ভয়ে সিরিজ দেখেননি শিল্পীর স্ত্রী-মেয়েও
ভূত চতুর্দশী বা দীপাবলি অথবা হ্যালোইন! ভারতে এ সময়টাই ভয় ধরানোর, ভয় দেখানোর। তাই তো ভয়ের সময়কেই ধরেছেন অভিনেতা পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। পর্ণশবরীর শাপের কথা মনে আছে? পাহাড়ি এলাকায় ঘুরতে যায় একটি দল। পরে সেই দলের একজনের অশরীরীর হাতে পড়া। একসময় চলে আসে ভাদুড়ি মশাই। তার জাদুতেই সে যাত্রায় রক্ষা পায় মেয়েটি। তবে এবার আর পাহাড়ি পরিবেশের ভৌতিক গল্প নয়, একেবারে অন্য ধাঁচের গল্প নিয়ে হাজির পরমব্রত।
এসে গেছে পরমব্রতের নতুন ভৌতিক সিরিজ ‘নিকষ ছায়া’।
সিরিজে দেখা মিলেছে এক পিশাচের। দেখতে ভয়ংকর। যার চোখগুলো নিষ্পলক। ভ্রু নেই। কান কাটা। শরীর থেকে গলে গলে পড়ছে চামড়া। দাঁতগুলো যেন করাতের চেয়েও ধারালো। সেই হাড় হিম করা পিশাচের উৎপাত শুরু হয় সিরিজের শুরু থেকেই। সরকারি হাসপাতালের মর্গ থেকে উধাও একের পর এক মরদেহ। দেখা যায়, মরদেহ খুবলে খাচ্ছে পিশাচ। এক ভয়ংকর পিশাচকে দেখে ফেলে মর্গে কর্মরত ব্যক্তিও। তবে শৈশবেই পিশাচের ট্রমায় থাকা অনুজয় চট্টোপাধ্যায় সব সময় দেখতে পায় সেই পিশাচকে। উৎকট গন্ধে গা গুলিয়ে আসে তার। পিশাচের নাম গেনু।
বাস্তবে এই পিশাচরূপী গেনু কে? সেটি অবশ্য পরিচালক পরমব্রত নিজেই জানিয়েছেন, ‘গেনুর পরিচয়, তিনি মঞ্চের শিল্পী পল্লব মুখোপাধ্যায়। এর আগে দুটি সিরিজে অভিনয় করেছেন। তবে পিশাচ চরিত্রটি কেমন লেগেছে শুনেই পর্দার গেনু বলেন, ‘দারুণ খুশি। কারণ, পরিচালক আমাকে প্ল্যাটফর্ম দিয়েছেন, আমি কৃতজ্ঞ।’
পল্লব কীভাবে মানুষ থেকে পিশাচ হয়ে উঠলেন, বললেন সে গল্পও। অভিনয়ের পাশাপাশি ২৩ বছর ধরে আছেন শিক্ষকতা পেশায়। উচ্চতা কম হওয়ায় কষ্টও ছিল। ক্লাসে প্রবেশ করলে বোঝাই যেত না কে শিক্ষক আর কে ছাত্র। তবু আক্ষেপ নেই পল্লবের। কারণ, এই উচ্চতার কারণেই ছাত্রদের কাছে যেতে পেরেছেন আর এখন দর্শকদের কাছে। গেনু হয়ে ওঠার গল্প বলতে গিয়ে পল্লব বলেন, অডিশনের ডাকের পর বিশ্বাসই হচ্ছিল না। অভিনয়ের ডাক পাওয়ার পর তিন ঘণ্টা সময় লাগত পিশাচ সাজতে। নকল দাঁত, লেন্স পরে থাকতে হতো। সাজার আগে পেটভরে খেতে হতো। কারণ, পরে সেই সুযোগ আর পাওয়া যেত না। মাঝেমধ্যে নিজেকে দেখে আঁতকে উঠতেন পল্লব।
গেনু পিশাচকে দেখে ভয় পাবেন বলে এখনো স্ত্রী-মেয়ে সিরিজটা দেখেননি। দুঃখ করে অভিনেতা পরিবারকে বলেন, ‘এখন তো দেখছিস না। যখন থাকব না তখন হয়তো দেখবি।’ যদিও গেনু পিশাচকে পুরোটা সময়ে সহযোগিতা করেছেন অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক। তিনিই তো ছিলেন গেনুর প্রভু ভানু তান্ত্রিক। সেই তান্ত্রিককে দেখেও ভয়ে হাড় হিম হয়ে আসবে যে কারও।
শেষদিকে অবশ্য ভানু তান্ত্রিক আর গেনু পিশাচের স্বপ্ন ভঙ্গ করেছে চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী তথা ভাদুড়ি মশাই। রক্তিম চন্দ্রগ্রহণের দিন অমর হওয়ার আশায় এক তরুণীর সঙ্গে পিশাচের বিয়ে দিতেই যত আয়োজন ছিল তান্ত্রিকের। কিন্তু ভাদুড়ি মশাই আসায় সেই বিয়ে হতে হতে আর হলো না। শেষ মুহূর্তে কনেকে রেখেই পালিয়ে গেল গেনু আর ভানু। তবে পরের পর্বে এর প্রতিশোধও তুলবে পিশাচ আর তান্ত্রিক। তার মানে পরের পর্বে আরও বড় চমক নিয়ে হাজির হচ্ছেন অভিনেতা-পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। দেখা যাবে শেষ পর্যন্ত গেনু পিশাচকে কী করে ভাদুড়ি মশাই।