দুটি কন্যাই আমার ৬০ বছরের সেরা অর্জন
অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম ৬০ বছরে পা রাখলেন। দিনটি পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছেন তিনি। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে রাতেই তাঁর বাসায় গিয়ে হাজির হন অভিনেত্রী আফসানা মিমি। বিশেষ দিনটি এবং অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বললেন এই অভিনেতা।
শুভ জন্মদিন।
ধন্যবাদ।
দিনটি কীভাবে কাটছে?
গতকাল রাতে স্ত্রী এবং বড় কন্যার সঙ্গে কেটেছে। এর মধ্যেই হঠাৎ করে আফসানা মিমি এসে সারপ্রাইজ দিলেন। তিনি আমাদের দীর্ঘদিনের সহকর্মী। প্রথম প্রহরেই আমরা কেক কেটেছি। আজ সকাল থেকে অনেকেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। আমার পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীরা এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে সময় কাটল। অনেক উপহার পেয়েছি। ভালো সময় কাটছে।
৬০ বছরে পা রাখলেন। এই সময়ে আপনার সেরা অর্জন কী বলে মনে করেন?
আমার দুইটা কন্যাসন্তান আছে। আমি মনে করি, মেয়েদের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছি। আমার দুই কন্যাই আমার ৬০ বছরের সেরা অর্জন।
অভিনয় নিয়ে আপনার কোনো আফসোস আছে?
একজন অভিনেতার চাহিদার কোনো শেষ নেই। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তার আক্ষেপ থাকবে। আমারও একটা আক্ষেপ এখনো আছে। কিন্তু সেটা কী, জানি না। তবে আমি আরও ভালো কাজ করে যেতে চাই।
জন্মদিনে কার শুভেচ্ছা আপনাকে সবচেয়ে বেশি আপ্লুত করেছে?
পরিবার থেকে শুরু করে সবার শুভেচ্ছাই আমাকে আপ্লুত করেছে। আমার এখন দুটি পরিবার। আমি অভিনয়শিল্পী সংঘের অভিভাবক হওয়ার পর সংগঠনটি আমার কাছে আরেকটি পরিবার। এই পরিবার, আমার সহকর্মী, গুরুজনেরা যখন আমাকে শুভেচ্ছা জানায়, সেগুলো আমার মধ্যে আবেগের জন্ম দেয়।
ভক্ত, পরিবার ও সংগঠনকে আর কী কী দিতে চান?
আমি একজন আদর্শবান ব্যক্তি। আদর্শে বিশ্বাসে করি। কথায় না, আমি কাজে বিশ্বাসী। আমার পরিবার, থিয়েটার ও আমার এলাকায় কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। সেটা আমার পরিচিতজনেরা জানেন। আমার চাওয়া, সবাই সৎ থেকে কর্ম করুক।
চার দশকের ক্যারিয়ারে শুটিং সেটে আপনাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি শোনা কথাটি কী? সেটা শুনে কী মনে হয়েছে?
(হাসি) আমি খুব বদরাগী। এটাই বেশি শুনেছি, এটা সত্য। কিছু মানুষের কাছে বদরাগী হওয়ার প্রয়োজন আছে।
শুটিং সেটে আপনার স্ত্রীর কাছে কী শুনেছেন?
তিনিও (অভিনেত্রী রোজী সিদ্দিকী) একই কথা বলে, আমি বদরাগী। তার কথাকে আমি মূল্যায়ন করি। সে শুটিংয়ে গেলে আমার স্ত্রী থাকে না, রোজী সিদ্দিকীর পরিচয় তখন আমার কাছে শুধুই একজন সহশিল্পী।
বিশেষ এই দিনটিতে আপনার কিছু বলার আছে?
৬০ বছর বেঁচে থাকা এবং ৪০ বছরের ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক কিছু বলার আছে। এই ক্যারিয়ার গড়তে অনেক সময় লেগেছে। জীবনে অনেক কিছু শিখেছি। কিন্তু গত এক বছর করোনা নিয়ে ভয়ংকর সব অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। চারদিকে পরিজন হারানোর শোকে এই বছর জন্মদিনের আনন্দটা মাটি হয়ে গেছে। সেই আগের আনন্দ আর নেই।
জন্মদিন নিয়ে বিশেষ ঘটনা আছে?
আমি পরিবারের বড় ছেলে। সব সময় দেখে এসেছি, বাবা–মা জন্মদিনটা উৎসবের মতো পালন করতেন। শৈশবে জন্মদিনে পরিবারে সবাই মিলে সিনেমা দেখতে যেতাম। একবার বাবা পরিবারের সবার জন্য সিনেমার অগ্রিম টিকিট কিনে এনেছিলেন। জন্মদিনে হঠাৎ আমার প্রচণ্ড জ্বর এল। সেদিন আব্বা খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। বাবার সেই কষ্টের মুখটা এখনো আমার মনে আছে। তা ছাড়া ছোটবেলায় হকি খেলতাম। সে সময় উপহার পাওয়া একটি হকিস্টিক এখনো আমার প্রিয় উপহারগুলোর একটি।