‘শাবনূর, মৌসুমী আপুরা কিন্তু এগিয়ে ছিলেন’

ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ক্যারিয়ার শুরু করেন আইশা খান। বুক পকেটের গল্প জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর ঠিক করেছেন, নাটকে নিয়মিত হবেন। তাঁর অভিনীত নাটক ‘তুই জীবন’ এখন ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে শীর্ষে রয়েছে। এ ছাড়া দুটি সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন এই তরুণ অভিনেত্রী। এসব নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বললেন মনজুরুল আলম

প্রথম আলো :

ঈদের পর কি কাজ শুরু করেছেন?

আইশা খান: এখনো শুরু করা হয়নি। তবে শুক্রবার থেকে আবার নিয়মিত হচ্ছি নাটকে। ঈদের আগে নাটকের কাজ, সিনেমা নিয়ে খুবই ব্যস্ত ছিলাম। যে কারণে এখন একটু নিজেকে, পরিবারকে সময় দিচ্ছি। আগে থেকেই এই বিরতি নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

প্রথম আলো :

আগে তো ওটিটিতে বেশি দেখা যেত, এখন কি নাটকেও নিয়মিত হবেন?

আইশা খান: আমি একটু একটু করেই এগোতে চাই। সেভাবেই কিন্তু ওটিটিতে কাজ করছিলাম। পাশাপাশি কিছু নাটকও করেছি। কিন্তু নাটকে নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছা ছিল না। এর মধ্যে বুক পকেটের গল্প করার পর অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি ভক্তদের কাছ থেকে। ওটিটিতে কত মানুষ কাজ দেখছে, সেটা সরাসরি বোঝা যায় না কিন্তু নাটকের ভিউ দেখে এটা বোঝা যায়। আমাদের নাটকটি এত পরিমাণ দর্শক পছন্দ করেছেন, যে কারণে পরে মনে হয়েছে, আমি নাটকেও নিয়মিত অভিনয় করব।

আইশা খান। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রথম আলো :

‘শেকড়’ ও ‘সংবাদ’ নামে দুটি সিনেমায় অভিনয় করলেন। সিনেমায় আপনার শুরুটা কীভাবে?

আইশা খান: আমি শৈশবে নাচ করতাম। পাশাপাশি কিছু নাটকেও অভিনয় করেছি। কিন্তু আমার ইচ্ছা ছিল উপস্থাপনা করার। একটু একটু করে নিজেকে গড়ছিলাম। বেশ আগে মোরশেদুল ইসলাম ইসলাম স্যারের একটি নাটকে অভিনয় করেছিলাম। সেই সূত্রেই পরবর্তীতে প্রথম নাম লেখাই আহত ফুলের গল্প নামে একটি সিনেমায়। ২০১৮ সালে সিনেমাটি মুক্তি পায়। মায়ের ইচ্ছা ছিল, আমি সিনেমায় অভিনয় করি। গল্প, চরিত্র পছন্দ হওয়ায় তখন কাজ করেছিলাম।

প্রথম আলো :

সিনেমায় নিয়মিত অভিনয় করার ইচ্ছা আছে?

আইশা খান: ইচ্ছা তো আছেই। তবে এখন শৈল্পিক ঘরানার সিনেমায় অভিনয় করতে চাই। এখনো আমি বাণিজ্যিক সিনেমার জন্য প্রস্তুত নই। পারিপার্শ্বিক অনেক বিষয় এর সঙ্গে জড়িত। যে কারণে এখন চাই না। কিন্তু বাণিজ্যিক সিনেমা যে করব না, সেটা কিন্তু নয়। আমি দক্ষিণ ভারতের সিনেমার ভক্ত। তারা বিগ বাজেটের সিনেমা বানায়। সেই বাজেট আমাদের নেই। তবে সম্প্রতি আমাদের তুফান সিনেমাও ভালো করেছে। পরাণ, সুড়ঙ্গ, হাওয়া সিনেমাগুলো দর্শকেরা পছন্দ করেছেন। আলাদা একটি দর্শকশ্রেণি তৈরি হচ্ছে। তাদের হতাশ করতে চাই না। আমার আরও অনেক কিছু শেখার আছে। সেই প্রস্তুতি নিয়েই দর্শকের সামনে আসতে চাই। ঈদের আগে যে দুটি সিনেমায় অভিনয় করেছি—প্রসূন রহমানের শেকড় আর সোহেল আরমানের সংবাদ। সিনেমা দুটির গল্প ও চরিত্রও ভালো। কাজগুলো এখনো শেষ হয়নি।

আইশা খান। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রথম আলো :

সিনেমায় অভিনয়ের ক্ষেত্রে কোন ভাবনাগুলো কাজ করে?

আইশা খান: সত্য বলতে, নব্বইয়ের দশকের পরের কথা যদি বলি, সেই সময়ের নায়িকাদের মধ্যে শাবনূর, মৌসুমী আপুরা অনেকেই কিন্তু অভিনয়ে এগিয়ে ছিলেন। সময়ের তুলনায় এগিয়ে ছিলেন। তাঁরা ভালো অভিনয় জানতেন। দর্শকেরা টাকা খরচ করে তাঁদের সিনেমা দেখেছেন। আমিও সেভাবেই আমার মতো করে প্রস্তুতি নিয়ে আসতে চাই। আমাকে অভিনয়ে আরও পরিণত হতে হবে, পাকাপোক্ত হয়ে সামনে আসতে হবে। আর যে কোনো ভুলই ভুল। সেটা সিনেমায় ছোট হলেও বড় দেখায়। ওটিটি, নাটক বা সিনেমা কোনো মাধ্যমেই আমি ভুল করতে চাই না। শিক্ষা নিয়েই আমি সামনে এগিয়ে যেতে চাই। এখন চরিত্রনির্ভর উৎসবকেন্দ্রিক সিনেমা করতে চাই।

প্রথম আলো :

আপনার অভিনীত নাটক ‘তুই জীবন’ এখন ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে নাটকের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। শুটিংয়ের আগে ভিউ কতটা ভাবায়?

আইশা খান: ভিউ নিয়ে ভাবি না। অনেক সময় প্রাপ্তির সঙ্গে প্রত্যাশার মিল থাকে না। দর্শক কোন নাটকটি দেখবেন, সেটা আগে থেকেই কিন্তু জানা যায় না। যে কারণে সব সময় গল্প ও চরিত্র ফুটিয়ে তোলার দিকে নজর থাকে। কিন্তু ভিউটা গুরুত্বপূর্ণ। দেখছি, বেশ কয় দিন ধরেই তুই জীবন নাটকটি ট্রেন্ডিংয়ে নাটকের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। এটাও ভক্তদের ভালোবাসা। আমার আর ফারহান ভাইয়ের ভক্ত মিলেই এটা হয়েছে। ভক্তদের কাছে কৃতজ্ঞ।

আইশা খান। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে