নারী দিবস সামনে রেখে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পী ও চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াতের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। এক কথায় দুই কথায় তিনি সম্প্রতি প্রথম আলোকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ তুললেন। তাঁকে জানালাম, সাক্ষাৎকারে আপনার কথাগুলো সংস্কৃতি অঙ্গনের সবাই খুব প্রশংসা করেছে। এরপর তিনি লিংকটা চাইলেন। বললাম, আপনার পেজে তো শেয়ার করা দেখলাম। তাহলে কারা করল? আমি তারপরও লিংক পাঠাচ্ছি।’ উত্তরে বিপাশা বললেন, ‘আমার কোনো ফেসবুক পেজ নেই। সবই ভুয়া পেজ এবং আইডি। আমার একটা আইডি, যেটাতে তুমি বন্ধু হয়ে আছো।’
বলেন কী!
একদম তাই। বিপাশা বললেন, ‘অনেক সময় কারও সঙ্গে দেখা হলে আমাকে শুনতে হয়, আমি তো আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড। আপনাকে মেসেজ পাঠালাম, কিন্তু কোনো উত্তর দিলেন না! অথচ এসবের কিছুই আমি জানি না। এটাকে আমার ভয়ংকর বলা ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না। এটা রীতিমতো একটা ক্রাইম। আমার ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া, ছবি শেয়ার করা, নানা ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়—যার কোনোটাই আমার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যায় না, যা আমাকে উপস্থাপন করে না। এমনকি আমার দর্শন ও রুচির পরিপন্থী। এই ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আমাকে ইমপার্সনেট করা হয়।’
বিপাশা হায়াতের ফেসবুকে একটি আইডি থাকলেও সেটি এই মুহূর্তে বন্ধ আছে। মেসেঞ্জারে তিনি তাঁর পরিবার-পরিজন, বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। ভুয়া ফেসবুক আইডি ও পেজ যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁদের উদ্দেশ করে বিপাশা বলেন, ‘হয়তো আপনারা আমাকে প্রতি ভালোবাসা দেখাতে এমনটা করছেন। কিন্তু আপনারা আমার প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে আমার নামে ফেসবুকে যা করছেন, তা একধরনের প্রতারণাও। দেশের শ্রদ্ধাভাজন নানা ব্যক্তিত্বকে নিয়ে যেমন কথা বলছেন, তেমনি নানা ইস্যুতে এমনকি ধর্মীয় নানা কথাবার্তা আমার নাম করে প্রচার করছেন! এসব সত্যি সত্যি খুবই ভয়ংকর। আপনারা এসব থেকে বিরত থাকুন প্লিজ।’
বেশ কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন অভিনয়শিল্পী ও চিত্রকর বিপাশা হায়াত। এই সময়ে তিনি ছবি আঁকা, লেখালেখি ও কবিতার ক্লাস করেছেন। নিউইয়র্কে একটি একক চিত্র প্রদর্শনীও হয়েছে তাঁর। সেখানে তাঁর দুই সন্তানও রয়েছে। এই মুহূর্তে কী করছেন জানতে চাইলে বিপাশা বললেন, দুটি নাটক লিখছেন।
অভিনয় দিয়েই দেশ-বিদেশের দর্শকের মনে অভিনেত্রী বিপাশার অবস্থান। প্রিয় সেই অভিনয়শিল্পীকে অভিনয়ে না পেয়ে দর্শকের অভিমান রয়েছে। এই প্রসঙ্গ তুলতেই বিপাশা বললেন, ‘আমি অভিনয়কে ভালোবাসি। কিন্তু সমাজের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা আছে। নাটক আমার কাছে পরিপূর্ণ এক শিল্প। সেখানে বাণিজ্য অবশ্যই থাকবে। কিন্তু একটা সময় মনে হয়েছে, বাণিজ্যই আসল, শিল্প নয়। অনেক বেশি কম্প্রোমাইজ করছে সবাই। তখন আমি সিরিয়াসলি ছবি আঁকতে শুরু করি। আর্ট প্র্যাকটিস কিন্তু শতভাগ সময় ডিমান্ড করে। এভাবেই দূরে সরে গেছি। আর এখন তো নতুনদের কাজ করার সময়। তাঁদের অনেকের অসাধারণ অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করে। তবে দর্শকের অসীম ভালোবাসার কাছে আমি চিরঋণী এবং অবশ্যই আমি অভিনয় করব।’