কাছের আসার গল্প শোনালেন পাঁচ তারকা

নানা দ্বিধা পেরিয়ে পূর্ণতা পাওয়া ভালোবাসার গল্পগুলো নিয়ে তৈরি হয়েছিল এবারের ‘ক্লোজআপ দ্বিধাহীন কাছে আসার গল্প’। ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টায় একযোগে ১৬টি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে শর্টফিল্ম তিনটি। আতিয়া ইবনাত নোভার গল্পে রাসেল সিকদার নির্মাণ করেছেন ‘নাইস টু মিট ইউ’। অভিনয় করেছেন তামিম মৃধা ও মুমতাহিনা টয়া। ইনজামুল হকের গল্পে অমিতাভ রেজা চৌধুরী নির্মাণ করেছেন ‘ফাগুন থেকে ফাগুনে’। অভিনয় করেছেন সাফা কবির ও সুদীপ বিশ্বাস দীপ। নাদিম মাহমুদের গল্পে রাকা নোশিন নাওয়ার নির্মাণ করেছেন ‘আর থেকো না দূরে’। অভিনয় করেছেন ইরফান সাজ্জাদ ও সুনেরাহ বিনতে কামাল।
এবারের গল্পগুলোর অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের নিয়ে প্রথম আলো ডটকম আয়োজন করেছে ‘ভালোবাসার গল্পের আড্ডা’। আড্ডার উপস্থাপক মুমতাহিনা টয়া সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেন। আড্ডায় তিন গল্পের ছয় অভিনেতা-অভিনেত্রীর থাকার কথা। কিন্তু টয়া পাঁচজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ কই? আড্ডায় অদৃশ্য একজনের সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দেন টয়া। হয়তো অদৃশ্য মানুষটিই ইরফান সাজ্জাদ। এভাবেই শুরু হয় ‘ক্লোজআপ দ্বিধাহীন কাছে আসার গল্প’-এর ভালোবাসার গল্পের আড্ডা।

অমিতাভ রেজা চৌধুরী

শুরুতেই সুনেরাহ বিনতে কামাল শোনান তাঁর কাছে আসার গল্প। তিনি বলেন, ‘অন্য কাজের সঙ্গে খুব বেশি আলাদা ছিল না। তবে অল্প সময়ে কাজটা করা হয়েছে। ক্লোজআপের কাজগুলো বেশ সময় নিয়ে করা হয়। আমাদের কাজটা তেমন সময় নিয়ে করার সুযোগ ছিল না। তাই অনেক বেশি চাপ নিতে হয়েছে। চাপের মধ্যে অসাধারণ একটি কাজ রাকা নোশিন নাওয়ারের পরিচালনায় করতে পেরেছি। রাকার সঙ্গে একটা আমার প্রথম কাজ। রাকার সবচেয়ে ভালো দিক হলো কাজ ভালোভাবে বুঝে তারপর সেটে আসে। এ জন্য কাজগুলো অনেক বেশি গোছানো থাকে। রাকার সঙ্গে আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। সাজ্জাদ আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে।’

সুনেরাহ বিনতে কামাল
ইনস্টাগ্রাম

নায়কের চরিত্রে অভিনয় করা তিনজনেরই ‘ক্লোজআপ দ্বিধাহীন কাছে আসার গল্প’ প্রথম কাজ। প্রথম কাজ হিসেবে কেমন ছিল সে অভিজ্ঞতা। শুরুটা করেন সুদীপ বিশ্বাস দীপ। ‘আমার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। এর প্রধান কারণ হলো আমার পরিচালক ছিলেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী। কাজ শুরু করার আগে আমি চিন্তামুক্ত ছিলাম। কারণ, অমিতাভ রেজা চৌধুরী যেটা বানাবেন, সেটা অবশ্যই সেরা হবে। শুটিংয়ে আমার কাজ ছিল আনন্দে থাকা এবং ওনার ডিরেকশন ফলো করা। আমার জন্য কাজটা ছিল চ্যালেঞ্জের। কারণ, আমার চরিত্রটা ছিল নাপিতের। কাজটি করতে আমাকে চুল কাটা শিখতে হয়েছে। আমি একটা সেলুনে চুল কাটা শিখতে গিয়েছিলাম। নাপিতকে টাকার বিনিময় শেখানোর কথা বলায় সে আমাকে শেখাবে না বলে দেয়। তখন খুব হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। এরপর আরেকটা দোকানে গিয়ে বলার পর ওই নাপিত রাজি হয়। সে আমাকে বলল, প্রথমেই আপনার কাটার দরকার নেই। আপনি দেখেন আমরা কীভাবে কাজটা করি। তারপর দেখে দেখে শিখে ফেলি। তবে বাসায় এসে প্রচুর অনুশীলন করতে হয়েছে। আমি সাফা কবিরকে ধন্যবাদ দিয়ে বলতে চাই। তাঁর সহযোগিতা না পেলে কাজটা করা সম্ভব হতো না।’

