তাঁর সাথে শেষ স্মৃতি,তার সেই হাসিমুখ...

মাসুদ আলী খান ও নুসরাত ইমরোজ তিশাকোলাজ

৯৫ বছর বয়সে রাজধানী ঢাকায় নিজ বাড়িতেই ঘুমের মধ্যে মারা যান প্রবীণ অভিনেতা মাসুদ আলী খান। সাত দশকের অভিনয়জীবনে তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছেন অনেক অভিনয়শিল্পী। এসব অভিনয়শিল্পীর অনেককে সন্তানের মতো স্নেহ ও ভালোবাসা দিতেন। মাসুদ আলী খানের স্নেহ ও ভালোবাসার কারণে অনুজ অভিনয়শিল্পীদের অনেকে বাবার মতোই মনে করতেন তাঁকে। তেমনই একজন অভিনয়শিল্পী নুসরাত ইমরোজ তিশা। বরেণ্য অভিনয়শিল্পী মাসুদ আলী খানের মৃত্যুসংবাদে সেই স্মৃতি তুলে ধরলেন তিশা।

নুসরাত ইমরোজ তিশা
ছবি : প্রথম আলো

অভিনয় অঙ্গনে ২৬ বছর পার করছেন তিশা। তাঁরও আগে ‘নতুন কুঁড়ি’ অনুষ্ঠান দিয়ে বিনোদন অঙ্গনে পথচলা শুরু জনপ্রিয় এই তারকার। নতুন কুঁড়িতে আধুনিক গান, ছড়াগান, দেশাত্মবোধক গান, নাচ, গল্প বলা—সব কটি বিভাগে চ্যাম্পিয়নও তিনি।

১৯৯৫ সালে নতুন কুঁড়ির গোল্ডকাপটা ওঠে তাঁরই হাতে। গানে নিয়মিত না হলেও অভিনয়টা ছিল নিয়মিত। টেলিভিশন নাটক, ওয়েব ফিল্ম ও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র—সব মাধ্যমে কাজ করেছেন এই তারকা। ২০০৩ সালে তাঁর বাবা মারা যান। এরপর তিনি অভিনয়ে ফেরেন ধারাবাহিক নাটক ‘৬৯’ দিয়ে। এই নাটকে তিশার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেন সদ্য প্রয়াত মাসুদ আলী খান।

মাসুদ আলী খান
ছবি : প্রথম আলো

তিশা তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘২০০৩ সালে আমার বাবা মারা যাওয়ার পরে আমার “৬৯” সিরিজে অভিনয় শুরু করি, সেখানে মাসুদ আলী খান আমার বাবার চরিত্রে ছিলেন। দেড়-দুই বছর আমাদের “৬৯” নাটকের শুটিং চলে। ধীরে ধীরে তিনি আমার বাবার মতোই হয়ে যান।’

‘৬৯’ ছাড়া আর কোনো নাটকে মাসুদ আলী খানের সঙ্গে অভিনয় করা হয়নি নুসরাত ইমরোজ তিশার। এদিকে কয়েক বছর ধরে তো অভিনয়ে একেবারে অনিয়মিত বরেণ্য এই অভিনেতা। অসুস্থতার কারণে বাসা থেকেও বের হতেন না। তাই দুজনের দেখা হওয়ার সুযোগও ছিল না। সর্বশেষ মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মাসুদ আলী খানের সঙ্গে দেখা তিশার। এ বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে মাসুদ আলী খানকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

সেই স্মৃতি মনে করে তিশা লিখেছেন, ‘লাস্ট তাঁর (মাসুদ আলী খান) সাথে আমার দেখা হয়েছে একটা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে। তখন তিনি হুইলচেয়ারে বসা। আমার হাতটা ধরে বললেন, “মা, কী অবস্থা? কেমন আছিস? বাচ্চা কেমন আছে? সরয়ার (মোস্তফা সরয়ার ফারুকী) কেমন আছে?” আমি হাসিমুখে তাঁর হাঁটুর কাছে বসে বললাম, “সবাই ভালো আছে, বাবা। আলহামদুলিল্লাহ!” তাঁর সাথে আমার শেষ স্মৃতিটি ছিল তাঁর সেই হাসিমুখটি! আজ তিনি এই পৃথিবীতে নেই, রেখে গেছেন অনেক স্মৃতি।’