ঘুমের মধ্যেও চিৎকার দিয়ে উঠতাম

পুবাইলে ঈদের নাটকের শুটিংয়ে যাওয়ার পথে মারাত্মক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অভিনয়শিল্পী শাহনাজ খুশির গাড়ি
ছবি:  সংগৃহীত

গত জুলাই মাসে গাজীপুরের পুবাইলে ঈদের নাটকের শুটিংয়ে যাওয়ার পথে মারাত্মক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ছোট পর্দার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। সেদিন অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। কিন্তু এরপর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এই অভিনেত্রী। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা কাটিয়ে কিছুটা সুস্থ হলেও বাইরে বের হতে এখনো ভয় পান খুশি।

করোনায় দীর্ঘ চার মাস পর ঘরে থাকার পরে বের হয়েছিলেন ছোট পর্দার এই অভিনেত্রী। উদ্দেশ্য ছিল ঈদের নাটকের শুটিং করা। ইচ্ছা ছিল অনেক দিন পরে একটু মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নেওয়া। সেই ইচ্ছাই দুঃসংবাদ হয়ে এল শুটিংয়ে যাওয়ার পথে। মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনার মুখোমুখি হন তিনি। দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যায় তাঁর গাড়ি। অল্পের জন্য রক্ষা পান এ অভিনেত্রী।

‘রাস্তায় বের হলেই মনে হতো গাড়িগুলো আমার গায়ের ওপর উঠবে। হর্ন শুনলেই চিৎকার দিয়ে উঠতাম। কোনো গাড়ির শব্দ শুনলে অসুস্থ হয়ে যেতাম।’
শাহনাজ খুশি, অভিনেত্রী
স্বামী ও দুই সন্তানের সঙ্গে শাহনাজ খুশি
সংগৃহীত

সেদিন শারীরিকভাবে খুব বেশি ক্ষতি না হলেও মানসিকভাবে খুব অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন এ অভিনেত্রী। এ অবস্থায় কাটে বেশ কয়েক দিন। তিনি বলেন, ‘গত এক মাস আমি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলাম। রাস্তায় বের হলেই মনে হতো গাড়িগুলো আমার গায়ের ওপর উঠবে। হর্ন শুনলেই চিৎকার দিয়ে উঠতাম। কোনো গাড়ির শব্দ শুনলে অসুস্থ হয়ে যেতাম। ওই সময় টানা ১০ দিন তেমন কিছু খেতে পারিনি। খুবই বাজে অবস্থায় ছিলাম। ঘুমের মধ্যেও চিৎকার দিয়ে উঠতাম।’

দুর্ঘটনার পরে এতটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন যে তাঁর সঙ্গে পরিবারের লোকজন থাকতে হতো। তিনি বলেন, ‘ঈদের কাজের জন্য কষ্ট করে লোকেশনে যেতে হয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনার আতঙ্ক পিছু ছাড়েনি। বের হলেই মনে হয়, এই বুঝি কোনো বিপদ সামনে এল। গাড়ি দেখলেই আমি খুব ভয় পেয়ে যাই। একা গাড়িতে উঠলেই মাথা ঘুরত। আমার এমন অবস্থা দেখে পরিবারের লোকজন আমার সঙ্গে শুটিংয়ে গিয়েছে।’

দুর্ঘটনার পরে এতটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন যে তাঁর সঙ্গে পরিবারের লোকজন থাকতে হতো
সংগৃহীত
’ঈদের কাজের জন্য কষ্ট করে লোকেশনে যেতে হয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনার আতঙ্ক পিছু ছাড়েনি। বের হলেই মনে হয়, এই বুঝি কোনো বিপদ সামনে এল।’
শাহনাজ খুশি, অভিনেত্রী

খুশি জানান, তাঁর এই মানসিক অবস্থা দেখে তাঁর দুই ছেলে এবং স্বামী চিত্রনাট্যকার বৃন্দাবন দাস তার সঙ্গে পুবাইলে গিয়েছেন। অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর শুটিং না থাকলে, এই অভিনেত্রীকে সঙ্গ দিয়েছেন। মানসিকভাবে স্থির হতে সাহায্য করেছেন।

শাহনাজ খুশি তাঁর এই সমস্যা দূর করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। এরপরও তিনি স্বাভাবিকভাবে ঘুমাতে পারেননি। ডাক্তারের চিকিৎসা নিয়ে শাহনাজ খুশি বেশ কিছুদিন পরে ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন একটু একটু করে। সম্প্রতি ছয় দিনের জন্য শুটিংয়ে ফিরেছেন এ অভিনেত্রী। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাজ শুরু করবেন। শাহনাজ খুশি ‘নসু ভিলেন’ সিরিজের শুটিংয়ে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন।