আর্জেন্টিনার জয়ে নেই উচ্ছ্বাস, চঞ্চল বললেন, আমি ভালো নেই
খেলা নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর। আর্জেন্টিনার এই সমর্থক বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই খেলা নিয়ে ফেসবুকে সবর ছিলেন। প্রিয় দলের খেলার আগে থেকেই ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সমর্থন দিয়ে এগিয়ে রাখেন। মেসির জয় আর রেকর্ডের প্রশংসা করে ভক্তদের সঙ্গে খুশি ভাগাভাগি করেন। সেই চঞ্চল চৌধুরী হঠাৎ থেমে গেলেন। বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্য যখন মেসিরা টিকিট পেলেন, তখনো খেলা নিয়ে চুপ চঞ্চল। অবশেষে জানা গেল, চঞ্চলের মন ভালো নেই।
হঠাৎ চঞ্চলের কি হলো, এ প্রশ্ন ছিল ভক্তদের। অবশেষে আজ ফেসবুক পোস্টে এই অভিনেতা জানালেন, তিনি ভালো নেই।
এর কারণ, তাঁর বাবা ভালো নেই। বার্ধক্যের কারণে তাঁর বাবা এখন হাসপাতালে ভর্তি। চঞ্চল লিখেছেন, ‘কয়েকটা দিন হলো, বাবা হাসপাতালের বিছানায় অচেতন। চোখের জলে আমাদের বুক ভেসে যায়, আর প্রার্থনা করি, আমার বাবা সুস্থ হয়ে উঠুক। বাবা-মাকে হাসপাতালের বিছানায় রেখে কোনো সন্তানই ভালো থাকতে পারে না। আমিও ভালো নেই।’
গত ৬ নভেম্বর প্রথম আলোর কর্মী উৎসবে চঞ্চল চৌধুরী প্রসঙ্গক্রমে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা বার্ধক্যের কারণে ভালো নেই। সেই সময় তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি, নাটক-সিনেমা করছি। আমি যা-ই করতাম, সেগুলোর খবর প্রকাশিত হতো। সেই খবরের কাটিং বাবা ঘরের দেয়ালজুড়ে লাগিয়ে রাখত। কষ্টটা আমার এখানেই, বাবার বয়স এখন অনেক বেশি। বাবা আর প্রথম আলো কেটে আমার ইন্টারভিউটা লাগাতে পারে না!’
বাবা যখন হাসপাতালের বিছানায়, তখন অনেক ভাবনাই মনে জড়ো হচ্ছিল চঞ্চলের। ঘুরেফিরে তাঁর মন জুড়ে ছিলেন বাবা। সেই কথাই ভক্তদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে চঞ্চল লিখেছেন, ‘বাড়ির উঠোনেই স্কুল, বাবা সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। যে কারণে স্কুলের মাঠ, গাছপালা, স্কুলঘর, বইপত্র—সবকিছুকেই পৈতৃক সম্পত্তি ভাবতাম। শৈশবে যতটা ভালো ছাত্র ছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি ছিলাম দুরন্ত। যদিও রোল নম্বর সব সময়ই এক থেকে তিনের মধ্যে।’
সৎ ব্যক্তি ও গুণী শিক্ষক হিসেবে তাঁর বাবা দুলাল মাস্টারের যেমন সুনাম ছিল, তেমনি আশপাশের সবাই একনামে এখনো চেনেন। একসময় কোথায়ও গেলে দুলাল মাস্টারের সন্তান হিসেবে সমাদর পেতেন। কয়েক বছর আগপর্যন্তও দুলাল মাস্টারের সন্তান হিসেবেই এলাকায় সবাই চঞ্চলকে চিনত। চঞ্চল লিখেছেন, ‘বাবাকে একদিন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ছোটবেলা থেকে তোমার পরিচয়ে পরিচিত হয়ে এসেছি। এখন তোমাকে কেউ যখন চঞ্চল চৌধুরীর বাবা বলে চেনে, তোমার কেমন লাগে? বাবা কোনো উত্তর না দিয়ে আমার দিকে শুধু ভেজা চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিল। তাঁর সেই গর্বিত মুখটা দেখে, আমার চোখ দুটোও ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। সন্তানের সব সফলতায় বাবা-মায়ের যে কী শান্তি, কী আনন্দ…তা আমি দেখেছি।’