ভাই আমি ভাইরাল হওয়ার দৌড়ে নাই
দুই বছর ধরে অভিনেত্রী সারিকা সাবরিন নাটকে কম অভিনয় করছেন। তবে ঈদের নাটকে নিয়মিত দেখা যায় তাঁকে। এখন চঞ্চলের সঙ্গে জুটি হয়ে সাত পর্বের ধারাবাহিকের শুটিংয়ে ব্যস্ত অভিনেত্রী। শেষ করেছেন রায়হান রাফী ও আবদুল্লাহ মোহম্মদ সাদের ওটিটির কাজ। এসব নানা প্রসঙ্গে গতকাল বুধবার প্রথম আলোর মুখোমুখি হলেন তিনি
প্রথম আলো :
কেমন আছেন?
ভালো আছি। শুটিংয়ে থাকলে ভালো থাকি, বেশি ভালো থাকি আরকি। পরিবারেও ভালো সময় কাটে।
প্রথম আলো :
শুটিং ভালো লাগলে কাজের সংখ্যা কম কেন?
কাজের সংখ্যা কম কোথায়? আমার জায়গা থেকে মনে হয়েছে ঠিকই আছে। গত ঈদে মোশাররফ করিম, চঞ্চল ভাইয়ের সঙ্গে ঈদের নাটকে অভিনয় করলাম। এখন চঞ্চল ভাইয়ের সঙ্গে অভিনয় করছি। আগের মতো প্রতিদিন শুটিং ভালো লাগে না। যে কারণে ২০২২ সাল থেকে আমি শুটিং কমিয়ে দিয়েছি।
প্রথম আলো :
কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন?
এই যে প্রতিদিন শুটিং, একই রকম গল্পে কাজ করা, একই চরিত্র। একের পর এক নাটক করে যাচ্ছিলাম, কিন্তু কিছু নাটক ছাড়া অনেক নাটক থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছিলাম না। একটা সময় মনে হলো, আমি নিজের কাজে নিজেই সন্তুষ্ট হতে পারছি না। আমি সংখ্যা কমিয়ে ভালো গল্পে কাজ শুরু করলাম। টার্গেট ছিল ওটিটির কাজ। পরে ওয়েবের কাজ করেছি। রায়হান রাফীর ‘মায়া’, সাদের (নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহম্মদ সাদ) একটা কাজ। এগুলো মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। কাজগুলো মুক্তি পেলে তখন হয়তো অন্যভাবে দর্শক আমাকে দেখবে।
প্রথম আলো :
ওয়েবের কাজ নিয়ে অভিজ্ঞতা কেমন?
দারুণ সব গল্পে কাজ করেছি। এখন তো ওটিটিতে আন্তর্জাতিক মানের কাজ হচ্ছে। আমরাও পিছিয়ে নেই। প্রযুক্তি, গল্পে এগিয়ে যাচ্ছি। নতুন চিন্তাচেতনা নিয়ে নির্মাতারা কাজ করছেন। দুটি কাজই শেষ করেছি। কিন্তু এখন চুক্তি থাকায় সেগুলো নিয়ে বলা বারণ। এই পেশাদারত্ব মনে চলতে হচ্ছে। কিন্তু নাটকের কথা যদি বলি, প্রত্যাশামতো গল্প পাচ্ছি না। তবে আমি আশাবাদী। অনেক সময় চাওয়া-পাওয়ায় মিল থাকে না। তারপরও চেষ্টা করে যাচ্ছি, বেছে কাজ করতে।
প্রথম আলো :
নাটকের শুটিংয়ে তো অনেক তারকা ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন, কেউ কেউ ভাইরাল হতে চান...
ভাই, আমি ভাইরাল হওয়ার দৌড়ে নাই। নিজের অভিনয়টা ঠিকমতো করে যেতে চাই। একটা কাজেই মনোযোগ দিতে চাই। আমি নিজের কাজটি ভালো করে করলে দর্শক আমাকে পছন্দ করবেনই। সেই আস্থা আছে। যে কারণে ভাইরাল ট্রেন্ডে গা ভাসাই না। যান্ত্রিক জীবন, প্রতিযোগিতা, দৌড় এসব আমার পছন্দ নয়। যে কারণে আমি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করি না।
প্রথম আলো :
এখন কি মনে হয় পর্দায় বেশি থাকতে হবে?
না না। সেই সময় আমি অনেক আগেই পার করে এসেছি। এখন আর সব সময় পর্দায় নিজেকে দেখানোর কিছু নেই। দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছি। তাঁরা আমাকে চেনেন, সম্মান করেন। জায়গাটা ধরে রাখতে চাই। কিন্তু আমি শুটিংয়ের লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে থাকলে অনেক ভালো থাকি। বাসায় গেলে আমার স্বামী মাঝেমধ্যে জানান, শুটিং থেকে ফেরার পর নাকি আমাকে বেশি সতেজ লাগে। আসলে শুটিংয়েই তো আমার বেশি সময় কেটেছে। এই পরিবেশ সবার সঙ্গে দেখা হয়, আড্ডা হয়, কর্মব্যস্ততা এসবই ভালো লাগে।
প্রথম আলো :
শুটিং না থাকলে সময় কাটে কীভাবে?
আমি পুরোপুরি ঘরকুনো মানুষ। তখন একেবারে গৃহিণী হয়ে যাই। সন্তানকে সময় দেওয়া হয় বেশি। সে আমার খুব নেওটা। সারাক্ষণ আমার পেছনে ঘুরঘুর করে। ওকে স্কুলে নিয়ে যাই নিয়ে আসি। কখনো বাইরে ঘুরতে যাওয়া হয়। নিজেকে সময় দিই। আমার মা-বাবা রয়েছেন, তাঁদের সময় দিই।
প্রথম আলো :
এই সময়ের নাটক দেখা হয়?
আমি নাটক দেখি। অনেক ভালো ভালো নাটক হচ্ছে। কিন্তু সংখ্যায় কম হওয়ায় অন্য কাজের ভিড়ে হয়তো সেগুলো নিয়ে কম আলোচনা হচ্ছে। অনেক অভিনয়শিল্পী ভালো করছেন। তাঁদের নাম ধরে বললে কেউ হয়তো বাদ পরবে। তরুণেরাও কিন্তু ভালো করছে। কিন্তু বেশি কাজ হওয়ায় গল্প হয়তো অনেকে ভালো পাচ্ছেন না। যেটা আমিও বলি, শিল্পী হিসেবে গল্পের জায়গায় চাওয়া-পাওয়ার প্রত্যাশার মিল থাকে না। বিষয়টা তো প্রযোজক ও পরিচালকের ওপর। তবে ঈদে পাঁচটির মতো নাটকে কাজ করেছি। চঞ্চল ভাইয়ের সঙ্গে এখন ঈদের সাত পর্বের নাটকের শুটিং করছি। দারুণ গল্প। ভালো লাগছে অভিনয় করে।