ্রামের মেয়ে হয়েও পাবনার ভাষা তাঁর নখদর্পণে। আঞ্চলিক ভাষাকে কখনো ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা শিখে নিজেকে বেশি গর্বিত ভাবেন এই তারকা। নাবিলা বলেন, ‘বাংলা ভাষার জন্য আমাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন করে আমরা বাংলা ভাষাকে পেয়েছি। সেই ভাষায় প্রাণ খুলে কথা বলাটাই আনন্দের।’
আঞ্চলিক ভাষা শিখতে টিভিতে যেমন নাটক দেখতে হয়েছে, তেমনি সহযোগিতা পেয়েছেন পাবনার জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ও শাহনাজ খুশির কাছ থেকে। নাবিলা বৃন্দাবন দাসের আঞ্চলিক ভাষার লেখা নাটকে অভিনয় করে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পান। নাবিলা বলেন, ‘আমি সবচেয়ে ভালো বলতে পারি পাবনার আঞ্চলিক ভাষা। স্ক্রিপ্ট পড়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেই আঞ্চলিক ভাষা সক্রিয়ভাবে মাথায় চলে আসে। অনেক সময় এমন হয় যে শুটিংয়ের বাইরেও চরিত্রে থাকার জন্য আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলি।’ নাবিলা গাঁয়ের মেয়ে হিসেবে দর্শকের কাছে বেশ পরিচিতি পেলেও তাঁর অভিনীত সবচেয়ে বেশি নাটক শহরকেন্দ্রিক। এখন তিনি পাঁচটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করছেন। তাঁর মধ্যে একটি পাবনা অঞ্চলের ভাষায় শুটিং হচ্ছে, একটি ঢাকাইয়া ভাষায় আর অন্য তিনটিতে তিনি শহরের মেয়ে। গ্রামের মেয়ে সাজতে নাটকের জন্য নাবিলাকে আলাদা করে কস্টিউম বানাতে হয়। সেগুলো শুধু নাটকের জন্য ব্যবহার করেন। নাবিলা অভিনীত ৫টি নাটক ভালোবাসা দিবসে প্রচার হয়। এখন ধারাবাহিক নাটক নিয়েই বেশি ব্যস্ত নাবিলা ইসলাম।