ফারহান, তিশার শুটিংয়ে বহিরাগতদের হামলা
গতকাল সোমবার টাঙ্গাইলে একটি ঈদ নাটকের শুটিংয়ে ভিড়কে কেন্দ্র করে শুটিং ইউনিট ও বহিরাগত লোকজনের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। শুটিং ইউনিটের পক্ষ থেকে আগত দর্শকদের সরতে বলায় উত্তেজিত হন স্থানীয় কিছু যুবক। পরে তাঁরা সংগঠিত হয়ে প্যান্টের বেল্ট, ইট দিয়ে অতর্কিত হামলা চালান বলে জানা গেছে। এমন ঘটনায় হতবাক শুটিং ইউনিটের সদস্যরা। কেউ কেউ এই হামলায় আহতও হন।
ঢাকার বাইরে শুটিংয়ে ভিড় হওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক। হাজার হাজার মানুষের ভিড় ঢেলে শুটিং করতে হয়। সেভাবেই গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শুটিং হচ্ছিল ‘ভিপি’ নাটকের। নাটকে অভিনয় করছেন মুশফিক আর ফারহান ও তানজিন তিশা। এই নাটকের শুটিংয়ের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আশপাশের স্থানকে। শুটিং চলার সময় প্রচণ্ড ভিড় ছিল। ভিড় সামলে শুটিং করতে হিমশিম খাচ্ছিল টিম। তখন ইউনিটের সহকারী পরিচালক ও প্রডাকশন বয় কিছু উৎসুক দর্শককে সরে যেতে অনুরোধ করেন। তাতেই দুই পক্ষের কথা-কাটাকাটি হয় বলে জানান পরিচালক মাহমুদ মাহিন।
পরিচালক মাহিন বলেন, ‘ঢাকার বাইরে শুটিংয়ে গেলে অনেক সময়ই এমন ঘটনা ঘটে। ভিড়টা সরাতে গিয়ে কথা-কাটাকাটি, হাতাহাতি হয়েছে। আমরা শুনেছি, এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ নন। এটা আমাদের জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আমরাও মর্মাহত। শুটিং বন্ধ রেখেছিলাম। পরে সব ঠিকঠাক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বড় ভাই, নেতৃত্বস্থানীয় কয়েকজন তিন–চার দিন ধরে আমাদের সাহায্য করে আসছেন। কালও তাঁরাই আমাদের পাশে ছিলেন।’ শুনলাম কয়েকজনের গায়ে হাত তোলা হয়েছে, তাঁদের অবস্থা কেমন? ‘না না। অতটা মারাত্মক নয়। তখনই শুটিং না থাকায় আমরা কিছুটা দূরে ছিলাম। পরে ঘটনা দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে আসি। সবাই কাছাকাছি থাকায় তেমন কিছু হয়নি। তবে এই ঘটনায় তাঁরাও সরি বলেছেন।’
ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ‘ভিপি’ নাটকের প্রধান অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান বলেন, ‘সে সময় ঘটনাস্থলে ছিলাম না। পরে জেনেছি। তবে ঠিকঠাক হয়ে গেছে। কিছু লোক এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁরা পরে এসে দুঃখ প্রকাশ করে গেছেন।’ কী হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুনেছি একটু সরতে বলায় কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। ঢাকার বাইরে আউটডোরে গেলে এ ধরনের সমস্যা হয়।’
নাম প্রকাশ না করা শর্তে শুটিং ইউনিটের একজন বলেন, ‘সহকারীর পরিচালক ইমতিয়াজ, অভিনেতা অঙ্কন কুন্তল, সৌরভসহ আরও অনেকে কিছুটা আহত হন। কারও কারও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরে শুটিং বন্ধ হয়ে যায়। আবার রাত ১০টার পর শুটিং শুরু হয়। মূলত সরতে বলায় তাঁরা উত্তেজিত হয়েছিলেন। আমরা জানতে পেরেছি, এখানে স্থানীয় রনিসহ কয়েকজন ছিলেন। তাঁরা নাকি ক্যাম্পাস এলাকায় উচ্ছৃঙ্খল হিসেবে পরিচিত।’
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এমবিএসটিইউ’ নামের একটি ফেসবুক কমিউনিটি ঘটনাটি নিয়ে স্ট্যাটাসে লিখেছে, ‘আজ সন্ধ্যায় মাভাবিপ্রবিতে নাটকের শুটিং চলাকালে, শুটিংয়ের আশপাশে থাকতে দেওয়া না দেওয়াকে কেন্দ্র করে নাটকের এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার সৌরভকে আক্রমণ ও মারধর করে পালিয়ে যায় বহিরাগতরা। বাহ! কী দারুণ অনুভূতি নিয়ে গেল অতিথিরা।’ এই স্ট্যাটাসের নিচে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বহিরাগত ব্যক্তিদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হওয়ার কথা জানিয়েছেন।