মুগ্ধতায় ভাসা অদিতির গান
গোছানো, ছিমছাম অনুষ্ঠানটি দেখতে ভিড় জমিয়েছিল এই শহরের সংগীতপ্রেমী মানুষ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনটি ছিল শ্রোতা–দর্শকে ঠাসা। ‘অরুণ আলোর অঞ্জলি’ ছিল শিল্পী অদিতি মহসিনের সংগীতজীবনের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানের শিরোনাম। নাট্যজন ত্রপা মজুমদার ছিলেন সঞ্চালক।
শুরুতেই অদিতি মহসিনকে নিয়ে তৈরি একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। সেখানে তাঁকে নিয়ে বলেন যথাক্রমে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বোন বীথিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, ম. হামিদ, মিতা হক, হৈমন্তী শুক্লা, সাদিয়া আফরিন মল্লিক, আবুল খায়ের, আবদুল হাই সরকার, তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার, শ্রীকান্ত আচার্য, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও আনিসুজ্জামান।
অদিতি মহসিন মঞ্চে এসে বলেন, ‘আমি মুগ্ধ, আপ্লুত এবং ধন্য। সেই সঙ্গে একটু কুণ্ঠিত। কুণ্ঠিত এই জন্য যে ২০ বছর একটি শিল্পীর গান করা বা শিল্পচর্চা—কোনোটার জন্যই খুব বড় সময় নয়। কিন্তু এই জায়গাটিতে ভালোবাসায়, সমাদরে আপনারা আমাকে আপনাদের অন্তরে রেখেছেন, তারই প্রকাশ আজকের এই মঞ্চ। কানায় কানায় পূর্ণ মিলনায়তন। এটিও ভালো লাগার একটি কারণ।’
বিজয়ের মাসে অদিতি মহসিন ‘ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা’র দুটি পঙ্ক্তি গেয়ে শুরু করেন অনুষ্ঠান। এরপর তিনি পরিবেশন করেন ‘আনন্দধারা বহিছে ভুবনে’। প্রতিটি গান করার আগেই তিনি গানটি সম্পর্কে কিছু কথা বলে নিচ্ছিলেন। ফলে দর্শক–শ্রোতার কাছে নতুন তথ্যসহ পৌঁছে যাচ্ছিল সে গান। ‘কোন সুদূর হতে আমার মনের মাঝে বাণীর ধারা’, ‘কার মিলন চাও বিরহী তাহারে কোথা খুঁজিছ’, ‘আজি বিজন ঘরে নিশীথ রাতি আসবে যদি’ গানগুলো গেয়ে অদিতি জানালেন, অনুষ্ঠানের এই পর্যায়ে তিনি মূলত আনন্দ ও প্রার্থনার গানগুলোই করেছেন। এরপর শুরু হলো প্রেমের গান। ‘কোথা হতে বাজে প্রেম বেদনারে’—খেয়াল গাইলেন এরপর। তারপর দেশি কীর্তনের সুরে প্রেমের গান, ‘হৃদয়ের এ কূল ও কূল দুকূল ভেসে যায়’, ‘চোখের জলের লাগল জোয়ার’।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। বিশেষ অতিথি ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস। সভাপতিত্ব করেন উৎসব উদ্যাপন পর্ষদের সভাপতি রামেন্দু মজুমদার। স্বাগত বক্তব্য দেন ‘অদিতি মহসিন-এর সংগীতজীবনের ২০ বছর পূর্তি উদ্যাপন কমিটি’র আহ্বায়ক আপন আহসান। মঞ্চে উঠে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাদিয়া আফরিন মল্লিক, এনার্জিপ্যাকের চেয়ারম্যান রবিউল আলম, পূর্বাণী গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল এক্সপ্রেস ইভেন্ট লিমিটেড। বক্তৃতাপর্বের পর আরও কয়েকটি রবীন্দ্রসংগীতের পর রজনীকান্ত ও অতুল প্রসাদের গানও করেছেন তিনি।
অনুষ্ঠান শেষে এক অসীম মুগ্ধতায় ভাসতে থাকলেন দর্শক–শ্রোতা। সেটা বোঝা যাচ্ছিল প্রত্যেকের দেহভাষায়।