এভাবে চললে নাটক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন দর্শক
শুভ জন্মদিন
থ্যাংকস।
দিনটা কেমন যাচ্ছে?
রাত থেকে এত মানুষ শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। মুগ্ধ হচ্ছি। ভালো লাগছে। কিছু মানুষের ফোন আবেগাপ্লুত করছে।
অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন ফোনের ওপারে। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে খোঁজ নিতেই কণ্ঠে শোনা গেল উচ্ছ্বাস। প্রিয় কিছু মানুষের শুভেচ্ছাবার্তায়, ভালোবাসায় মুগ্ধ তিনি। পাশাপাশি কাজ ও বর্তমান নাটকের ট্রেন্ড নিয়ে কথা বললেন। জানালেন, বর্তমানে ইউটিউবে ভিউ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চর্চাই হয়ে উঠছে নাটকের মান নির্ধারক। এমন চললে নাটক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন দর্শক।
জন্মদিনটি বরাবরই আনিসুর রহমান মিলনের জন্য বিশেষ। শৈশবে অপেক্ষা করতেন কখন ভাই-বোন, বাবা-মা উপহার নিয়ে আসবেন। একটু বড় হলে বন্ধুদের সঙ্গে দিনটি কাটাতেন। সারা দিন হইহুল্লোড়, ঘোরাফেরা। বন্ধুরা আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিতেন, মিলনের এ বছর লাগবে কী? ঠিক সেই জিনিসটাই জন্মদিনের উপহার হিসেবে সারপ্রাইজ হয়ে আসত মিলনের কাছে। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে জন্মদিন উদ্যাপনের ধরন।
মিলন বলেন, ‘রাত থেকেই ফেসবুকে শুভেচ্ছা পাচ্ছি। আমাকে নিয়ে কে, কী নতুন পোস্ট করলেন তা দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। তা ছাড়া এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সারা বছর ফোন দেন না। কিন্তু আজকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। অনেক বন্ধু আছে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তাদের কেউ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে হঠাৎ নস্টালজিক করে দেয়।’
রাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কেক কেটেছেন। বেশির ভাগ জন্মদিনে শুটিং না করলেও এবার বের হতে হয়েছে শুটিংয়ে। মিলন জানান, ছেলে ও স্ত্রী দেশে থাকলে হয়তো শুটিং করা হতো না। তারা যুক্তরাষ্ট্রে আছে। রাতেই তাদের সঙ্গে অনলাইনে জন্মদিন উদ্যাপন করেছেন।
জন্মদিনের সেরা সারপ্রাইজ কী? মিলন বলেন, ‘একবার আমি নেপালে শুটিং করছি। হঠাৎ রাতে বড় একটি গিফট বক্স পেলাম। তার মধ্য ফুল, কেকসহ আরও নানা জিনিস। কোনো নাম–ঠিকানা নেই। কেউ বলতে পারেন না কে পাঠিয়েছে। মনে করেছিলাম হয়তো শুটিং ইউনিট থেকে কেউ সারপ্রাইজ দিয়েছে। নাম বলছেন না। পরে জানতে পারলাম, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমার স্ত্রী এই উপহার পাঠিয়েছে। এটা আমার কাছে এখনো স্মরণীয় ঘটনা হয়ে আছে।’
টেলিভিশন ও ওটিটিতে নিয়মিত অভিনয় করছেন আনিসুর রহমান মিলন। কখনো কখনো অনেক কাজই তাঁর পছন্দ হয় না। নাটকের বাজেটকে প্রাথমিকভাবে দায়ী করা হলেও মেধারও ঘাটতি দেখেন এই অভিনেতা। মিলন জানান, অভিনয়ের দিক থেকে একেকটা প্রজন্মকে আলাদা করা যায়। একসময় হুমায়ুন ফরীদি, তৌকীর আহমেদ, জাহিদ হাসানদের অভিনয় অনেককে অনুপ্রাণিত করত। তাঁদের অভিনয় এবং ব্যক্তিত্বকে আদর্শ মনে করা হতো। সেই জায়গা থেকে ক্রমেই সরছে মেধার মূল্যায়ন। তিনি বলেন, ‘শুধু অভিনয় করে গেলে হবে না। নতুনদের মধ্য আইডল হওয়ার মতো অভিনয়শিল্পী নেই। যে কাউকে অভিনয়ে দাঁড় করালে হবে না। শিল্পের প্রতি কতটা দায় রয়েছে, সেটা মূল্যায়ন করতে হবে। মেধাকে গুরুত্ব না দিলে দিন দিন মেধাশূন্যতা বাড়বেই। সিনেমা যেমন দর্শক হারিয়েছে, তেমনি আমরাও নাটক থেকে দর্শক হারাব।’
তিনি আরও জানান, ফেসবুকে লাইক, মন্তব্য থাকতেই পারে। পাশাপাশি ইউটিউবে ‘ভিউ’ খারাপ কিছু নয়। কিন্তু ভিউ বাড়ানোর জন্য বাছ-বিচার না করে কাজ করা ঠিক না। দর্শকের রুচি তৈরিতে শিল্পীরা ভূমিকা রাখেন। সেই জায়গায় দায় আছে শিল্পীর।
ঈদে বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন। একই সঙ্গে প্রকাশ পেয়েছে ওয়েব সিরিজ ‘বরফ কলের গল্প’। এই ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। বেশ কিছু ঈদের নাটক দিয়ে শুটিংয়ে ফিরেছেন। পাশাপাশি ‘মাফিয়া’সহ দুটি সিনেমার ডাবিং চলছে। শিগগিরই অসমাপ্ত কিছু সিনেমার কাজ শেষ করবেন মিলন।