কলকাতায় প্রশংসিত ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’
কলকাতার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের ছবি ‘হাওয়া’ ঝড় তুলেছে। গতকাল সন্ধ্যায় নন্দনে ‘হাওয়া’ প্রদর্শনের আগে বেলা ১১টায় সেই নন্দনেই দেখানো হয়েছে বাংলাদেশ থেকে অংশ নেওয়া আরেকটি ছবি, ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’। উৎসবের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে একমাত্র বাংলাদেশি সিনেমা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে এটি। এই ছবিটিও প্রশংসা কুড়িয়েছে কলকাতার দর্শকদের। প্রদর্শনীতে তাঁরা ছবিটি মন দিয়ে দেখেছেন। ছবি দেখে তাঁরা এর কাহিনি ও নির্মাণ নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা করেছেন।
‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ছবিটির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে হাওরের ধান কাটা কৃষক পরিবারের জীবনসংগ্রাম নিয়ে। হাওরের দরিদ্র কৃষকদের জীবিকার লড়াই নিয়ে। ছবিটি নির্মাণ করেছেন মহম্মদ কাইয়ুম।
ছবিটি বাংলাদেশে প্রথম মুক্তি পেয়েছে গত ৪ নভেম্বর। এটি পরিচালকেরও প্রথম ছবি। চলচ্চিত্রটির প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে গিয়ে পরিচালক জানান, একদল কৃষিশ্রমিক ধান কাটার কাজে হাওরে যাচ্ছে। হাওরে একটি পরিবারের চাষাবাদ ও অন্যান্য গৃহস্থালি কাজকর্ম করার বার্ষিক চুক্তিতে এ দলের সঙ্গে যাচ্ছেন যুবক সুলতান। অশীতিপর এক বৃদ্ধের সংসারে তাঁর ঠাঁই হয়। এই পরিবারের একমাত্র ছেলে আগের বছর হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়ে পড়ে মারা যাওয়ায় পরিবারে কর্মক্ষম আর কেউ নেই।
ধ্রুপদি চিত্রলোক নিবেদিত এ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন জয়িতা মহলানবিশ, উজ্জ্বল কবির, সুমী ইসলাম, সামিয়া আখতার, বাদল শহীদ, মাহমুদ আলম ও আবুল কালাম আজাদ। সংগীতায়োজন করেছেন সাত্যকি ব্যানার্জি। প্রতিটি কলাকুশলী ছবিটিকে ফুটিয়ে তোলার জন্য চেষ্টার ত্রুটি করেননি। জীবন্ত করতে চেয়েছেন প্রতিটি দৃশ্যকে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন কলকাতার দর্শকেরা।
গতকাল দুপুরে নন্দনের প্রেস কর্নারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছবির পরিচালক মহম্মদ কাইয়ুম বলেছেন, ‘এটি আমার প্রথম ছবি। বিদেশের মাটিতেও প্রথম ছবি। ছবিটি আপনাদের ভালো লাগলে আমি ধন্য হব।’ তাঁর ভাষায়, ‘এটি বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষের চিরকালীন জীবনসংগ্রামের আখ্যান। যেখানে আমাদের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, লোকজ ঐতিহ্য এবং বিরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশে হাওরের জল ও কাদায় মাখা প্রান্তিক মানুষের গল্প বলা হয়েছে।’