‘হাবু ভাই’–এর বিবাহোত্তর সংবর্ধনার খরচে এতিমখানায় তিন দিনের খাবার
‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের ‘হাবু’ হিসেবে পরিচিত অভিনেতা চাষী আলমের সঙ্গে ঢাকার বাড্ডার মেয়ে তুলতুল ইসলামের বিয়ে হয়েছে গত শুক্রবার। দুই পরিবারের কাছের সদস্যেরা মিলে ছোট পরিসরে গায়েহলুদ আর বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে নিয়েছেন। আয়োজন করেননি বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের। এ নিয়ে কেউ কেউ কথা তুলেছেন, যা কানে এসেছে এই নবদম্পতির। চাষী আলম জানান, বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যা খরচ হতো, তার পুরোটা এতিমখানায় দেবেন। এই অর্থে এতিমখানায় তিন দিন তিন বেলা খাবার খাওয়াতে চান তিনি।
পারিবারিকভাবে বিয়ে হলেও তুলতুল ইসলামের সঙ্গে চাষী আলমের পরিচয় প্রায় ছয় মাস আগে, উত্তরায়। হঠাৎ করেই এই পরিচয়। তুলতুল তাঁর অভিনয়ের ভক্ত ছিলেন। পরিচয়ের কিছুদিন পর থেকে দুজনের মধ্যে কথাবার্তা শুরু হয়। মাঝেমধ্যে দেখাসাক্ষাৎও চলে। একপর্যায়ে চাষীর পরিবারের অন্য সদস্যেরা মেয়েটিকে দেখেন। তাঁদের পছন্দ হয়। এরপর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চাষী জানান, গায়েহলুদ ও বিয়ের অনুষ্ঠানে বিনোদন অঙ্গনের বন্ধুরাই ছিলেন। সেভাবে মিডিয়ার মানুষজনকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। পরিবার ও আত্মীয়স্বজন মিলে ছোট পরিসরে করেছেন।
চাষী আলম দীর্ঘদিন ধরে বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেন। সে হিসেবে এই অঙ্গনের অনেকের সঙ্গেই তাঁর সম্পর্ক খুব ভালো। চাষী বলেন, ‘এই অঙ্গনে সত্যিই আমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধুবান্ধব আছে। তুলতুলের পরিবারেও অনেক মানুষ। আমি বড় করে অনুষ্ঠান করতে গেলে ইচ্ছাকৃতভাবে বা মনের অজান্তেই অনেকে হয়তো বাদ পড়ে যেতে পারেন। এই কারণে তা চাইনি। আমার রিসেপশনে যে টাকাটা খরচ হতো, সেটা আমি এতিমখানায় দিয়ে দেব। এতে যদি আমার বন্ধুবান্ধব মন খারাপ করে, তাহলে কিছু করার নেই।’
তবে এতিমদের জন্য এক বেলা খাবারের আয়োজন নয়, অন্তত তিন দিনের খাবারের খরচ প্রদান করতে চান চাষী আলম। তিনি বলেন, ‘আমি এক বেলা খাওয়াতে রাজি নই। খাওয়ালে ভালোভাবে খাওয়াব। একটা এতিমখানায় তিন দিনের যে খরচ হয়, সেটা দিয়ে দেব। এমন চার-পাঁচটা এতিমখানায় খাওয়াব। এ ছাড়া সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিস কিনে দেব, যেন তারা অনেক দিন সেগুলো ব্যবহার করতে পারে। এর মধ্যেই সাভারের বিরুলিয়ায় একটা এতিমখানার খোঁজ পেয়েছি, সেই এতিমখানা মেয়েদের। সচরাচর আমাদের আশপাশে এমন এতিমখানা দেখা যায় না। তো আমার ইচ্ছা, সেখানেই করার।’
স্বামী চাষী আলমের এমন সিদ্ধান্তে খুশি তাঁর স্ত্রী তুলতুল ইসলামও। উচ্ছ্বসিত হয়ে তিনি বলেন, ‘ও (চাষী আলম) আমাকে বলেছে, “আমি এটা করতে চাই”। তখন আমি বলেছি, আলহামদুলিল্লাহ। এটা অবশ্যই ভালো কাজ। তুমি এটা করো।’
বিয়ের পর হানিমুনে ইউরোপে যাওয়ার ইচ্ছাপোষণ করেন চাষী আলম, তবে এখনই নয়। কারণ, তাঁর বেশ কয়েকটি নাটকের শিডিউল দেওয়া আছে। আগে নাটকগুলোর শুটিং শেষ করতে হবে। এরপর হাতে সময় নিয়ে হানিমুনে যাবেন তাঁরা।