শিল্পীদের নিষিদ্ধ নয়, সংশোধনের সুযোগ দিতে চায় সংগঠনগুলো
কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিনয়শিল্পী সংঘ কড়া নিয়ম অনুসরণ করত। অভিযুক্ত শিল্পীদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হতো। কিন্তু এবার আর সেই পথে হাঁটতে চায় না অভিনয়শিল্পী সংঘ ও টেলিভিশন প্রযোজকদের সংগঠন টেলিপ্যাব। এমন সিদ্ধান্ত থেকে কেন ফিরে এসেছে সংগঠনগুলো?
এ বিষয়ে কথা হয় অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিমের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমরা অনেক শিল্পীর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে তাঁদের নিষিদ্ধ করেছি। প্রসূন আজাদ, অ্যালেন শুভ্র, সারিকা। তাঁদের বিরুদ্ধে অনেক কঠোর হওয়ায় তাঁদের জন্য কিন্তু পথচলা কঠিন হয়ে যায়। আপনারা এই অভিনয়শিল্পীদের দিকে তাকান, তাঁদের এখন কী অবস্থা। কিন্তু তুলনামূলক চিত্র দেখলে দেখা যাবে অন্য সংগঠন কিন্তু এতটা কঠোর হয়নি তাদের সদস্য নিয়ে। এখন যে কারণেই হোক ডিরেক্টরস গিল্ড চায় যে চমককে বহিষ্কার করে দিই। সেটা না মানায় তারা নিজেরাই এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন এটা পারে না। চাইলে তারা নিজেদের সংগঠনের সদস্যদের সতর্ক করতে পারে। তাকে নিয়ে কাজ করা যাবে না। যেটা আমরা আমাদের প্রেস রিলিজেও বলেছি।’
অভিনয়শিল্পীদের কেন নিষিদ্ধ করা হবে না—সেই প্রসঙ্গে অভিনয়শিল্পী সংঘের ২৩ আগস্টের প্রেস রিলিজে বলা হয়, ‘সংগঠনকে সদস্যরা ভয় পাবে না, বরং ভালোবাসবে নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করবে। কেউ কেউ কখনো ভুল করতে পারে অন্যায় করতে পারে। আমরা তাকে সংশোধনের চেষ্টা করব। সঠিক পথ বাতলে দেওয়ার চেষ্টা করব। কিন্তু কখনোই গলা টিপে ধরব না। ভুল শুধরে নেওয়ার, সংশোধন হওয়ার যথেষ্ট সময়, সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও যদি সংশোধন না হয়, তখন হয়তো সংগঠন কঠোর হতে পারে। তার আগে নয়।’
টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) সভাপতি মনোয়ার পাঠান মনে করেন, মিডিয়া অঙ্গনের সবাই মিলে একটি পরিবার। এই পরিবারে যেকোনো সমস্যা হলে সেটা নিজেরাই আলোচনা করে সমাধান করা উচিত। এর লক্ষ্য হওয়া উচিত, সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখা।
চমকের বিরুদ্ধে আগে কোনো অভিযোগ টেলিপ্যাব পেয়েছে কি না জানতে চাইলে মনোয়ার পাঠান বলেন, ‘এর আগে কেউ চমককে নিয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। প্রথম অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু তিন পক্ষই তার বিরুদ্ধে সে জন্য এখানে আমার কোনো সিদ্ধান্ত নেই। সবাই মিলে, সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেটা সবার কাছেই যৌক্তিক মনে হয়েছে। কারণ, আমরা কেউ চাই না নতুন কেউ অকালেই ঝরে পড়ুক; আবার এটাও চাই না নতুন কেউ অন্যায় করে ছাড় পাক। সবার চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে চমককে নিয়ে সবার আগের সিদ্ধান্ত সঠিক মনে হয়েছিল। এখন অতিরিক্ত যা হচ্ছে এটার জন্য আসলে লজ্জিত। শিল্পীদের সংগঠনে এগুলো মানায় না।’
সবশেষে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম বলেন, ‘আমাদের সব সংগঠনের কাজ শুটিংয়ের পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। সেখানে যে বিঘ্ন ঘটাবে, সেটা নিয়ে কারেকশন করানো হবে। সেটার জন্য শাস্তি একটা হবে। আমাদের কাছে এই অভিযোগে আসার পর চমকের আত্মোপলব্ধি হয়েছে। সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে। মাসুম ভাইয়ের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছে। নাটকের ক্ষতিপূরুণ দেবে। চমকের জন্য চেয়ে বড় শাস্তি তো আর হতে পারে না।’