'জয় বাংলা,বাংলার জয়' গানের ৪৬ বছর
‘জয় বাংলা বাংলার জয়
জয় বাংলা বাংলার জয়
হবে হবে হবে হবে নিশ্চয়
কোটিপ্রাণ একসাথে জেগেছে অন্ধরাতে
নতুন সূর্য ওঠার এই তো সময়...’
এ গানটি শোনেনি এমন কোন বাঙালি নেই। এই গানটির মধ্য দিয়ে মুক্তির সংগ্রামে উদ্দীপ্ত হয়ে হানাদার বধে এগিয়ে যায় বাংলার ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকসহ সবশ্রেণীর জনতা। এই গানটি বাংলার মুক্তিপিপাসু মানুষের চেতনায় মুক্তির আগুন ধরায়। যার কারণে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানটিকেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রণসংগীত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-নির্বিশেষে এই গানটিকে আরাধ্য করেই মুক্তির পথে এগিয়ে যায় সমগ্র বাঙালি। এই গানটি স্বাধীন বাংলা বেতারের সূচনা সংগীত; জাতীয় শ্লোগানও বটে। ১৯৭০ সালে গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার এই গানটি লেখেন। এই বছর সৃষ্টির ৪৬ বছর পার করেছে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানটি। এই উপলক্ষে গানটির রচয়িতা গাজী মাজহারুল আনোয়ারের সম্মানে ‘সুধিজনের শুভেচ্ছা ও তিনকন্যার গানের সন্ধ্যা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আমরা সূর্যমুখী’।
আজ সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন।
রুখসানা মুমতাজ, দিঠি আনোয়ার ও সাবিনা লাকী এই তিনকন্যার কন্ঠে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানটির সম্মিলিত পরিবেশনার মধ্য দিয়েই আয়োজনটি শুরু হয়। ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি উপহার দেয়া এবং উত্তরীয় পরিয়ে অমর সৃষ্টি ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’-এর গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে সংবর্ধিত করা হয় এই আয়োজনে।
লে. জেনারেল হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে সুধিজনের শুভেচ্ছায় গীতিকবি ও ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়-এর স্রষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তৃতা করেন কন্ঠশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী, শেখ সাদী খান, তিমির নন্দী, কুমার বিশ্বজিৎ, শহীদুল্লাহ ফরায়জী, কবির বকুল ও সংগঠনের সমন্বয় সম্পাদক শফিকুল ইসলাম।
এর আগে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে নিবেদন করে কবিতা আবৃত্তি ও মানপত্র পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী রফিকুল ইসলাম।
শুভেচ্ছা ও সম্মাননা পরবর্তী সংগীতায়োজনে রুখসানা মুমতাজ, দিঠি আনোয়ার ও সাবিনা লাকী।
রুখসানা মুমতাজ গেয়ে শোনান ‘আমায় যদি প্রশ্ন করো’, ‘তুমি কখন এসে’, ‘ইচ্ছে তোমায় মনের নদী’ ইত্যাদি। দিঠি আনোয়ার পরিবেশন করেন ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘গানের খাতায় স্বরলিপি’, ‘ও রসিয়া বন্ধুরে’, ‘আছেন আমার মোক্তার’। আর সাবিনা লাকী গেয়ে শোনান ‘ফুলের কাছে ভ্রমর এসে’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘বিমূর্ত এ রাত্রি আমার’, ‘তুমি না হয় রহিতে কাছে’ ও ‘সোনা সোনা দামী গহনা’। তিন শিল্পী মোট ১৫টি গান পরিবেশন করেন।