সাফা কবির
ইনস্টাগ্রাম

সাফা কবির এখন পর্যন্ত চারটি ‘ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প’-এ অভিনয় করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা আমার জন্য খুবই ভালো লাগার একটি অভিজ্ঞতা। আমি চারবারেই চারজন বিখ্যাত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আমাদের দেশে নাটকের ভালো ভালো পরিচারক আছে, কিন্তু যারা সিনেমা ও বিজ্ঞাপন তৈরি করে, তাদের সঙ্গে আমাদের সব সময় কাজ করা হয় না। তাদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আলাদা। ক্লোজআপের কাজ করাটা আসলেই অন্য রকম অভিজ্ঞতা। সময়টা আরও বেশি হলে কাজ করে আরও বেশি মজা পাওয়া যেত। প্রতিটি শটের আগে অমিতাভ ভাইয়া আমার কাছে জানতে চাইত, তুই কীভাবে কাজটা ডেলিভারি দিতে চাস? আমার মতামতের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিত। অমিতাভ ভাইয়া অনেক বেশি সহযোগিতা করেছে কাজের ক্ষেত্রে। সে সব সময় আর্টিস্টদের কাছে শুনতে চাইত, তুমি কেমন ফিল করছ অভিনয় করে? তার সবচেয়ে বড় গুণ হলো আর্টিস্টদের ভালোভাবে বুঝতে পারত।’ সাফার কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দীপ জানান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী আর্টিস্টদের খুব কম বোঝাতেন। তবে যেটুকু বোঝাতেন, সেটুকুতেই কাজ হয়ে যেত। কথায় ফিরে সাফা বলেন, ‘এ কাজ করার সময় আমি তেমন কোনো প্রস্তুতি নিইনি। সেটে গিয়েই স্ক্রিপ্ট শুনে শুনে নিজেকে প্রস্তুত করেছি।’

তামিম মৃধা ও মুমতাহিনা টয়া ‘নাইস টু মিট ইউ’ শর্টফিল্মে পাঁচ দিন শুটিং করেছেন। তাই তাঁদের অভিজ্ঞতাও বেশি। তামিম মৃধার মুখেই শুনি সেই অভিজ্ঞতার কথা। ‘নাটকের অভিনয় করার জন্য ড্রোন চালানো শিখতে হয়েছে। প্রস্তুতি বেশ ভালোভাবে নিতে পেরেছিলাম।’

এবার উপস্থাপক মুমতাহিনা টয়া অন্য ভূমিকায়। অতিথি হিসেবে শোনাবেন নিজের অভিজ্ঞতা। ‘শুটিং সেটে অনেক কিছু শিখে যেতে হয়েছ। ইশারা ভাষা শিখে নাটকের শুটিংয়ে গিয়েছি। এটা শেখার জন্য চার দিন ক্লাস করেছি। আমাদের মেন্টর ছিলেন।’ শুটে কেন পাঁচ দিন লাগল, এ বিষয়ে টয়া বলেন, ‘আমার অংশের শুটিংয়ে আর কোনো অভিনেতার শুটিং হয়নি। অন্য অভিনেতার শুটিং হয়েছে আবার আরেক দিন। “নাইস টু মিট ইউ” একটা হাইটেক প্রেমের গল্প। আমাদের গল্পটা একেবারে এই সময়ের। আমার যখন গল্পটা শুনি, তখন তামিম মৃধার দিকে তাকিয়ে ছিলাম; এটা কীভাবে শুটিং করব।’ তবে শেষটা অসাধারণ হয়েছে—তামিম মৃধা ও মুমতাহিনা টয়ার সম্মিলিত উত্তর।