করোনা আমাকে গৃহিণী বানিয়েছে: তিশা
ঈদুল ফিতরে টিভিতে তিশার নতুন কোনো নাটক ছিল না, থাকবে না ঈদুল আজহাতেও। সেই যে লকডাউনে গেছেন, বাড়ি থেকেই আর বেরই হননি অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। অভিনয় যদি ছেড়ে দেন, তাহলে কী কী করবেন, সেই প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছেন রীতিমতো। নানা কাজে পারদর্শিতা অর্জন করেছেন তিনি।
লকডাউনে নরসুন্দর, অর্থাৎ নাপিত হয়েছেন তিশা। নিজের চুলের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নির্মাতা বর মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর চুল কেটে দিয়েছেন। মা শাহীন মাহফুজার চুলও কেটে দিয়েছেন! তবে কি নারীসুন্দরও বলা যায় তাঁকে? তিশা মনে করেন, সাইড বিজনেস হিসেবে কাজটা খারাপ হবে না।
‘করোনা আমাকে গৃহিণী বানিয়েছে। বাসার বাইরে এত কাজ করতাম, সংসার চলত ফোনে ফোনে। ১৩৩ দিনের লকডাউন জীবন আমাকে বাস্তবিক গৃহিণীর অভিজ্ঞতা দিয়েছে,’ বললেন ছোট পর্দার ব্যস্ত অভিনয়শিল্পী নুসরাত ইমরোজ তিশা। এক দশক ভীষণ কর্মব্যস্ত গেছে তাঁর। এমন বছরও গেছে, চাঁদরাত পর্যন্ত শুটিং করতে হয়েছে। ঈদে দুই ডজন নাটকে অভিনয় করতে হতো তাঁকে। অথচ করোনার দুই ঈদে টেলিভিশনে তিশা নেই। শুটিংয়ের সেই ব্যস্ততাকে ছুটি দিতে হয়েছে। গত বুধবার জানালেন, ১৩৩ দিনে নতুন এক জীবন পেয়েছেন তিনি। একে অনেকটা প্রাকৃতিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মতোও মনে হয়েছে তিশার।
লকডাউনে কী কী করলেন কাজপাগল তিশা? ছোট্টবেলায় ছবি আঁকতেন। লকডাউনে সেই সুযোগ ফিরে এল। তা ছাড়া বাড়িতে তিনি তৈরি করেছেন ফুলের ঝুড়ি। তিশা বলেন, ‘ছোটবেলায় আমার বাসাভর্তি ফ্লাওয়ার ভাস ছিল। আমি বানাতাম। এই লকডাউনে তা আবার করলাম। ঘরে ওয়াল পেইন্ট করেছি। কাপড়ে কিছু নকশার কাজও করেছি। মনে হয়েছে, যদি মিডিয়ার কাজ না-ও করতে পারি, বুটিক শপ খুলতে পারব।’
রান্নাবান্না শিখেছেন তিশা। বেকিং আইটেম যেমন বানিয়েছেন, তেমনি মাছ, মাংস, ভর্তার নানা পদ রান্না করে ঘরের মানুষদের খাইয়েছেন। বিয়ের পর এই প্রথম এ ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর। তিশা বললেন, ‘আমি তো গৃহিণী না। এই প্রথম গিন্নিপনার অভিজ্ঞতা হলো। একটা রান্নার পেছনে যে পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয়, তা নতুনভাবে বুঝতে পারলাম। গরুর কালো ভুনা থেকে শুরু করে মুরগি, মাছ, বিভিন্ন রকম ভর্তা, মিষ্টি, ওটসের বিভিন্ন পদ, যখন যা মন চাইছে বানাচ্ছি। ফল দিয়ে প্যানকেকও বানিয়েছি।’
এই সময়টায় ঘরে বসে থেকে অন্য সব কাজের ফাঁকে গাছও লাগিয়েছেন। বনানীর বাড়ির বারান্দাজুড়ে করলাগাছ, পুঁইশাক, আদাগাছসহ অনেক রকম গাছ লাগিয়েছেন। তিশার ভাষায়, ‘একজন কিষানিও হয়ে গেছি।’ লকডাউনে এত দিন ঘরে থেকে তিশার উপলব্ধি কী? তিনি বললেন, ‘ঘরে থাকা সত্যি সহজ নয়। অনেক ডিপ্রেসিং একটা কাজ।’ তাই সবাইকে ধৈর্য ধরতে বললেন তিনি। ঘরের সবাইকে সবার কাজে সহযোগিতাও করতে বললেন।