নাটকে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য নয়
করোনা–সচেতনতায় গত মার্চের ২২ তারিখ থেকে ছোট পর্দাসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো সিদ্ধান্ত নেয় শুটিং বন্ধ রাখার। ৫৪ দিন শুটিং স্থগিত থাকার পর গতকাল ১৫ মে আন্তসংগঠনগুলো সিদ্ধান্ত নেয়, করোনায় নিয়ম মেনে শুটিং চালু করার। ১৭ মে থেকে শুটিংয়ে কোনো বাধা–নিষেধ থাকছে না। তবে নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, অভিনয়শিল্পীসহ অন্য কলাকুশলীদের বিশেষ নির্দেশনা মানতে হবে।
ডিরেক্টরস গিল্ডের একটি নোটিশে দেখা যায়, প্রযোজক ও পরিচালকদের জন্য শর্ত জুড়ে দিয়ে করোনার এই সময়ে শুটিং করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়, পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রযোজক ও পরিচালকেরা চিত্রনাট্যকারদের গল্পে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য না লেখা, সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে এমনভাবে গল্প লিখতে উদ্বুদ্ধ করবেন। এ ছাড়া আরও বলা হয়, ‘গল্পে আপাতত কোনো আউটডোর দৃশ্য রাখা যাবে না। সম্পূর্ণ শুটিংঘরের মধ্যে করতে হবে। অভিনয়ের সময় চরিত্রগুলো একে অন্যের থেকে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া নির্মাতা ও প্রযোজকদের পাণ্ডুলিপি দেখে নিতে বলা হয়েছে। সেখানে যেন একটি দৃশ্যে দুই থেকে তিনজনের বেশি অভিনয়শিল্পী কোনোভাবেই উপস্থিত না থাকে।
শুটিংয়ের প্রি–প্রোডাকশন টিম, অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলী নির্বাচনের আগে অবশ্যই তাঁদের স্বাস্থ্যবিধি, এমনকি তাঁদের মধ্যে করোনার উপসর্গ আছে কি না, আগেই খোঁজ নিতে হবে। যাঁরা শুটিংয়ে অংশ নেবেন, তাঁরা সর্বশেষ ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিন মেনেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়। নির্দেশনায় আরও বলা হয়, কারও অনেক আগে থেকে কোনো অসুখ থাকলে ডাক্তারের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁকে কাজে নেওয়া যেতে পারে। তবে ৬০ বছরের বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে অবশ্যই আলাদা সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ডিরেক্টরস গিল্ডের এই আন্তসাংগঠনিক নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, সম্ভব হলে প্রি–প্রোডাকশন টিম, অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলী শুটিং শুরুর ১৪ দিন পূর্বে থেকে হোম কোয়ারেন্টিনে রেখে নির্ধারিত বিরতিসহ একটানা শুটিং করা যেতে পারে।
শুটিং শুরুর আগে তারকা এবং অন্যান্যদের রয়েছে নির্দেশনা। এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘বিদেশের মতো আমাদের শিল্পী–কলাকুশলীদের সম্ভব হলে পিপিই পরিধান করে নিরাপদে শুটিং করলে ভালো। তবে শুটিং শুরুর পূর্বে অবশ্যই সবার তাপমাত্রা ডিজিটাল থার্মোমিটারে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মেপে খাতায় লিপিবদ্ধ করতে হবে। সবাইকে হাত ধুয়ে সেটে প্রবেশ করত হবে। শুটিংবাড়িগুলোতে অবশ্যই ব্লিচিং পাউডারে ভেজা প্রপস ভিজিয়ে রাখতে হবে। প্রবেশের সময় সম্ভব হলে তারকাসহ সবাইকে ৭০ ভাগ অ্যালকোহলমিশ্রিত পানি দিয়ে পুরো শরীর স্প্রে করে নিতে হবে।
শুটিং হাউসে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে গায়ের পোশাক পরিবর্তন করতে হবে। মেকআপ রুম ও শুটিং ফ্লোরে সার্বক্ষণিক জীবাণুনাশক স্প্রের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় সচেতনতায় মশা নিধনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। এ ছাড়া শুটিংয়ে করোনা–সচেতনতায় প্রোডাকশন ম্যানেজার, শুটিং হাউসের লোকদের মাস্ক এবং শিল্ড, হাতে গ্লাভস পরিধান, শুটিং ব্যবহৃত প্রপসহ অন্যান্য বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতার কথা বলা হয়েছে।