প্রথম আলো :
অভিনয়ে কীভাবে আসা?
অ্যাথেনা অধিকারী: অভিনয়ে আসার কোনো ইচ্ছা ছিল না। পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। চীনে গিয়েছিলাম পড়াশোনা করতে। ২০১৯ সালে শীতের ছুটিতে দেশে আসি। কিছুদিন পর শুরু হয় করোনা মহামারি। লকডাউনে ঘরে বসা। সারা বিশ্বের মতো দেশের অবস্থাও ভালো না। পরের বছর মনে হলো, আর কত দিন বসে থাকব, তখন শুটিং শুরু করি।
প্রথম আলো :
শুটিং ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগটা কীভাবে তৈরি হলো?
অ্যাথেনা অধিকারী: চীনে যাওয়ার আগে ক্লাসের এক বন্ধুর কথা শুনে দল বেঁধে শুটিংয়ে গিয়েছিলাম। একদমই শখের বসে। সে সময় ব্যাকগ্রাউন্ড আর্টিস্ট হিসেবে বেশ কিছু বিজ্ঞাপনে কাজ করি। তখন অনেক সহকারী পরিচালক, শুটিংয়ের কো-অর্ডিনেটর আমার নম্বর নিয়েছিলেন। প্রায়ই ফোন করে জানতে চাইতেন, কাজ করব কি না। করোনার সময়ও অনেকই ফোন করেন। তখন মনে হয়, বসে থাকার চেয়ে কিছু একটা করি।
প্রথম আলো :
এখনো কি শখে অভিনয় করেন?
অ্যাথেনা অধিকারী: এখন অভিনয় আমার জীবন হয়ে গেছে। শুরুতে মডেলিং, র্যাম্পে হাঁটা, ফটোশুটসহ অনেক কিছুর জন্যই ডাক পেতাম। সেসব শখে করলেও এখন অভিনয়কে আমি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই। অভিনয়কেই আমি পেশা হিসেবে নিয়েছি।
প্রথম আলো :
পরিবারের উৎসাহ পেয়েছেন?
অ্যাথেনা অধিকারী: মা চাইতেন আমি নায়িকা হই। মা তাঁর জায়গা থেকে সেই উৎসাহ দিয়েছেন। এ জন্যই হয়তো এখন মানিয়ে নিতে পেরেছি। ভাবতে পারি যে অভিনয়টা চালিয়ে যাব।
প্রথম আলো :
অভিনয়কে চ্যালেঞ্জিং পেশা মনে হয়?
অ্যাথেনা অধিকারী: অবশ্যই। আমি শুরু থেকেই অভিনয়ে স্ট্রাগল করছি, করেই যাচ্ছি। মিডিয়ায় ভালো–খারাপ দুই ধরনের লোকই আছে। মাঝেমধ্যে মনে হয়, টিকে থাকতে পারব না। তখন খুব কষ্ট লাগে। আবার মনে হয়, যদি সততার সঙ্গে পরিশ্রম করি, তাহলে তো আমি তার ফল একদিন না একদিন পাবই। সেই ভরসাতেই কাজ করে যাচ্ছি।
প্রথম আলো :
অভিনয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা আছে?
অ্যাথেনা অধিকারী: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। কিন্তু আমি যখন সিরিয়াসলি অভিনয় শুরু করি, তখন থেকেই আফরান নিশো ভাই, অপূর্ব ভাই, মেহজাবীন-ফারিণ আপুসহ অনেকের কাজ কাছ থেকে শিখেছি। ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করতাম। কিন্তু সবার অভিনয় মনোযোগ দিয়ে দেখতাম, পর্যবেক্ষণ করতাম।
প্রথম আলো :
কী শিখতে পেরেছেন?
অ্যাথেনা অধিকারী: নিশো ভাইয়ের সঙ্গে সিন্ডিকেট-এ শুটিং করার সময় তিনি আমাকে অভিনয়ের অনেক কৌশল শিখিয়েছেন। আমি তাঁর ছোট বোনের চরিত্রে অভিনয় করেছি। অপূর্ব ভাই শিখিয়েছেন, সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে আর কার কাছ থেকে কী আদায় করতে হবে সেগুলো শিখিয়েছেন। অভিনয় বিষয়ে ধারণা দিয়েছেন। মেহজাবীন আপুসহ সবার কাছ থেকে শিখেছি, এখনো শিখছি। যেহেতু নিয়মিত কাজের ডাক আসছে, তাই এখন কাজ করতে চাই। সময় নিয়ে আমি দেশের বাইরে অভিনয় শিখতে যাব।
প্রথম আলো :
আপনার পছন্দের অভিনেত্রী কে?
অ্যাথেনা অধিকারী: প্রথমেই বলব মেহজাবীন আপুর কথা। কীভাবে ক্যারিয়ার গড়তে হবে, ক্যারিয়ার পরিকল্পনা, কীভাবে সব সামাল দিতে হবে, এগুলো সুন্দরভাবে করতে পারেন মেহজাবীন আপু। তিনি অনেক সিরিয়াস, গোছানো। সে কারণেই কিন্তু এত বছর পরে সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন। মেহজাবীন আপু আমার আদর্শ। আপুর সঙ্গে আমার সেভাবে পরিচয় নেই, কিন্তু একসঙ্গে কাজ হয়েছে। একবার আমি ভুল করায় তিনি বিরক্ত হয়েছিলেন। এখান থেকেও আমি অভিনয়ে সিরিয়াস হওয়ার বড় একটা শিক্ষা পেয়েছি। আর অপি করিম ও নুসরাত ইমরোজ তিশা আপুর অভিনয়ের ভক্ত আমি।
প্রথম আলো :
পরে আর চীনে পড়াশোনা করতে যাননি?
অ্যাথেনা অধিকারী: চীনে পড়ার জন্য অপেক্ষা করলে আমাকে তিন বছর বসে থাকতে হতো। বর্তমানে দেশেই ফ্যাশন ডিজাইনিং টেকনোলজি নিয়ে পড়ছি। পড়াশোনা ও অভিনয় একসঙ্গেই চলছে। এখন অভিনয়ে অনেক মনোযোগ দিয়েছি।
প্রথম আলো :
আপনার নাটক ট্রেন্ডিংয়ে আছে, ট্রেন্ডিং নিয়ে ভাবনা কী?
অ্যাথেনা অধিকারী: ট্রেন্ডিংকে কাজের সফলতার একটা মান ধরা যায়। বোঝা যায় যে নাটকটি সফল। এটাকে আমি ইতিবাচকভাবে দেখি। আবার কোনো কাজ ট্রেন্ডিংয়ে না গেলে যে হতাশ হব, বিষয়টা তেমন নয়। কারণ, আমি পছন্দ করেই গল্পে নাম লেখাই। মাঝেমধ্যে ভাই-বন্ধু সম্পর্কের কারণে হয়তো দুই–একটা কাজ বাধ্য হয়ে করি। বেশির ভাগ গল্পই আমার পছন্দের।