সৌমিত্রের বায়োপিক: ভুল তথ্যের অভিযোগ

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
ছবি: ফেসবুক

প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বায়োপিক ‘অভিযান’–এর শুটিং শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে। কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় বায়োপিকটির নির্মাণ শেষ হয় সৌমিত্রের মৃত্যুর পর। দুই বছর অপেক্ষার পর অবশেষ পয়লা বৈশাখে মুক্তি পায় সিনেমাটি। সিনেমায় সোমিত্রের তরুণ বয়সের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত এবং প্রৌঢ় বয়সের অভিনয় করেছেন স্বয়ং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সিনেমা মুক্তির কয়েক দিন পরই শুরু হয় বিতর্ক। অভিযোগ, সিনেমায় নাকি বেশ কিছু ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, যা প্রয়াত অভিনেতার পরিবার ও আত্মীয়দের হতাশ করেছে।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের আত্মীয় শ্রমণা ঘোষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, এমন অনেক দৃশ্য বা তথ্য ছবিতে রয়েছে, যা নাকি একেবারেই ভ্রান্ত। বিশেষ করে রণদীপের চিকিৎসার কারণে প্রচুর ছবি করতে হয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে।

এই তথ্য নাকি একেবারেই ভুল। এ রকম আরও তথ্য বিকৃতির অভিযোগ এনেছেন তিনি। তাঁর দাবি, স্বাভাবিকভাবেই ছবি দেখতে গিয়ে তাঁরা মানসিকভাবে আহত। পরিচালকের থেকে এটা তাঁরা আশা করেননি।

'অভিযান' শুটিং সেটে পরিচালক পরব্রতর সঙ্গে সৌমিত্র
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

শ্রমণার সেই পোস্ট সমর্থন করে সৌমিত্রকন্যা পৌলমী বসু ঘোষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘একেবারে শুরুতেই আমি বলে নিচ্ছি, এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমার বোন শ্রমণা ঘোষ যা লিখেছেন, তা সম্পূর্ণরূপে আমি সমর্থন করি। ধন্যবাদ তনু, এটা বলার দরকার ছিল। কেন বাবা এই ভুল দৃশ্যে অভিনয় করতে সম্মত হয়েছেন, তা আমি নিশ্চিত নই। এখন আমার হাত বাঁধা। কারণ, বাপি ওই দৃশ্যগুলো করেছেন। কিন্তু বাস্তব আর কল্পনা মিশ্রণ করলে যে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তা বাবা তা বুঝতে পেরেছেন কি না, তা নিয়ে প্রচণ্ড সন্দেহ আছে। যাদের আমাদের পরিবারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, সিনেমার এমন দর্শক এই সংস্করণ কিনবে এবং সৌমিত্রের শেষের দিনগুলোয় ঘটা বিষয়ে অনুশোচিত আলোচনা শুরু করবে। সত্যি বলতে এটা খুবই হতাশাজনক। এ ছাড়া এই তথাকথিত বায়োপিক থেকে বাদ পড়েছেন আমার বাবার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনেক মানুষ।’

ফাইনাল শট দেওয়ার আগে স্ক্রিপ্টের পাতায় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

ভারতীয় এক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, ‘অহেতুক বিতর্ক তোলার পক্ষপাতী আমি নই। আমার মনে হয়েছে, যেটুকু বলা দরকার, সেটুকুই পোস্ট করেছি।’ পৌলমীর অভিযোগের উত্তরে পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সব জানতেন। পৌলমীদিও ভালোভাবে জানতেন। শুধু তা–ই নয়, উনি নিজে নাটকের কিছু অংশের দৃশ্যে সাহায্য করেছেন। তখন তাঁর কিছু মনে হয়নি। এখন কেন মনে হচ্ছে, সত্যিই জানি না। ইতিমধ্যে দর্শকমহলে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে সিনেমাটি। বাণিজ্যিকভাবেও সিনেমাটি বেশ সফল।’