মৌলিক গান কম, স্বস্তি স্টেজে
এ বছর মৌলিক গান প্রকাশের হার ছিল গত কয়েক বছরের তুলনায় কম। যেগুলো বেরিয়েছে, তার খুব কম গানই দর্শক-শ্রোতার হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পেরেছে। তবে আশাবাদী ছিলেন শিল্পীরা। ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠন ও দিবসের জন্য বিষয়ভিত্তিক গান তৈরিতে। কেউ কেউ নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে গান ও সংগীতচিত্র প্রকাশ করেছেন। বছরের শুরুতে স্টেজ শো শুরু হলেও করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সেখানে ভাটা পড়ে। বছরের শেষে নভেম্বর-ডিসেম্বরে স্টেজ শো কিছুটা চাঙা হয়ে ওঠে।
এ বছরের অন্যতম আলোচিত ও শ্রোতৃপ্রিয় গানের তালিকায় ছিল নেটওয়ার্কের বাইরে ছবিতে রেহান রসুল ও অবন্তি সিঁথির গাওয়া ‘রূপকথার জগতে’ গানটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চরকির ইউটিউব চ্যানেলে গানের ভিডিওটি দেখা হয়েছে দেড় কোটি বারের বেশি। প্রকাশিত হয়েছিল বেশ কয়েকটি ব্যান্ডের গান। সেগুলোর মধ্যে আলোচনার শীর্ষে ছিল শূন্য ব্যান্ডের ‘বেহুলা’। গতকাল বিকেল পর্যন্ত ইউটিউবে গানটি দেখা হয়েছে আড়াই কোটি বারের বেশি। ভিন্ন ধাঁচের এই গান কুড়িয়েছে অকুণ্ঠ প্রশংসা। সংগীতচিত্রসহ নতুন গান মুক্তি পেয়েছে বেশ কিছু। সেসবের মধ্যে দর্শক-শ্রোতাকে স্পর্শ করেছে বাপ্পা মজুমদারের ‘হে পাথর’, ইমরান মাহমুদুলের ‘এক দেখায়’, নোবেলের ‘মেহেরবান’, সাব্বির নাসির ও পশ্চিমবঙ্গের শম্পা বিশ্বাসের ‘বিনোদিনী রাই’, সিঁথি সাহা ও পাকিস্তানের শাফকাত আমানত আলীর ‘রাতজাগা পাখি’, প্রীতমের সংগীতচিত্র ‘মরে যাক’ গানগুলো।
এ বছর মানুষকে নতুন করে দুলিয়েছে বেশ কিছু পুরোনো গান। এসবের মধ্যে ছিল সিলেটের আঞ্চলিক গান ‘নয়া দামান’, ১৮ বছর আগে এন্ড্রু কিশোর ও ডলি সায়ন্তিনীর গাওয়া ‘বুক চিন চিন’ গেয়ে আলোচনায় আসেন পাবেল। আরটিভির ‘ফোক স্টেশন’ এবং আইপিডিসি ‘আমাদের গান’ অনুষ্ঠানে বছরব্যাপী বিভিন্ন শিল্পীকে দিয়ে পুরোনো গান নতুন করে উপস্থাপন করেছেন উদ্যোক্তারা। দীর্ঘ বিরতির পর আবার গানে ফিরেছেন অর্ণব, আরেফিন রুমিসহ বেশ কজন শিল্পী।
এ বছর সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও সংগীত পরিচালকদের সংগঠন নিয়ে গঠিত হয় সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ। সংগীতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সম্মান, সম্মানী ও ভবিষ্যৎ কল্যাণের লক্ষ্যে তিন সংগঠনের এক হওয়ার বিষয়টি ছিল গানের মানুষদের অনেক দিনের চাওয়া। অন্যদিকে গান ও দলের মালিকানা নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ঘটনাও ঘটে। একটি মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনে মামলা করতে আদালতে যান জেমস। ব্যান্ডের ও গানের মালিকানা নিয়ে পুরোনো বাদানুবাদ অব্যাহত ছিল মাইলসের ভোকাল শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদের। বছর শেষে স্টেজ অনুষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন শিল্পীদের অনেকে।