চেনা চরিত্রের অচেনা উপস্থাপন ‘এমন যদি হতো’ নাটকে
পাতায়ার রাস্তা দিয়ে দৌড়ে আসছে প্রাগৈতিহাসিক উপন্যাসের চরিত্র ভিখু। ধুতি আর বাবা গেঞ্জি পরা এক হাত অবশ, সেই হাত ধরে ছুটছে। এদিকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা তার দরবার খুঁজে পাচ্ছে না। সে দরবার খুঁজছে। গোপাল ভাঁড়ের হয়েছে জ্বালা। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র জরুরি খবর পাঠিয়েছেন, পাতায়ার রাস্তা ধরে হাঁটছেন হাঁটছেন কিন্তু গোপালের হাঁটা শেষ হচ্ছে না। ওদিকে দেবদাস বেশ খুশি, চারদিকে এত পানশালা...। কুবের আর কপিলা সমুদ্রের পাড়ে বসে কথা বলছে। এসব ‘এমন যদি হতো’ নাটকের দৃশ্য।
জোভান, তৌসিফ, মিশু সাব্বির, কেয়া পায়েল, সামিরা খান মাহি, টয়া, রোদসী, চাষী আলম, সাজু খাদেম, শতাব্দী ওয়াদুদ, তানিয়া আহমেদ, মাহা, মুসাফির সৈয়দ বাচ্চু, মুকিত জাকারিয়া, আজাদ আবুল কালামসহ একঝাঁক তারকা নিয়ে থাইল্যান্ডের পাতায়াতে নির্মিত হয়েছে ভিন্নধর্মী এক ধারাবাহিক নাটক ‘এমন যদি হতো’। রাজিবুল ইসলামের লেখা এ নাটকটি পরিচালনা করেছেন যৌথভাবে সাইদুর রহমান রাসেল ও আবু হায়াত মাহমুদ।
১ জুলাই থেকে এর প্রচার শুরু হচ্ছে মাছরাঙা টেলিভিশনে। প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে প্রচারিত হবে নাটকটি।
নাটকের একটি অংশে দেখা মেলে পদ্মা নদীর মাঝি চরিত্রে কুবের ও কপিলাকে। কপিলা বলেন, মাঝি, আমারে তুমি কই নিয়া আইলা? কুবের বলে, আমিও তো বুঝতাছি না কপিলা। মনে হয় আমরা পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাস থেইকা আরেক গল্পে ঢুইকা গেছি। রিসোর্টে গাছের ওপর লাল সালু বিছিয়ে বসে যায় মজিদ। হলুদ পাঞ্জাবি পরে এই গরমে খালি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে হিমু হাজির হয় রূপার সামনে। উপন্যাস থেকে উঠে এসেছে শেষের কবিতার লাবণ্য, মাসুদ রানার সোহানী, নবাব সিরাজউদ্দৌলা, লুৎফা।
আসলে হচ্ছেটা কী? গল্পের আরেক চরিত্র শারমিন একজন জনপ্রিয় লেখক। ইদানীং কিছুই লিখতে পারছেন না। রাইটার্স ব্লক কাটাতে গিয়েছেন পাতায়াতে। সঙ্গে বেশ কিছু বই। দিনরাত বই পড়তে পড়তে হঠাৎ করে উপন্যাসের বেশ কিছু চরিত্র সামনে চলে আসছে। হ্যালুসিনেশন হচ্ছে বুঝতে পারছেন; কিন্তু এই সময়ে থাইল্যান্ডের মতো দেশে এই চরিত্রগুলো পরস্পরের সঙ্গে কী করে, এটা দেখার ইচ্ছা তিনি সামলাতে পারছেন না। চরিত্রগুলোর বিচিত্র সব ঘটনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় গল্প।
ধারাবাহিকটি সম্পর্কে পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, বাঙালি জীবন ও সাহিত্যের বিখ্যাত কিছু চরিত্রের কাল্পনিক মেলবন্ধন নিয়ে আমাদের বিশেষ ধারাবাহিক ‘এমন যদি হতো’। এই ২০২৪ সালে যদি বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা দেবদাসের কিংবা আলাদিনের দৈত্য যদি লাবণ্যর মুখোমুখি হয়—তাহলে বিষয়টা কেমন হবে, তাই একজন লেখিকার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখানো হয়েছে। জনপ্রিয় চরিত্রগুলোকে আমরা যেভাবে চিনি না জানি, তার পাশাপাশি বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে ভিন্ন আঙ্গিকেও দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। সময়ের জনপ্রিয় শিল্পীরা এখানে অভিনয় করেছেন। সচরাচর এঁদের সবাইকে একত্রে দেখা যায় না। আশা করি দর্শকেরা নাটকটি উপভোগ করবেন।