হত্যার বিচার চাইলেন বাঁধন, মোশাররফ করিম বললেন, ঘরে বসে থাকার মতো অবস্থা নেই
কথা ছিল মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীদের সমাবেশ হবে। কিন্তু পুলিশের বাধায় পরে বৃষ্টিতে ভিজে রাজধানীর ফার্মগেটে সমাবেশ করেছেন পরিচালক, অভিনয়শিল্পী ও নানা মাধ্যমের কলাকুশলীরা। শিল্পীরা বলেছেন, সরকার যে বর্বর পন্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দমন করেছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না।
‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যার’ প্রতিবাদে অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে বক্তব্য দেন মোশাররফ করিম। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে যে অবস্থা বর্তমানে সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমরা ঘরে বসে থাকার মতো অবস্থায় নেই। আমরা শান্তি চাই। রক্ত দেখতে চাই না। গোলাগুলি, রক্ত দেখতে চাই না। আমি ও আমরা সাধারণ মানুষ। আমরা শান্তি চাই।’
এ সময় তাঁরা হত্যাকাণ্ডের নিন্দা, বিচার দাবি, গণগ্রেপ্তার বন্ধ করা, সরকারের সমালোচনা ও পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বৃষ্টিতে ভিজে শিল্পীরা আনন্দ সিনেমা হলের সামনের পশ্চিম পাশের সড়কের দুই পাশে ব্যানার-পোস্টার নিয়ে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন বলেন, ‘নাগরিক হিসেবে আমাদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় সেটি কি করেছেন, চেষ্টা করছেন? আমরা ভালো দিন দেখতে চাই। যেদিন থেকে গুলি চলেছে, সেদিন থেকেই আমরা মানসিকভাবে ভালো নেই। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্ম। যারা মারা গেছে, তাদের হত্যার বিচার চাই।’
শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীদের নেতারা প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য দেন। অনেক সাধারণ মানুষও শিল্পীদের সঙ্গে এই সমাবেশে অংশ নেন। এখানে জমায়েত বেশ বড় হয়ে ওঠে। চারপাশে অনেক পুলিশ সদস্যও ছিলেন। তবে তাঁরা সমাবেশে আর বাধা দেননি। জড়ো হতে থাকেন শিল্পীরা। অভিনেত্রী নাজিয়া হক অর্ষা বলেন, ‘এতগুলো মেধাকে এভাবে মৃত্যুর জায়গায় পৌঁছে যাওয়া, এত রক্ত, এত ক্ষত, এটা আমি সাধারণ নাগরিক হিসেবে মেনে নিতে পারি না।’
পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘এই রাজনীতি, ভয়ের রাজনীতি, এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে রাজনীতি, যেভাবে গুলি করা হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রয়োজন ছিল আরও আগে। বড্ড দেরি হয়ে গেছে।’
বক্তাদের মধ্যে ছিলেন মামুনুর রশীদ, আকরাম খান, পিপলু আর খান, ঋতু সাত্তার, আমরিন মুসা, আশফাক নিপুন, সুকর্ণ শাহেদসহ অনেকে। বৃষ্টির কারণে সবাই বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করেছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্মাতা নূরুল আলম আতিক, মাতিয়া বানু শুকু, রেদওয়ান রনি, তানিম নূর, নুহাশ হুমায়ূন, সৈয়দ আহমেদ শাওকী, আদনান আল রাজীব, শঙ্খ দাশ গুপ্ত, অভিনয়শিল্পী ইরেশ যাকের, সিয়াম আহমেদ, জাকিয়া বারী মম, সুকর্ণ শাহেদ, মোস্তফা মন্ওয়ার, দিপু ইমাম, সাবিলা নূর, প্রবর রিপন, শ্যামল মাওলা, রাফিয়াত রশিদ মিথিলাসহ আরও অনেকে।