ছেলের মা হলেন জান্নাতুল পিয়া
মডেল, উপস্থাপক, অভিনেত্রী, আইনজীবী ও ব্যবসায়ী—সব ছাপিয়ে নতুন একটি পরিচয় যুক্ত হল জান্নাতুল পিয়ার নামের সঙ্গে। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে আজ বেলা ৩টা ৪৭ মিনিটে মা হয়েছেন তিনি। খবরটি নিশ্চিত করেছেন পিয়ার স্বামী ফারুক হাসান সামীর।
প্রথম আলোকে বাবা হওয়ার অনুভূতি জানিয়ে ফারুক বলেন, ‘আসলেই খুবই ইমোশনাল মুহূর্ত। যখন বাচ্চাটাকে আমার কোলে দিল, ও তো আমাকে দেখেই একটা চিৎকার দিল (কান্না করল)। আমি ওর হার্টবিট ফিল করলাম। ও খুবই অ্যাক্টিভ। এই কাঁদছে, হাত পা ছুড়ছে। খুব মিষ্টি দেখতে হয়েছে। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। কী যে ভালো লাগছে আর ভয় ভয় লাগছে। আমরা ওর নাম ঠিক করেছি অ্যারিস হাসান। আমি শিওর, অ্যারিস পিয়ার মতোই দুষ্টু হয়েছে।’
সদ্য বাবা হওয়া ফারুক আরও জানান, পিয়ার মা হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ছিল ২২ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই আজ সিজারের মাধ্যমে জন্ম নিল এই দম্পতির প্রথম সন্তান। তবে এই মুহূর্তে তাঁরা সন্তানের ছবি প্রকাশ করতে চান না। মা আর বাচ্চা সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন এই বাবা।
আপাতত পিয়ার সঙ্গে কথা বলা যাবে না বলেও জানান তিনি। গর্ভবতী অবস্থায়ও সমানতালে কাজ করেছেন পিয়া। অংশ নিয়েছেন বেশ কিছু ফটোশুটে। সেসব ছবি ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে অনলাইনের দুনিয়ায়।
নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ‘মিস বাংলাদেশ ২০০৭’ হয়েছিলেন পিয়া। সেই হলো শুরু। কলেজে পড়ার সময়ই বড় বড় সব ফ্যাশন হাউস ও ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর। শেষ পর্যন্ত হয়েছেনও। ঢাকার লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন। ২০১৩ সালে ইন্ডানিয়ানা প্রিন্সেস মুম্বাইতে সেরা সুন্দরীর মুকুট ওঠে তাঁর মাথায়। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বখ্যাত ‘ভোগ’ সাময়িকীর (ভারত সংস্করণ) প্রচ্ছদের মডেল হয়েছেন তিনি।
২০১৭ ও ২০১৮ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) উপস্থাপনা করেন পিয়া। এই কাজের ধারায় আইসিসি ২০১৯ ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপেও উপস্থাপনা করতে দেখা গেছে লন্ডনের মাঠে। ২০১২ সালে রেদোয়ান রনির ‘চোরাবালি’ সিনেমার মধ্য দিয়ে বড় পর্দার খাতা খোলেন তিনি। এরপর তাঁকে বেশ কিছু সিনেমা, নাটক ও সংগীতচিত্রে দেখা গেছে। ২০১৪ সালে ফারুক হাসান সামীরকে বিয়ে করেন জান্নাতুল পিয়া।
ক্যারিয়ারের এই সময়ে মা হওয়াকে কীভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে এর আগে পিয়া বলেছিলেন, ‘২৩ বছর বয়সে যখন আমি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ভালো সময়ে, তখনই আমি বিয়ে করলাম। কিছু নারী পরিবার, সংসার, সন্তানকেই প্রাধান্য দেন। আবার কেউ কেউ ক্যারিয়ারকেন্দ্রিক। পরিবার আসে পেশার পরে। আর আমি চেয়েছি, পরিবার, সন্তান নিয়ে ক্যারিয়ার করতে। আমি দুটোকে চমৎকারভাবে আলাদা রেখে ভারসাম্য করতে জানি। আর একজন ঠিকঠাক জীবনসঙ্গী চলার পথকে সহজ করে। তবে একজন নারী নিজের জীবনে কখন কী করবেন, এটা একান্তই তাঁর সিদ্ধান্ত। বিয়ে, সন্তান এগুলোর নারীর ব্যক্তিজীবন। আমি ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে পেশাজীবন মেলাই না।’