সম্পর্কটা থাকার নয় বলেই রইল না, সাবেক প্রেমিকা স্বস্তিকা প্রসঙ্গে পরমব্রত
টালিউডের আলোচিত নায়িকা স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন ছিল গতকাল ১৩ ডিসেম্বর। এবার ৪৪ বছরে পা রেখেছেন অভিনেত্রী। স্পষ্ট বক্তা হিসেবে পরিচিত বিনোদন অঙ্গনে। তাই তো বয়স কত হলো, সেটি নিয়ে নেই লুকোছাপা। নিজের চেহারার বলিরেখা দেখাতেও নেই কোনো আপত্তি। জন্মদিনে নিজেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নো মেকআপ লুকে ধরা দেন অভিনেত্রী। সঙ্গে গোলাপি রঙের মোটা ফ্রেমে বাঁধা চশমা আর মাথায় ধূসর চুল।
নিজেই জানালেন, চেহারার বলিরেখা জানান দিচ্ছে বয়স হয়েছে তাঁর। তবে হৃদয়টা এখনো তারুণ্যের আলোয় পরিপূর্ণ। স্বস্তিকার জীবনে আছে বহু ওঠাপড়া। একটা সময় টালিউডের অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে গড়ে উঠেছিল প্রেমের সম্পর্ক। তবে সেই প্রেম ভেঙেছে বহু আগে। বর্তমানে পুরোপুরি সংসারী পরমব্রত। তবু স্বস্তিকাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি। সাবেক প্রেমিকার প্রশংসাস্তুতি ঝরে পড়েছে তাঁর কলমেও। লিখেছেন দীর্ঘ লেখা।
একটি ভারতীয় গণমাধ্যমে সাবেক প্রেমিকাকে নিয়ে লিখেছেন দীর্ঘ আবেগঘন বার্তা। পরম লিখেছেন, খুব সাধারণ একটি মেয়ে। অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে স্বস্তিকা স্পষ্ট বক্তা বা প্রতিবাদী হিসেবে নিজেকে বদলে ফেলেছেন বলেও মন্তব্য অভিনেতার।
তিনি লিখেছেন, ‘স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ওর প্রজন্মের তিনজন সেরা অভিনেত্রীর মধ্যে অন্যতম। স্বস্তিকা মানেই “আগুনে মেয়ে”। সময়ের সঙ্গে নিজেকে প্রতিমুহূর্তে গড়েছে, বদলেছে। অবশ্যই নিজেকে সমসাময়িক রাখতেই এই বদল। প্রয়োজনে স্পষ্ট কথা বলতেও ভয় পায় না। ওকে চোখের সামনে এভাবে নিজেকে গড়ে নিতে দেখলাম। একদম শুরুর স্বস্তিকা খুব সাধারণ একটা মেয়ে, যার খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। সেই স্বস্তিকাকে আজকের স্বস্তিকার সঙ্গে কোনোভাবেই মেলানো যায় না। গত ১৭-১৮ বছর ধরে তিলে তিলে নিজেকে এভাবেই পাল্টেছে ও।’
পরমব্রতের ভাষ্যে, ‘এত বদল নিয়েও স্বস্তিকা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তার কারণ আছে। ও একেবারেই “কসমেটিক নায়িকা”দের মতো নয়। একজন মানুষের মতো সবার কাছে ধরা দেয়। খারাপ-ভালো, সাদা-কালো, ধূসর—সবকিছু নিয়ে একজন রক্তমাংসের মানুষের মতো। অধিকাংশ অভিনেতা-অভিনেত্রীর পক্ষে যা করা সম্ভব হয় না, সেটা ও পারে করতে। এটাই স্বস্তিকার ইউএসপি।’
দীর্ঘ লেখায় দুজনের সম্পর্ক থাকার বিষয়টিও স্পষ্ট কথায় স্বীকার করে নেন পরমব্রত। পরমব্রত লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। সেটা অনেক দিনই নেই। তা-ও প্রায় ১৪ বছর হয়ে গেল। আজ বুঝতে পারি, সম্পর্কটা থাকার নয় বলেই রইল না। কিন্তু তাই বলে ব্যক্তিমানুষ হিসেবে এবং বন্ধু হিসেবে শ্রদ্ধা কখনোই হারাইনি। যদিও খুব দেখাসাক্ষাৎ হয়, এমনও নয়। তবে সৌজন্য বজায় রয়েছে। আমাদের যোগাযোগের মধ্যেও স্পষ্টতা রয়েছে। তাই আমার বিয়ের খবরে স্বস্তিকা খুশি। আমাকে তো বটেই, আমার স্ত্রী পিয়া চক্রবর্তীকেও অন্তর থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল।’
অতীত মনে পড়লে কি মন খারাপ হয়—এমন প্রসঙ্গে পরমের ভাষ্য, ‘আজ খোলাখুলিভাবেই বলি, অনেক পরিণত হয়েছি। অনেক অভিজ্ঞতাও হয়েছে। সেই জায়গা থেকে বলতে পারি, আমি যে ধরনের মানুষের সঙ্গে থাকতে চেয়েছিলাম, তেমন মানুষকেই জীবনে পেয়েছি। তার সঙ্গে থাকছি। ফলে মন খারাপ নেই। কিন্তু যতই সম্পর্ক না থাক, তার স্মৃতি তো থেকেই যায়। সেই জায়গা থেকে নস্টালজিয়া কাজ করে।
বিশেষ করে যখন সে সময়টার কথা মনে পড়ে। অনেকের এ-ও চর্চার বিষয়, বাকিরা থিতু হচ্ছেন, স্বস্তিকা আজও থিতু হলো না। এমনও বলা হয়, আমি তো ওর বন্ধু। আমি কি কখনো ওকে অনুরোধ করেছি? আমার জবাব, এটা সম্পূর্ণ স্বস্তিকার ব্যক্তিগত পছন্দ। হয়তো সঠিক মানুষকে আজও খুঁজে পায়নি। হয়তো থিতু হতে চায় না ও। মেয়ে অন্বেষাকে নিয়েই খুশিতে জীবন কাটাচ্ছে। বিষয়টি ওর ওপরেই বোধ হয় ছেড়ে দেওয়া ভালো।’
দুজনকে একসঙ্গে পর্দায় দেখা যাবে কি না, সে প্রসঙ্গেও পরম বলেন, ‘অনেকেই আমাদের এক ফ্রেমে দেখতে চেয়েছেন, এ ক্ষেত্রে আমার জবাব হলো, আমার স্বস্তিকার সঙ্গে কাজ করতে কোনো সমস্যা নেই। সেই সঙ্গে ওকে পরিচালনা করাও খুব ইচ্ছে আছে।’ ‘নিকষছায়া’র পরিচালক পরমব্রত বলেন, ‘স্বস্তিকা আমার দেখা সেরা শক্তিশালী অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম। সে কারণে স্বস্তিকাকে পরিচালনা করার লোভ কমবেশি সব পরিচালকেরই থাকবে।’ তবে কী ধরনের চরিত্রে দেখতে চান, সেটি এখনো ভাবেননি পরিচালক পরমব্রত। যদিও স্বস্তিকাকে ক্যামেরায় ধরার আগে সেটাও ভেবে ফেলা কঠিন নয় এই পরিচালকের কাছে।