এটিএন বাংলা: বাঙালির প্রত্যাশা পূরণে আরও এক ধাপ

১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলা

সম্প্রচারের যুগে একসময় বাঙালির কাছে টেলিভিশনই ছিল অতি আশ্চর্যের বস্তু। কারণ, এতে পর্দায় মানুষগুলোকে সশরীর দেখা যায়, তাঁরা কথা বলেন, হাত-পা সঞ্চালন করেন, যেন জীবন্ত মানুষ! এই অতি আশ্চর্য আজ আমাদের কাছে অতি চেনা কিছু। ব্যাপারটি একদিনে ঘটেনি। ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যে টেলিভিশন-যাত্রা শুরু হয়, আজ তা নানা পথপরিক্রমায় প্রচুর রঙিন টেলিভিশন চ্যানেলে এসে পৌঁছেছে। দীর্ঘ এই পথপরিক্রমায় এটিএন বাংলা টেলিভিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কারণ, বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলা। ১৯৮০ সালের মধ্যে স্যাটেলাইট টেলিভিশন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৮২ সালে যুক্তরাজ্যের প্রথম স্যাটেলাইট চ্যানেল (স্কাই ওয়ান) চালু হয়।
অন্যদিকে ভারতে স্যাটেলাইটভিত্তিক টেলিভিশন পরিষেবার খাতে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে জিটিভি ও সনি টিভির মতো কয়েকটি ভারতীয় চ্যানেল চালু হয়েছিল। সেদিক থেকে বাংলাদেশে ‘অবিরাম বাংলার মুখ’ স্লোগান বুকে ধারণ করে ১৫ জুলাই ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলা। সময়ের বিচারে এটি খুব বেশি বিলম্ব নয়। বরং আমাদের দেশের সম্প্রচার বাস্তবতার নিরিখে এটি একটি বৈপ্লবিক কর্ম। ১৫ জুলাই ১৯৯৭ বিশ্বব্যাপী প্রথম বাংলা ভাষার সম্প্রসারণ ঘটে জনপ্রিয় এই বাংলাদেশি চ্যানেলটির মাধ্যমে।

পৃথিবীর যে প্রান্তেই দর্শক থাকুক না কেন, এই চ্যানেলে তাঁরা বাংলায় প্রচারিত অনুষ্ঠানমালা উপভোগ করতে পারেন। আর এমন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল স্থাপন করে এটিএন বাংলা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার মহান কর্মটি গ্রহণ করে। এই চ্যানেলের উদ্যোক্তা হিসেবে যিনি, সে সূত্রেই ইতিহাসের অংশ হয়ে যান, তিনি ড. মাহফুজুর রহমান। শুধুই ব্যবসা নয়, বাঙালি জাতির প্রতি একটি বিশেষ কমিটমেন্ট বাস্তবায়ন যেন তাঁর বিশেষ লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে তিনি আজ নিশ্চিতভাবেই সফল। তাই এটিএন বাংলা যেন শুধু টেলিভিশন চ্যানেলই নয়, এটি একটি চেতনার নাম, একটি কমিটমেন্টের বাস্তবায়ন।
সরকারি টেলিভিশনের একমুখী ও গতানুগতিক অনুষ্ঠানধারার বাইরে এটিএন বাংলা প্রথম বিচিত্রমুখী ও আকর্ষণীয় অনুষ্ঠানমালার সূচনা করে। আমি নিজে এর একটি অনুষ্ঠানে প্রায় নিয়মিত অংশগ্রহণকারী ছিলাম। জাতীয় অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলামের উপস্থাপনায় ‘কথামালা’ নামের সেই অনুষ্ঠানটিকে বলা হতো টেলিভিশন সেমিনার। বোদ্ধা দর্শক ও শ্রোতাদের কাছে অনুষ্ঠানটির একটি আলাদা আকর্ষণ ছিল। মুস্তাফা নূরউল ইসলাম যত দিন বেঁচে ছিলেন, তত দিন এ অনুষ্ঠান করে গেছেন। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এমন গুরুগম্ভীর বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠান এবং যেখানে দর্শকও নির্দিষ্ট, তা দিনের পর দিন করে যাওয়ার মধ্যে কোনো বাণিজ্যিক ব্যাপার ছিল না, ছিল বাঙালি জাতি ও সংস্কৃতির প্রতি দায়শোধের চেষ্টা। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মানেই সস্তা বাণিজ্য করার নামে যেনতেন অনুষ্ঠান প্রচারের ব্যাপারটি এটিএন বাংলার ক্ষেত্রে খাটে না। কারণ, এমন অনেক অনুষ্ঠান জেনেশুনেই এটিএন বাংলা প্রচার করেছে, যেগুলো দিয়ে বাণিজ্যের সম্ভাবনা ছিল না। যেমন ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনগোষ্ঠীর দুনিয়া ও আখিরাতের মুক্তির লক্ষ্যে করণীয় ও উপদেশ নিয়ে ১৯৯৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে তিন ঘণ্টাব্যাপী সাপ্তাহিক ইসলামি অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি এখনো চলমান এবং ইতিমধ্যে জনপ্রিয়তাও অর্জন করে।

