‘সেই আফসোস আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে’
ছোটবেলায় টেলিভিশন বা রেডিওতে কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ রহমতউল্লাহর গান শুনে মুগ্ধ হতেন নিশিতা বড়ুয়া। আর ভাবতেন, ‘ইশ্! এত সুন্দর করে আমি যদি গাইতে পারতাম।’ এরপর নিজেই গায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান গানের ভুবনে। প্রায় ভাবতেন, প্রিয় গায়িকার গান নিজের কণ্ঠে তুলবেন। কিন্তু সাহস হয়নি। অবশেষে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে প্রথমবার প্রিয় গায়িকার গান গেয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি।
নিশিতা বলেন, ‘শাহনাজ রহমতউল্লাহ ম্যাডামের গান গাইতে টেনশন, ভয় কাজ করত। তা ছাড়া তাঁর (শাহনাজ রহমতউল্লাহ) সব গান আমার কাছে খুবই কঠিন মনে হতো। তাঁর “যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়”সহ বেশির ভাগ পরিচিত গান অনেক কঠিন। আর ম্যাডাম তো গানের খনি। সেই খনি থেকে একটি গান নিলাম। তাঁর অনেক ভালো গান রয়েছে, যেগুলো জনপ্রিয় গানের আড়ালে রয়ে গেছে। এমন গুণী শিল্পী ছিলেন আমাদের সম্পদ। তাঁর সেই জায়গাটা কখনো আমরা রিকভার করতে পারব কি না, সেটা কনফিডেন্টলি বলা যায় না। আর আমি তো তাঁর নখের যোগ্যও না।’
‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল’, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’—এমন তুমুল জনপ্রিয় গান গেয়েছেন কিংবদন্তি শিল্পী শাহনাজ রহমতউল্লাহ। গুণী এই শিল্পীর অনেক গান জনপ্রিয়। তার মধ্যে থেকে ‘আমি আর কার চোখ নিয়ে দেখব তোমাকে’ গানটি কেন বেছে নিলেন? এই প্রসঙ্গে নিশিতা বলেন, ‘ম্যাডামের যে ইউনিক কণ্ঠ, যতগুলো লেজেন্ডারি গান করেছেন, সেসব গান গাইতে গেলে অনেক এক্সপেরিয়েন্সের প্রয়োজন। অনেক শেখার দরকার। তা না হলে গানগুলোকে এক্সিকিউট করা সম্ভব হবে না। সেই জায়গা থেকেই একটি গান সহজ মনে হওয়ায় গেয়েছি। আশা করছি, দর্শকদের কাছে গানটি পরিচিতি পাবে।’
‘আমি আর কার চোখ নিয়ে দেখব তোমাকে’ শিরোনামের এই গানটি ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত হবে। সম্প্রতি গানটির রেকর্ডিং সম্পূর্ণ হয়েছে। আফসোস করে নিশিতা বললেন, ‘আমার খুব ইচ্ছে ছিল ম্যাডামের সঙ্গে সরাসরি দেখা করার। কিন্তু দেখা হয়নি। সেই আফসোস আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে। তবে তাঁর গান আমাকে সব সময় অনুপ্রাণিত করে। তাঁর গান আগে না গাইলেও নিয়মিত শুনি। আমার মা সবচেয়ে বেশি ম্যাডামের গান শোনে।’