জয়ার জোড়া সাফল্যের আনন্দ
পশ্চিমবঙ্গের সিনেমাপ্রেমীরা এখন ‘দশম অবতার’ জ্বরে আক্রান্ত। দুর্গাপূজায় মুক্তির পর মাত্র সাত দিনে ছয় কোটি রুপির বেশি আয় করেছে সৃজিত মুখার্জির সিনেমাটি। ছবির অন্যতম অভিনয়শিল্পী হিসেবে দর্শকের প্রাণ উজাড় করা ভালোবাসা পাচ্ছেন জয়া আহসানও।
স্থানীয় গণমাধ্যম ছবিতে তাঁর অভিনয়ের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে। এত সাফল্যের মাঝে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন তিনি কলকাতায়। জানা গেল, কদিন ধরে ঠান্ডা ও জ্বরে আক্রান্ত তিনি।
‘দশম অবতার’ দিয়ে সৃজিত মুখার্জি ও জয়া আহসানের পাঁচ বছরের বিরতি ভাঙল। এর আগে এই পরিচালকের ‘রাজকাহিনী’ ও ‘এক যে ছিল রাজা’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন জয়া। বিরতির পরের ফেরাটা জয়া দারুণভাবে রাঙিয়েছেন। ২০১৩ সালে আবর্ত দিয়ে কলকাতায় অভিনয় শুরু করা জয়ার ঝুলিতে এক দশকে জমা পড়েছে ১৬টি সিনেমা। প্রতিটি ছবিতে বরাবরই ভিন্ন সব চরিত্রে হাজির হয়েছেন।
কলকাতায় জয়া আহসানকে যে ধরনের সিনেমায় দেখা যায়, সেগুলোর বড় অংশ ড্রামা ঘরানার। ‘দশম অবতার’ ছিল ব্যতিক্রম। এটি সৃজিতের কপ ইউনিভার্সের অংশ, অন্য অভিনেতাদের বেশির ভাগই আগের দুই কিস্তি—‘২২শে শ্রাবণ’ ও ‘ভিঞ্চিদা’তে ছিলেন। এটাতে মানিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গ উঠতেই জয়া বললেন, ‘মানিয়ে নেওয়ার কিছু নেই। এটাতেও যে ড্রামা নেই, তা নয়। থ্রিলার বেজডও। কপ ইউনিভার্স তৈরির চেষ্টা করেছে। আমি একটি চরিত্র হিসেবে এখানে আলাদা কারণে এসেছি। গল্পের জন্য কতটা জরুরি আর সেই চরিত্রের গভীরতা যদি থাকে, তাহলে সেটা আমি করে নেব, ব্যস।’
১৯ অক্টোবর মুক্তির পর ‘দশম অবতার’ বক্স অফিসের শীর্ষে আছে। এর আগে গত জুনে মুক্তি পাওয়া জয়া অভিনীত আরেকটি সিনেমা ‘অর্ধাঙ্গিনী’ও হিট হয়েছে। পরপর দুটি হিট সিনেমার অংশ হওয়াটা দারুণ আনন্দের বলে জানালেন জয়া। তবে এসব তাঁর ভাবনায় খুব বেশি কাজ করে না। তিনি বললেন, ‘আসলে কাজ করবার জায়গাটি আসল। সিনেমা দেখে লোকে ভালো বলছে। সাথে একটি বোনাস বিষয়, যদি সিনেমাটি ভালো ব্যবসা করে। প্রযোজক থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রির সবার লাভ। তাই ভালো লাগছে।’
২০১৩ সালের ১ মার্চ অরিন্দম শীলের ‘আবর্ত’ দিয়ে ‘কলকাতা অধ্যায়’ শুরু করেছিলেন জয়া আহসান। পশ্চিমবঙ্গে তাঁর অভিনয়জীবনের ১১ বছর চলছে। এই মাইলফলকের সময়ে পরপর দুই সিনেমা সুপারহিট—কেমন লাগছে? ‘১০ বছরে কলকাতায় যে কাজগুলো করেছি, সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, উল্লেখযোগ্য এবং কিছু কিছু ব্যবসাসফলও হয়েছে। সেই জায়গা থেকে যদি চিন্তা চিন্তা করি, অসাধারণ একটা ভ্রমণ ছিল। সবচেয়ে বড় বিষয় এখানকার প্রচুর দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছি। একেবারে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা,’ বললেন জয়া।
এমনিতে পূজার সময় কলকাতায় জয়ার সময়টা দারুণ কাটে। এবার বাড়তি ছিল ছবি মুক্তি। কথা প্রসঙ্গে সেটাই উঠে এল। জয়া বললেন, ‘কলকাতায় পূজা তো সব সময় দারুণ কাটে আমার। আর এবার যেহেতু সিনেমা রিলিজ ছিল, তখন ছবিটি ব্যবসা করছে কি না, চলছে কি না, লোকে ভালো বলছে কি না, এসব আলোচনায় আসে। তাই ঘোরাঘুরি বা আনন্দটা সিনেমার সঙ্গে মিলেমিশে যায়। এবার তেমনি হয়েছে।’
এদিকে কৌশিক গাঙ্গুলি পরিচালিত ‘অর্ধাঙ্গিনী’ চলতি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়ার (ইফি) প্যানোরামা বিভাগে প্রদর্শিত হবে। সিনেমার পরিচালকের সঙ্গে তাঁর জুটিও বেশ দারুণ। জয়া বললেন, ‘অর্ধাঙ্গিনী সমালোচকেরা ভীষণ পছন্দ করেছে। একই সঙ্গে সিনেমাটি জনপ্রিয়ও হয়েছে। যেটি সবচেয়ে বড় বিষয়, তাঁর সঙ্গে আমার সব কয়টি কাজ আমার দিক থেকে খুবই ইউনিক। পরিচালক হিসেবেও তাঁর সঙ্গে রসায়নও ভীষণ ভালো। আমি আরও বেশি বেশি কাজ করতে চাই অভিনয়শিল্পী কৌশিক গাঙ্গুলির সঙ্গে।’ অভিনেত্রী আরও জানালেন, ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ছাড়া আরও তিনটি সিনেমা ইফিতে থাকছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোর ঘোষণা আসবে।