শুধু অনুষ্ঠান নিয়েই চিন্তা করেনি এটিএন বাংলা। প্রযুক্তির বিকাশে বিশ্বসম্প্রচারক্ষেত্র যখন বদলে যায়, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তখন এটিএন বাংলাও বদলে ফেলে। ১৯৯৯ সালের মে মাসে অ্যানালগ থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করা হয় চ্যানেলটি। ভারতে যেখানে ১৯৯৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর টেলিযোগাযোগ আইন পাস হয় এবং সে সূত্র ধরেই তারা ডিজিটালাইজেশনের দিকে যাত্রা করে, সেখানে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের এটিএন বাংলার ডিজিটালে রূপান্তর বিশেষ উল্লেখযোগ্য বৈকি! এটিএন বাংলা মিলেনিয়াম ২০০০, বিশ্বব্যাপী বাংলা সংস্কৃতি প্রচার-প্রসারে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে তার ইউরোপ-সম্প্রচারের মাধ্যমে। ইউরোপে যে বিপুলসংখ্যক বাঙালি থাকেন এবং যার উল্লেখসংখ্যক বাংলাদেশি, তাদের সামনে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি তুলে ধরে সেই ভাষা-সংস্কৃতিকে সুদূর ইউরোপে বিস্তৃত করার মহান লক্ষ্য ছিল এর পেছনে।
এই ইউরোপ-সম্প্রচারের লক্ষ্যকে মুখ্য করে এটিএন বাংলা আয়োজন করে একাধিকবার একাধিক দেশে উন্নতমানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও সাংস্কৃতিক বন্ধন সুদৃঢ় হয়। কেননা এ আয়োজনে সঙ্গী ছিলেন বাংলাদেশের প্রিয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা। ১৬ আগস্ট, ২০০১ গুটিকয় সংবাদকর্মী নিয়ে এটিএন বাংলা যাত্রা শুরু করে সংবাদ প্রচারের। নিরপেক্ষতার চূড়ান্ত পরাকাষ্ঠা দেখানোর কারণে এই সংবাদ সাধারণ দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই অন্যান্য অনেক টেলিভিশনের সংবাদের জনপ্রিয়তাকে পেছনে ফেলে। এ যেন এক বিস্ময়! এ বিস্ময়ের পেছনে এটিএন বাংলার নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনা কার্যকর ছিল এবং তা অর্জন করে সাধারণ মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা।

বাংলা সংবাদের পাশাপাশি দর্শকের চাহিদা মেটাতে ২০০২ সালের ১ অক্টোবর থেকে এটিএন বাংলায় ইংরেজি সংবাদ প্রচারও শুরু হয়। আন্তর্জাতিকভাবে এই সংবাদ পরিবেশনা বেশ প্রশংসিত হয়। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র-ইরাক যুদ্ধের ওপর বিশেষ বুলেটিন দিয়ে শুরু হয় প্রতি ঘণ্টার সংবাদ সম্প্রচার। ফলে এটিএন বাংলার সংবাদ হয়ে ওঠে দেশের সেরা ও নিরপেক্ষ সংবাদ প্রচারের পীঠস্থান। ২০০৪ সালের ২২ নভেম্বর ছোটদের তৈরি ‘আমরাও পারি’ অনুষ্ঠানের জন্য ছোট পর্দার অস্কারখ্যাত এমি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে আসে এটিএন বাংলা। ২০০৬ সালে এটিএন বাংলার পথচলা নতুন বাঁক নেয় অস্ট্রেলিয়ার দিকে। অস্ট্রেলিয়ায়ও অনেক বাঙালির বসবাস। তাঁদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এটিএন বাংলা। ২০০৭ সালে এটিএন বাংলা শুরু করে বাংলাদেশের আরেক ইতিহাস, ‘বি-লিগ ফুটবল খেলা’ যা বাংলাদেশে প্রথম পেশাদার ফুটবল লিগ। এটি সরাসরি সম্প্রচার করে এটিএন বাংলা ঢাকা স্টেডিয়াম থেকে। এখন ক্রীড়া মানেই এটিএন বাংলা। সবার আগে সব ক্রীড়ায় খেলাধুলার পাশাপাশি এটিএন বাংলার আয়োজন করে ‘এটিএন তারকা’, ‘সাদামনের মানুষ’, ‘তিন চাকার তারকা’, ‘নির্মাণ তারকা’সহ একাধিক অনুষ্ঠান। ২০০৯ সালে মাহফুজুর রহমান, বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতাকে নিয়ে নির্মাণ করেন সঠিক উপাত্ত ও সত্যনির্ভর তথ্যচিত্র ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’। এটা যেন বাঙালির চির-আকাঙ্ক্ষার এক অনবদ্য প্রতিফলন। ২০১০ সালে ৪০ ওভারের প্রমীলা লিগ সরাসরি সম্প্রচার, ত্রিদেশীয় ক্রিকেট লিগ সম্প্রচার এবং লঙ্গার ভার্সন ক্রিকেট সম্প্রচারের অভিজ্ঞা ও অর্জিত হয় এটিএন বাংলার।

একই বছর এটিএন বাংলার আঞ্চলিক এমি অ্যাওয়ার্ড পাওয়া আরও একটি সফল সংযোজন। পরের বছর সাউথ এশিয়ান উইমেন ফুটবল কক্সবাজার থেকে সব কটি খেলা সরাসরি সম্প্রচার করে এটিএন বাংলা। একই বছর উইমেন্স ওয়ার্ল্ড কাপ কোয়ালিফাইং ক্রিকেট সম্প্রচার করা হয় শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে। এ বছর এটিএন বাংলা ফ্রান্স থেকে ইন্টারন্যাশনাল কমিটমেন্ট অ্যাওয়ার্ড লাভ করে। ইউনিসেফ কর্তৃক ২০১১ সালের ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন ডে অব মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড (আইসিডিবি) লাভ করে এটিএন বাংলা। একই সঙ্গে এটিএন বাংলা লাভ করে আরেক দুর্লভ সম্মান, ইউনিসেফ কর্তৃক গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড ও এটিএন বাংলার কর্ণধার ড. মাহফুজুর রহমানকে দেওয়া হয়েছিল লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড। ২০১৩ সালে শুরু করে দেশব্যাপী একাধিক রিয়েলিটি শো, টেলিভিশন নাটক রচয়িতা, নির্মাতা, অভিনেতা নির্বাচনের জন্য ‘নাট্যযুদ্ধ’, চলচ্চিত্রশিল্পী নির্বাচনের উদ্দেশ্যে ‘সিনেস্টার’।
একই বছর এটিএন বাংলা ও বাংলাদেশের হকি ফেডারেশন যৌথভাবে আয়োজন করে দেশব্যাপী জাতীয় স্কুল হকি টুর্নামেন্ট ২০১৩। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া অনেকগুলো দায়িত্ব এখনো এটিএন বাংলার কর্মীরা নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের একান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তার মধ্যে অন্যতম সিটি তারকা, রান্নাবিষয়ক প্রতিযোগিতা ‘সেরা রন্ধনশিল্প’। মুজিব শতবর্ষে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে নানা আয়োজনে নিজেদের সম্পৃক্ত করা ও মহামারি করোনার যোদ্ধা হিসেবে নিজেদের এগিয়ে রেখে গণসচেতনতা বাড়ানোসহ অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করেছে এটিএন বাংলা। এটিএন বাংলার পক্ষ থেকে ছিলেন করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন সরবরাহ, বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্সসেবা ও মৃত মানুষের সৎকারের ব্যবস্থা। এই ক্রান্তিকালে এটিএন বাংলা ছিল সামাজিক, ধর্মীয় দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট। মুজিব শতবর্ষ ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক আকারে নিজেদের সম্পৃক্ত করে মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বহু সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে তারা সচেষ্ট। ২০২২ সালে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর লোগো উন্মোচনসহ জয়ন্তীর বহু সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয় এটিএন বাংলা। এ ছাড়া দেশের সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারদের সঙ্গে মুজিব শতবর্ষ ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে এটিএন বাংলা। এটিএন বাংলার জন্য ২০২৩ সালটি ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ বছরই এটিএন বাংলার রজতজয়ন্তী পূর্ণ হয়।

রজতজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে চলে সারা বছরব্যাপী নানা আয়োজন। সামাজিক দায়বদ্ধতার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন তুলে ধরাসহ নানা রঙিন অনুষ্ঠান দিয়ে দর্শকনন্দিত ছিল এ বছরও। এটিএন বাংলা রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক দায়বদ্ধতা বজায় রেখে এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে তার নিজস্ব স্বপ্ন বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায়। এভাবেই দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে এটিএন বাংলা অবিরাম বাংলার মুখ হয়ে বাঙালির ভাষা, বাংলাদেশ, বাংলা সংস্কৃতির প্রসার ও প্রচারে লাল-সবুজের এই জমিনের প্রতিনিধি হয়ে বিশ্বদরবারে সবার ভালোবাসায় পথ চলেছে। ঠিক এ কারণেই, বিশ্বের সব বাংলাভাষী মানুষের কাছে এখনো এটিএন বাংলা এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে জ্বলজ্বল করে সংস্কৃতির আকাশমণ্ডলে। ‘অবিরাম বাংলার মুখ’ স্লোগান বুকে ধারণ করে আগামীর পথচলায় নতুন নতুন দিক উন্মোচন করবে এটিএন বাংলা—এটাই হোক আগামী দিনের অঙ্গীকার।
সৌমিত্র শেখর। উপাচার্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়